ঢাকা     সোমবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৭ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৪০, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪   আপডেট: ০৯:০৫, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪
আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য

ড. অনুপম সেন

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন চট্টগ্রামের বেসরকারি প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন। 

শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য বরাবরে অনুপম সেনসহ তিনজন পদত্যাগপত্র জমা দেন। পদত্যাগ পত্রে অনুপম সেন বার্ধক্যজনিত কারণে পদত্যাগের কথা উল্লেখ করেছেন। অনুপম সেনের সাথে পদত্যাগকারী অপর দুইজন হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য কাজী শামীম সুলতানা এবং ট্রেজারার তৌফিক সাঈদ। 

প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ইফতেখার মনির জানান, পদত্যাগপত্রে স্যার বার্ধক্যজনিত কারণে দায়িত্ব পালনে অনীহা প্রকাশের কথা জানিয়েছেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও কোষাধাক্ষ্যও পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। পদত্যাগপত্রে তারাও ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়েছেন উল্লেখ করেছেন।

এর আগে, শুক্রবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনুপম সেনসহ তিন শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। নগরীর জিইসি মোড় ক্যাম্পাসের সামনে ‘সাধারণ শিক্ষার্থী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়’ এর ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়। বিক্ষোভ চলাকালে সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষার্থীরা শুক্রবার আটটা পর্যন্ত উপাচার্যের পদত্যাগের সময় বেঁধে দেয়। এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। পরে রাতেই উপাচার্য অনুপম সেন গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠিয়ে তার পদত্যাগের বিষয়টি জানান।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, “যেসব ছাত্ররা আমার পদত্যাগ চেয়েছে, তাদের আমি জানাতে চাই, আমি সারা জীবন বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছি। আমি কোনোদিন বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো বিরূপ মন্তব্য করেছি, এমনটি মনে পড়ে না। ছাত্রদের যেমন সমানভাবে দেখেছি, তেমনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গেও সম্মানজনকভাবে ব্যবহার করেছি।” 

তিনি বলেন, “বাংলাদেশে কতিপয় ব্যক্তি গত কয়েক বছরে যেভাবে বিপুল সম্পদের মালিক হচ্ছিল, তা আমাকে প্রচণ্ড ব্যথিত করেছিল, আঘাত করেছিল। এ জন্যই আমি আওয়ামী লীগের গত দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে যাইনি। আমি সিআরবি রক্ষার জন্য যে আন্দোলন করেছিলাম, সেই আন্দোলন ছিল সম্পূর্ণভাবে সরকারের অভিপ্রায়বিরোধী।”

বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, “আমি আমার বেতন ও ভাতার বাইরে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির তহবিল থেকে এক পয়সা অর্থ অনৈতিকভাবে গ্রহণ করিনি। আমি এ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় কোনো দুর্নীতি, অন্যায় ও স্বজনপ্রীতির আশ্রয় গ্রহণ করিনি। জীবনে কোনো দিন জ্ঞাতসারে কারও ওপর কর্তৃত্ব করিনি, সবার উপকার করার চেষ্টা করেছি। আমি এ বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকি বা না থাকি, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মঙ্গল কামনা করব আমার মৃত্যুর দিন পর্যন্ত।”

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামের স্বনামধন্য প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর পরিবারের মালিকানায় রয়েছে। তার সন্তান সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এর ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছিলেন। তবে প্রতিষ্ঠানটির মালিকানা নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সঙ্গে মহিউদ্দিন পরিবারের আইনি বিরোধ চলমান রয়েছে।

ঢাকা/রেজাউল/টিপু 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়