ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

মুরগি চুরির অপবাদে মা-মেয়েকে নির্যাতনের অভিযোগ

বাগেরহাট প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৪১, ২৭ জুলাই ২০২৪  
মুরগি চুরির অপবাদে মা-মেয়েকে নির্যাতনের অভিযোগ

বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলায় মুরগি চুরির অপবাদে মা লাইলি বেগম ও তার কিশোরী মেয়েকে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। গত বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার আমড়াগাছিয়া গ্রামে নির্যাতন করা হয় তাদের। বর্তমানে ভুক্তভোগীরা বাগেরহাট ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এদিকে, নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে ধানসাগর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য তপু বিশ্বাস জানান, তাদের নির্যাতন করা হয়নি।

আরো পড়ুন:

শনিবার (২৭ জুলাই) বিকেলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কিশোরী বলেন, ‘আমার মা অনেক দিন ধরে অসুস্থ। গত বৃহস্পতিবার সকালে মায়ের জন্য ওষুধ কিনতে বাজারে যাচ্ছিলাম। এসময় স্থানীয় আসরাফ আলী আমাকে ডেকে তার বাড়িতে নিয়ে যান। মুরগি চুরি করেছি বলে তিনি আমাকে মারধর করেন। পরে তারা ধানসাগর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য তপু বিশ্বাসকে ডেকে আনেন। তপু বিশ্বাস এসে কোনো কথা না শুনে প্রথমে লাঠি দিয়ে আমাকে মারধর করেন। পরে হাত-পা বেঁধে পায়ের তলায় পেটাতে থাকেন।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘এক পর্যায়ে মা আসলে, তাকেও বেঁধে মারধর করেন তপু বিশ্বাস। মুরগি চুরির জরিমানা হিসেবে ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে, না হলে আবারও মারধর করা হবে বলে হুমকি দেন। মারধর শেষে আমার গলায় ধারালো দা ধরে মুরগি চুরি করেছি বলে স্বীকারোক্তি দিতে বলেন। প্রাণ বাঁচাতে আমি মুরগি চুরি করেছি বলে স্বীকারোক্তি দেই। আমি মুরগি চুরি করিনি। আমাকে অন্যায়ভাবে মারধর করা হয়েছে। আমি এই অন্যায়ের বিচার চাই।’

হাসপাতালে ভর্তি কিশোরীর আহত মা লাইলি বেগম বলেন, ‘ইউপি সদস্য তপু বিশ্বাস আমার মেয়েকে মারপিট করেছে। ডেকে নিয়ে আমাকেও মারধর করেছে। আলাদা ঘরের মধ্যে বসিয়ে হাত বেঁধে মারধর করেছে। আমার বাচ্চা মেয়েকে যেভাবে পিটিয়েছে তা কোনো মা সহ্য করতে পারে না। আমাদের কাছে ৫০ হাজার টাকা চেয়েছে। আমরা এই অন্যায়ের বিচার চাই।’

অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য তপু বিশ্বাস বলেন, ‘স্থানীয়রা মুরগি চোর ধরেছে শুনে আমি থানার তদন্ত ওসিকে ফোন দিয়েছিলাম। তিনি বলেছেন, স্থানীয়দের নিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করতে। ঘটনাস্থলে যারা ছিলেন তাদের সমন্বয়ে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরে শুনি, রাতে তারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আসলে তাদের নির্যাতন করা হয়নি।’

বাগেরহাট ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের সহকারী সার্জন ডা. সানজানা বলেন, ‘নির্যাতনের শিকার মা-মেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আমরা তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়েছি। তাদের অবস্থা এখন ভালো।’ 

শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান বলেন, ‘ঘটনা শুনেছি। এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

শহিদুল/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়