ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

নতুন কমিটিতে উজ্জীবিত রাজশাহী জেলা ও মহানগর যুবলীগ

রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৫৭, ২২ জুন ২০২৪  
নতুন কমিটিতে উজ্জীবিত রাজশাহী জেলা ও মহানগর যুবলীগ

মনিরুজ্জামান খান মনির, তৌরিদ আল মাসুদ রনি, মাহমুদ হাসান ফয়সল সজল ও ইয়াসির আরাফাত সৈকত

দুই যুগ ধরে দুই নেতার নেতৃত্বেই ছিল রাজশাহী মহানগর যুবলীগ। জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মারা গেলেও দুই দশক একই পদে ছিলেন সভাপতি। এমন দীর্ঘ নেতৃত্বের কারণে অনেকটাই ঝিমিয়ে পড়েছিল রাজশাহী যুবলীগের দুই ইউনিট। সেই অচলাবস্থা কাটাতে সম্মেলন হয় গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর। এরপর ৯ মাসের অপেক্ষা। এই সময়ে আরও ঝিমিয়ে পড়েন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। অবশেষে এই দুরাবস্থা কেটেছে জেলা ও মহানগরের নতুন কমিটি দেওয়ার পর। নেতাকর্মীরা আবার উজ্জীবিত হয়ে উঠেছেন।

সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, এবারের সম্মেলনের আগে ২০১৬ সালের ৫ মার্চ মহানগর যুবলীগের সম্মেলন হয়। ওই সম্মেলনে দ্বিতীয়বার রমজান আলীকে সভাপতি ও মোশাররফ হোসেন বাচ্চুকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা হয়। প্রায় দুই যুগ ধরে রাজশাহী মহানগর যুবলীগ ছিল তাদের হাতেই।

আরো পড়ুন:

এদিকে, এবারের সম্মেলনের আগে রাজশাহী জেলা যুবলীগেরও সম্মেলন হয়েছিল ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ। সে সময় দ্বিতীয়বার আবু সালেহকে সভাপতি ও খালিদ ওয়াসিকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। খালিদ ওয়াসি পরে মারা গেলে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হন আলী আজম। আবু সালেহ ২০০৪ সালে প্রথম জেলা যুবলীগের সভাপতি হন। দুই দশক ধরেই তিনি এ পদে ছিলেন।

গতবছর অনুষ্ঠিত সম্মেলনের প্রায় ৯ মাস পর গত বৃহস্পতিবার যুবলীগ চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক দুটি ইউনিটেরই আংশিক কমিটি অনুমোদন দেন। জেলায় মাহমুদ হাসান ফয়সল সজলকে সভাপতি এবং ইয়াসির আরাফাত সৈকতকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটির মধ্যে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। আর মনিরুজ্জামান খান মণিরকে সভাপতি ও তৌরিদ আল মাসুদ রনিকে সাধারণ সম্পাদক করে মহানগর যুবলীগের ১১১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটির মধ্য থেকে ১৪ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

নতুন দুই আংশিক কমিটিতেই যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব প্রাধান্য দিয়েছে ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের। এর মধ্যে মহানগরে সাংগঠনিক সম্পাদক পদ পেয়েছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য অরবিন্দ দত্ত বাপ্পী ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খালেদ হাসান বিপ্লব। যুগ্ম-সম্পাদক পদে আনা হয়েছে মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শফিকুজ্জামান শফিককে। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক এস এম আশিকুর রহমানকে দেওয়া হয়েছে সহ-সম্পাদকের পদ।

জেলা যুবলীগের নতুন সাধারণ সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত সৈকত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য। এছাড়া মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জোবায়ের হাসান রুবন সহ-সভাপতি এবং জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মেরাজুল ইসলাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু পেয়েছেন সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ। 

নতুন এই কমিটি দেওয়ার পর জেলা ও মহানগর এবং প্রতিটি থানা এমনকি ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। নতুন কমিটি ঘোষণার দিনই গতকাল শুক্রবার মহানগরের নেতারা আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলী সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের সঙ্গে দেখা করে সাংগঠনিক দিকনির্দেশনা নিয়েছেন। পরদিন নতুন নেতৃত্ব নেতাকর্মীদের নিয়ে জাতীয় চার নেতার অন্যতম এএইচএম কামরুজ্জামানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এদিন জেলা যুবলীগের নতুন কমিটির নেতারা আওয়ামী লীগ নেতা এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

আগামীকাল রোববার (২৩ জুন) আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে রাজশাহী মহানগর যুবলীগের দিনব্যাপী কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। প্রস্তুতি নিয়েছেন জেলা যুবলীগের নেতারাও। যুবলীগের দুই ইউনিটের এসব কর্মসূচিতে সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌরিদ আল মাসুদ রনি বলেন, ‘দীর্ঘ ২২ বছর ধরে আমি যুবলীগ করছি। প্রতিটি ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরাও আমার চেনাজানা। আগের কমিটিতে যুগ্ম-সম্পাদক থাকাকালেই সবাইকে নিয়ে আমি যুবলীগকে শক্তিশালী করতে কাজ করেছি। এবার কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আমার ওপর আস্থা রেখে গুরুত্বপূর্ণ পদে এনেছেন। আমি এই আস্থা ধরে রাখতে চাই। রাজশাহী মহানগর যুবলীগকে আমি স্মার্ট যুবলীগ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’  

নগরীর ১৬ নম্বার ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মিঠুন শেখ বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর জেলা ও মহানগর যুবলীগের নতুন নেতৃত্ব এসেছে। এজন্য গোটা রাজশাহীতেই যুবলীগ এখন প্রাণ ফিরেছে, নতুন নেতৃত্বের কারণে যুবলীগ এখন গতি ফিরবে, সাংগঠনিক ভিত শক্তিশালী হবে, আগামী দিনের আন্দোলন সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এই সংগঠন।’

জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত  সৈকত বলেন, ‘জেলা যুবলীগ অনেক বড় একটা সংগঠন। এর রাজনৈতিক শক্তি অনেক যদি নেতাকর্মীরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকেন। দীর্ঘদিন যুবলীগের একটা অচলাবস্থা ছিল। সেটা কাটিয়ে আমরা সবাইকে নিয়ে সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।’

কেয়া/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়