ঢাকা     শুক্রবার   ০৪ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ১৯ ১৪৩১

মাকে বলেছিলেন ইমরান

‘দেশ স্বাধীন হবেই, প্রয়োজনে শহিদ হব’

পটুয়াখালী (উপকূল) প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২৩, ১৭ আগস্ট ২০২৪   আপডেট: ১৩:৫৮, ১৭ আগস্ট ২০২৪
‘দেশ স্বাধীন হবেই, প্রয়োজনে শহিদ হব’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের উত্তর বড় ডালিমা গ্রামের ইমরান হোসেন (১৮)। গত ৫ আগস্ট আন্দোলনে যাওয়ার আগে মা নাজনীন বেগমকে বলেছিলেন, ‘মা দেশ স্বাধীন হবেই, প্রয়োজনে শহিদ হব।’ এই কথা শোনার পর মা ইমরানের হাত ধরে বলেছিলেন, ‘আজ বাসা থেকে বের হইস না বাবা।’ সেদিন মায়ের কোনো কথা না শুনে বাসা থেকে বের হন ইমরান। তবে আর বাসায় ফেরা হয়নি তার।

শনিবার (১৭ আগস্ট) এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান ইমরানের মা নাজনীন বেগম। তিনি বলেন, ‘সেদিন খুব সকালে বাসা থেকে থেকে বের হয় ইমরান। যাত্রাবাড়ী এলাকায় বেলা ১১টার দিকে পুলিশ আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে। সে সময় একটি গুলি এসে লাগে ইমরানের গলায়। পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে আমার নম্বরে একটি কল আসে। ছেলে গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবরে হাসপাতালে ছুটে যাই। এর কিছুক্ষণ পর চিকিৎসক ইমরানকে মৃত ঘোষণা করেন। পরদিন গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সংসারে অভাবের কারণে দশম শ্রেণি পাস করার পর আর লেখাপড়া করতে পারেননি ইমরান। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন মেজো। ঢাকার মীর হাজীর বাগ পরিবারের সঙ্গে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। আর বায়তুল মোকাররম মার্কেটে একটি দোকানে চাকরি করতেন।

ইমরানের চাচা মো. মিরাজ হোসেন বলেন, ‘ইমরান কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত ছিল না। শুধু ৫ আগস্ট না, এর আগেও সে কয়েক দিন ছাত্রদের আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল। তখন তার রাবার শরীরে রাবার বুলেট লেগেছিল। তবুও সে থেমে যায়নি।’

ইমরানের বাবা কবির হোসেন বলেন, ‘আমার ছেলেটা দেশপ্রেমিক ছিল। দেশের জন্য পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। এই দুনিয়াতে ছেলে হত্যার বিচার পাব কিনা জানি না। তবে আল্লাহর কাছে বিচার দিলাম।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বাউফলের শিক্ষার্থী মুনতাসির তাসরিপ বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়ে যারা নিহত হয়েছেন, তাদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে দেখা করছি, কথা বলেছি। আমরা চাই, দ্রুত এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হোক।’

ইমরান/কেআই

ঘটনাপ্রবাহ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়