ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ৩০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

পাটবীজের ৭০ শতাংশই উৎপাদন হয় রাজশাহী অঞ্চলে

রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:১০, ৩১ মে ২০২৪  
পাটবীজের ৭০ শতাংশই উৎপাদন হয় রাজশাহী অঞ্চলে

দেশে এখন প্রতি মৌসুমে প্রায় ১ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন পাটবীজ উৎপাদন হয়। এর প্রায় ৭০ শতাংশই উৎপাদন হয় রাজশাহী অঞ্চলে। আর রাজশাহীর আট জেলার মধ্যে শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জেই উৎপাদন করা হয় প্রায় ৬০০ মেট্রিক টন।

শুক্রবার (৩১ মে) রাজশাহীতে ‘পাটবীজ উৎপাদন, সংগ্রহ ও সংরক্ষণ কলাকৌশল’ শীর্ষক এক কর্মশালায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) কর্মকর্তারা এসব তথ্য জানিয়ে চাষিদের ভালো বীজ তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের চুক্তিবদ্ধ ৮০ জন পাটবীজ উৎপাদনকারী চাষিকে নিয়ে নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে বিএডিসি’র পাটবীজ উৎপাদন জোন দিনব্যাপী এই চাষি প্রশিক্ষণের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএডিসি’র চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ। উদ্বোধনী পর্বে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষক মনিরুল ইসলাম, বেলাল হোসেন, আনারুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।

চাষিরা বলেন, চাষাবাদে খরচ অত্যন্ত বেশি। তাই কৃষকের খুব সমস্যা। চুক্তিবদ্ধ চাষিদের কাছ থেকে পাটবীজ কেনার সময় বিএডিসি প্রতি কেজির জন্য ১৯৫ টাকা দিচ্ছে। এ টাকায় আমাদের পোষাচ্ছে না। আমরা পাটবীজের দাম অন্তত ২৫০ টাকা করার দাবি জানাই। পাশাপাশি কোনো কৃষকের ভাল ফলনের কারণে বাড়তি পাটবীজ উৎপাদন হলে সেটাও কিনে নেওয়ার অনুরোধ করি।

চাষিরা আরও বলেন, এটা খাবার নয় যে আমরা খেয়ে ফেলবো। তাই কম দাম হলেও বেচতে হয়। বাড়তি বীজ বাড়িতেও পড়ে থাকে। এতে আমরা সমস্যায় পড়ি।

কর্মশালায় বিএডিসি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ বলেন, ‘দেশ টিকে আছে কৃষির ওপরে। করোনার ধাক্কা বোঝা যায়নি মজবুত কৃষির কারণে। ভাল বীজ হলে ফসল উৎপাদন এমনিতেই ১৫ শতাংশ বেড়ে যায়। তাই চাষিদের ভালো বীজ উৎপাদনে মনোযোগ দিতে হবে। ভালো বীজ হলেই ভালো ফসল পাওয়া যাবে। এক বছরের বীজ সে বছরেই ব্যবহার করতে হবে। পরের বছর পাটবীজ ছিটালে এর অঙ্কুরোদম ৫০ থেকে ৬০ শতাংশে নেমে যায়।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএডিসি’র সদস্য পরিচালক (বীজ ও উদ্যান) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘দেশে এখন ৬ হাজার মেট্রিক টন পাটবীজের চাহিদা। কিন্তু আমরা চাষিদের দিতে পারি বড়জোর এক হাজার ৩০০ মেট্রিক টন। বাকিটা আমদানি করতে হয়। এতে বৈদেশিক মুদ্রাও খরচ হয়। তাই আমরা আমদানি থেকে সরে আসতে চাচ্ছি। চাহিদার সবটুকুই দেশে উৎপাদন করতে চাই আমরা। এখন দেশে উৎপাদিত পাটবীজের ৭০ শতাংশই উৎপাদন হচ্ছে রাজশাহী অঞ্চলে। আউশ এবং বোরো ধানের মাঝে এখানে পাটবীজ হয়ে যায়। এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, এবার ‘সিড উইথআউট বর্ডার’ চুক্তির আওতায় ভারত থেকে ২০০ মেট্রিক টন উন্নতমানের পাটবীজ আনা হবে। এরমধ্যে ৮০ টন দেওয়া হবে রাজশাহী অঞ্চলে। পাশাপাশি বিজেআরআইয়ের ‘সবুজ সোনা’ নামের তোষা পাটবীজও দেওয়া হবে। এগুলো ভালো করে চাষ করে উন্নতমানের বীজ উৎপাদন করতে হবে। উন্নত বীজ দেশেই উৎপাদন করতে হবে।

বিএডিসি’র ব্যবস্থাপক (পাটবীজ) মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও ছিলেন- বিএডিসি’র ব্যবস্থাপক (বীজ) আবীর হোসেন ও যুগ্ম পরিচালক (পাটবীজ) শহীদুল্লাহ শেখ। কর্মশালায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তা শামীম ইকবাল, বিএডিসি’র রাজশাহীর যুগ্ম পরিচালক (বীজ বিপণন) ফজলে রবসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কেয়া/ফয়সাল

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়