ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ৩০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

নড়াইলে দিন দিন বাড়ছে চুইঝালের চাষ

নড়াইল প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৪৭, ২৫ জুন ২০২৪   আপডেট: ১১:৫২, ২৫ জুন ২০২৪
নড়াইলে দিন দিন বাড়ছে চুইঝালের চাষ

নড়াইলে দিন দিন মসলা জাতীয় চুইঝালের আবাদ বাড়ছে। চুইঝালের আবাদে পরিশ্রম কম আবার আলাদা জমিরও প্রয়োজন হয় না। বাড়ির আঙিনা কিংবা বাগানের যেকোনো গাছের সঙ্গে সহজেই চাষ করা সম্ভব। এসব সুবিধার কারণেই দিন দিন এখানে চুইঝালের আবাদ বাড়ছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, ভৌগোলিক কারণেই জেলাটির মাটি মসলা জাতীয় এই পণ্য চাষের জন্য বেশ উপযোগী।

সরেজমিনে সোমবার (২৪ জুন) গিয়ে দেখা যায়, সদর উপজেলার উজিরপুর গ্রামে সাড়ে তিন একর জমিতে চুইঝালের চাষ করছেন নাজমুল ইসলাম ও স্বর্ণা ইয়াসমিন দম্পতি। তাদের বাগানে থাকা আম, কাঁঠাল, লিচু, নারকেল, সুপারিসহ প্রতিটা গাছের সঙ্গে আছে একাধিক চুইগাছ। বাগান ঘুরে ঘুরে গাছের পরিচর্যা করছেন স্বর্ণা ইয়াসমিন। সেখানে কথা হয় স্বর্ণার সঙ্গে। তিনি বলেন, ২০২১ সালে চার থেকে পাঁচটা গাছ লাগিয়েছিলাম। সেই গাছ থেকে ডগা কেটে আবার রোপণ করি। এভাবে বাড়তে বাড়তে বাগানে এখন প্রায় তিন হাজারের মতো চুইগাছ আছে। ইতিমধ্যে বিক্রিও শুরু করেছি। খরচের তুলনায় বাজারে মসলাটির দাম অনেক বেশি। চুইঝাল চাষে তেমন কোনো খরচ নেই। আলাদা জমিরও প্রয়োজন হয় না। এটা থেকে বেশি লাভ করা সম্ভব। আমাদের বাগানে আরও গাছ আছে। ভবিষ্যতে সব গাছে চুইগাছ লাগানো হবে।

আরো পড়ুন:

বাগান মালিক নাজমুল ইসলাম বলেন, বেলে দোআঁশ মাটিতে চুইঝালের চারা রোপণ করলে সবচেয়ে ভালো হয়। একটি গাছ থেকে কাটিং পদ্ধতিতে নতুন করে চারা উৎপাদন করা যায়। ফলে বারবার চারা কেনার প্রয়োজন হয় না। গাছ রোপণের পর জৈব সার ও পর্যাপ্ত পানি দিলেই হয়। বাড়তি তেমন কোনো যত্নের প্রয়োজন নেই। দুই বছর পর থেকে গাছ বিক্রি করা যায়। গাছের ওজন হিসেবে এর দাম নির্ধারণ হয়। গাছের বয়স যত বাড়ে, দামও বাড়তে থাকে। ১০ বছরে একেকটি গাছ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা যায়। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, দেশে চুইঝাল চাষে খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরার পরই নড়াইলের অবস্থান। জেলার ৩টি উপজেলায় বর্তমানে ৭ হাজার ৪৩৭টি পরিবার চুইঝাল চাষ করছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে জেলায় মোট ১২ হেক্টর জমিতে ৩০ টন চুইঝাল উৎপাদিত হয়। আগের অর্থবছরে উৎপাদিত হয়েছিল ২৫ টন। এক বছরে আবাদ বেড়েছে পাঁচ টন। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে জেলাটিতে চুইঝালের উৎপাদন ছিল মাত্র ৯ টন। অর্থাৎ ৬ বছরে উৎপাদন বেড়েছে ২১ টন। 

নড়াইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আশেক পারভেজ বলেন, বাজারে চুইঝালের চাহিদা অনেক। এ অঞ্চলের যে কয়টা জেলায় চুইঝালের চাষ হয়, তার মধ্যে নড়াইল অন্যতম। স্বল্প খরচ ও অল্প পরিশ্রমী অধিক লাভবান হওয়ায় কৃষক এটি চাষে আগ্রহী।

শরিফুল/ইমন

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়