ঢাকা     রোববার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

বাগেরহাটে জমি নিয়ে হামলায় শিক্ষক নিহত 

বাগেরহাট প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৫৬, ৬ আগস্ট ২০২৪  
বাগেরহাটে জমি নিয়ে হামলায় শিক্ষক নিহত 

হামলায় আহত শেফালি চ্যাটার্জি

বাগেরহাটের সদর উপজেলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে হামলায় সাবেক স্কুলশিক্ষক মৃণাল কান্তি চ্যাটার্জি (৬৫) নিহত হয়েছেন। সোমবার (৫ আগস্ট) দিবাগত রাতে সদর উপজেলার রাখালগাছী ইউনিয়নের ছোট পাইকপাড়া গ্রামে হামলা করা হয়। এ সময় তার স্ত্রী ও মেয়ে আহত হয়েছে। 

নিহত মৃণাল কান্তি চ্যাটার্জি (৬৫) ছোট পাইকপাড়া গ্রামের প্রয়াত কেশব লাল চ্যাটার্জির ছেলে। তিনি পাশের মধুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। আহত হয়ে তাঁর স্ত্রী শেফালি চ্যাটার্জি (৬০) ও মেয়ে ঝুমা রাণী চ্যাটার্জি (৩৫) বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

আরো পড়ুন:

২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শেফালি চ্যাটার্জি বলেন, ‘ঘর দরজা সব ভাঙছে, সব কিছু নিয়ে গেছে। কিচ্ছুই নেই। সন্ধ্যার দিকে একদল এসে বাড়ি ঢিলা মারছে। তখনও বুঝিনি, রাত্তিরি (রাতে) আইসে এই ভাবে মাইরা ফ্যালবো।’ 

আর্তনাদ করতে করতে তিনি বলেন, ‘এট্টু জায়গা আছে, ওই জায়গা জমিই কাল হইছে। এট্টু সম্পদের জন্নি তো, তোরা সব নিয়ে যাতি, মাইরে ফেললি কেন? সব ভাঙে ফেললি।’

পাশের সিটে থাকা তাঁর আহত মেয়ে ঝুমা রাণী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘ঘরে আমার ছোট ছেলে ও বোন ছিল। তাদের ঘরের পাটাতনের উপর ও খাটের নিচে লুকিয়ে রেখে বাঁচাইছি। আমাগো কী দোষ। আমরা তো কোনো দল করি না। শুধু শুধু আমাগো উপর কেন হামলা করল। আমার বৃদ্ধ বাবাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটায় এং কোপায়ে মেরে ফেলল।’ 

ঝুমা রাণী চ্যাটার্জি আরও বলেন, প্রতিবেশী হুমায়ুন শেখ ও নুরুল ইসলামের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিবাদ আছে। সোমবার সন্ধ্যায় নুরুল ইসলাম বাড়িতে লোকজন নিয়ে এসে হুমকি দিয়ে যায়। রাতে মুখোশ পড়ে এসে হামলা ও ভাঙচুর লুটপাট করে। ঘরের সবকিছু নিয়ে গেছে। এ হত্যা ও লুটপাটের বিচার চান তিনি।

এলাকাবাসী জানান, ঘটনার পর থেকে হুমায়ুন শেখ ও নুরুল ইসলাম শেখ পলাতক রয়েছে। তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। 

এদিকে, সরকারের পতদের পর জেলার বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়সহ নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে। এতে বেশ কিছু নেতাকর্মী আহত হয়েছে। আহতদের সংখ্যা এবং পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। 

সোমবার (৫ আগস্ট) দুপুর থেকে মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সকাল পর্যন্ত মারধরে আহত হয়ে জেলার সদর হাসপাতালে ৫০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। বিভিন্ন উপজেলায়ও আহতরা চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে। 

দেশের এ পরিস্থিতিতে হাসপাতালের চিকিৎসক, জনপ্রতিনিধি ও পুলিশের পক্ষ থেকে কেউ কথা বলতে রাজি হয়নি। দায়িত্বপ্রাপ্ত অনেকের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। 

শহিদুল/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়