শেরপুরে শেষ হলো তিন দিনের যৌথ বাউল সংগীত উৎসব 

মানুষের করণ সে কি সাধারণ, জানে কেবল রসিক যারা- লালনের এ বাণীকে সামনে রেখে শেরপুরে অনুষ্ঠিত হলো বাউল সংগীত উৎসব।

বিশ্ব লালন সংঘের আয়োজনে এবং ভারতীয় দূতাবাস এর সহযোগিতায় ২০ মে থেকে ২২ মে তিন দিনের এ উৎসবে ভারতের পশ্চিমবাংলার বিভিন্ন জেলার এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার বাউল শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন। 

শেরপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়নে লালন সাঁইজির স্মরণে এ উৎসবে প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত চলে এ সংগীতের সুরের মুর্ছনা।

পশ্চিমবাংলা থেকে নিমাই খেপা, প্রমিলা বিশ্বাস ও শ্যাম সুন্দর দাস বাউল লালন সংগীত পরিবেশন করেন। এছাড়া শেরপুর সহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে লালন সংগীত শিল্পীরা এই উৎসবে সংগীত পরিবেশন করেন। 

লালন গবেষক ও বিশ্ব লালন সংঘের প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল মান্নান বলেন- সন্ত্রাসমুক্ত, জঙ্গিবাদমুক্ত ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে লালনের দর্শন ও ভাবধারার বিকল্প নেই। এছাড়া তিনি সরকারের কাছে লালন এর জন্মজয়ন্তী ও প্রয়াণ দিবসসহ নানা কার্যক্রম রাষ্ট্রীয়ভাবে চালু করা দাবি জানান।

এ সময় বাউল শিল্পীরা লালনের নানা দর্শনচিত্র তুলে ধরে সংগীত পরিবেশন করেন। 

এছাড়া জেলার বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সংগীতের ফাঁকে ফাঁকে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। এ সময় ভারত এবং বাংলাদেশ থেকে আগত বাউল শিল্পীরা জানান, লালন ছিলেন সর্ব দর্শনের এক দর্শন। তার ভাবধারা ও দর্শন সারা বিশ্বের ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যই এই আয়োজন। 

বাংলাদেশ ও ভারতের আয়োজকরা মনে করেন লালনের দর্শন এর পাশাপাশি তার গান সারা বিশ্বজুড়ে প্রচারের উদ্দেশ্যে এ আয়োজন এবং এই উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের তিন জেলায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে লালন সংগীত উৎসব। গত ১৭ থেকে ১৯ মে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকায় এবং দ্বিতীয় দফায় ২০ থেকে ২২ মে পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হলো শেরপুর জেলায়। এরপর গোপালগঞ্জে অনুষ্ঠিত হবে এই লালন সংগীত উৎসব।

সত্য বল সুপথে চল, মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি অথবা সবার উপর মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই- লালনের এসব বাণী, এ দর্শনকে সকলের বুকে ধারণ করলেই সমাজের হানাহানি বন্ধ ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়া সম্ভব বলে জানালেন উৎসবে আগত লালন ভক্তরা।