ঢাকা     সোমবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৮ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

ঈদের ছুটিতে ফিরলেন মনিরুল, তবে লাশ হয়ে

নেত্রকোণা সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:১৫, ১০ জুন ২০২৪   আপডেট: ২২:২০, ১০ জুন ২০২৪
ঈদের ছুটিতে ফিরলেন মনিরুল, তবে লাশ হয়ে

নিহত মনিরুলের কফিন জানাজার জন্য নিয়ে যাচ্ছেন স্বজন ও প্রতিবেশীরা

আজই ঈদের ছুটি নিয়ে বাড়ি ফেরার কথা ছিল রাজধানীর বারিধারায় ফিলিস্তিনি দূতাবাসের সামনে সহকর্মীর গুলিতে নিহত পুলিশ কনস্টেবল মনিরুল ইসলামের (২৭)। তিনি ঠিকই বাড়ি ফিরেছেন। তবে নিথর দেহে। সোমবার (১০ জুন) সকাল ১০টার দিকে নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের ঈদগাঁ মাঠে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। 

মনিরুলের জানাজায় নেত্রকোণা জেলা পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। তিনি মনিরুলের মরদেহে জেলা পুলিশের পক্ষে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। 

আরো পড়ুন:

আরও পড়ুন: সহকর্মীর গুলিতে পুলিশের মৃত্যুতে তদন্ত কমিটি

এর আগে, গতকাল রোববার রাতে গ্রামের বাড়ি এসে পৌঁছায় মনিরুল ইসলামের মরদেহ। ছেলের লাশ দেখে বৃদ্ধা মা দেলোয়ারা হক কান্নায় ভেঙে পড়েন।

মনিরুল বিষ্ণুপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত শামসুল হকের ছেলে। তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন: কনস্টেবল মনিরুল হত্যা: ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ

নিহত মনিরুলের চাচা তাহের বলেন, ‘রোজার ঈদে ছুটি না পাওয়ায় বাড়িতে আসেনি মনিরুল। এবার ১৫ দিনের ছুটিতে তার বাড়িতে আসার কথা ছিল। আজ সোমবার বাড়িতে আসার কথা ছিল তার। পরিবারের সবার সঙ্গে কোরবানির ঈদে আনন্দ করার কথা ছিল তার। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেছে। বাড়িতে এসেছে তার লাশ। এই কষ্ট সহ্য করার মতো না। মনিরুলকে হত্যাকারী কাওছারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’ 

নিহত মনিরুল ইসলাম

পরিবার ও স্বজনরা জানান, ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসবে বলে ছেলের জন্য বই-খেলনাসহ নানা রকমের জিনিসপত্র কিনে রেখেছিল মনিরুল। তার মৃত্যু পরিবারটির সব আনন্দই শেষ করে দিয়েছে।

 আরও পড়ুন: তর্কাতর্কির জেরে কনস্টেবল মনিরুলকে গুলি করে ‘হত্যা’

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে নেত্রকোণার আঞ্জুমান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন মনিরুল। ময়মনসিংহে একটি বেসরকারি পলিটেকনিক্যাল ইন্সটিটিউটে ভর্তি হয়ে চতুর্থ সেমিস্টার পর্যন্ত পড়ালেখা করেন। ২০১৬ সালের শেষের দিকে পুলিশের চাকরিতে যোগ দেন তিনি। তিন বছর আগে জেলার পূর্বধলা উপজেলায় বিয়ে করেন মনিরুল। তার স্ত্রীর নাম তানিয়া আক্তার তন্বী। ত্বাকী নামে এই দম্পতির দুই বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তানও রয়েছে। মনিরুলের বড় ভাই মাহবুব আলম টিটু পুলিশের একজন সদস্য। তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে (ডিএমপি) কর্মরত।

আরও পড়ুন: কনস্টেবল মনিরুল হত্যা: কাওসারের ৭ দিনের রিমান্ড 

মনিরুলের বড় ভাই আমিনুল হক মিঠু বলেন, ‘মনিরুল আমাদের সবার ছোট। সে আমাদের সবার আদরের। আজ সোমবার (১০ জুন) ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসার কথা ছিল তার। একসঙ্গে সবার ঈদ করার কথা ছিল। সে ফিরেছে ঠিকই কিন্তু, নিথর দেহ। ভাইকে তো আর ফিরে পাবো না, ওকে গুলি করা কাওছারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাচ্ছি।’ 

আরও পড়ুন: পুলিশ কনস্টেবলের গুলিতে আরেক কনস্টেবল নিহত

মনিরুলের প্রতিবেশীরা জানান, ছয় ভাই-বোনের মধ্যে এক ভাই ছাড়া বাকিরা সবাই চাকরিজীবী। মনিরুল খুবই মিশুক ছেলে ছিল। পরিচিত ও বন্ধু-বান্ধবসহ সবার সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক ছিল।

দেলোয়ার/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়