ঢাকা     সোমবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৭ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

কুড়িগ্রাম

হাসপাতালে অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা সমাধানে দুই দিনের আল্টিমেটাম

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৫৩, ৪ জানুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ১৭:৫৬, ৪ জানুয়ারি ২০২৫
হাসপাতালে অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা সমাধানে দুই দিনের আল্টিমেটাম

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সামনে শনিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অনশন করেন শিক্ষার্থীরা

কুড়িগ্রাম ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে জনবল সংকট এবং নানা অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে অনশন করেছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। এসময় তারা সমস্যা সমাধানে দুই দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন।

শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত হাসপাতাল প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীরা অনশন করেন। তাদের এই কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে কুড়িগ্রাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। 

আরো পড়ুন:

অনশনে অংশ নেন শিক্ষার্থী- আবরার শাহরিয়ার, আরমান হোসেন, লোকমান হোসন লিমন, মাহমুদুল হাসান ও নাজমুল হাসান। তাদের কাছে এসময় বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্লাকার্ড ছিল।

আন্দোলনকারী আবরার শাহরিয়ার বলেন, “আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বাম-ডান কিংবা মধ্যপন্থী কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত নই। আমি বাংলাদেশের একজন নাগরিক। হাসপাতালের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় হাসপাতালের একজন চিকিৎসক আমার প্রাণনাশের হুমকি দেন। এটা যদি স্বাধীন দেশ হয় এবং স্বাধীন দেশেও যদি বাক স্বাধীনতা না থাকে, তবে স্বৈরাচারী শাসক থাকলেই বা আমাদের কি ক্ষতি হতো? আমি আজ অনশনে বসেছি। আমার কোনো নির্দিষ্ট দাবি নেই। আমি কারো পদত্যাগ কিংবা বহিষ্কার চাই না। আমি রাষ্ট্রযন্ত্রের কাছে প্রশ্ন করতে চাই, ‘হে রাষ্ট্র, তুমি কার?’।” 

তিনি আরো বলেন, “চিকিৎসা আমাদের মৌলিক চাহিদার মধ্যে একটি। আমি আমার জেলায় তা কতটুকু পাচ্ছি? আমার হাসপাতালে ডাক্তার নেই, ওষুধ নেই, ভালো খাবার নেই, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নেই। এর সমাধান আমি কবে পাব? কারো জীবন না গেলে কি রাষ্ট্রের চোখ খুলবে না?।” 

সিস্টেম পরিবর্তনের জন্য কর্তৃপক্ষকে দু’দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে আবরার শাহরিয়ার বলেন, “দুই দিনের মধ্যে সিস্টেমের সংস্কার না হলে, আমি কোনো আন্দোলনের ডাক দেব না কিংবা কারো পদত্যাগও চাইব না। আমি শুধু ভুলে যাব, আমি বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের নাগরিক। আমি আমার দেশকে ভালোবাসি। বাকি সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রের।”

কুড়িগ্রাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম-আহ্বায়ক রাজ্য জ্যোতি বলেন, “চিকিৎসা সেবা পাওয়া আমাদের নাগরিক অধিকার। কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে সিন্ডিকেট চক্রের কারণে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি বিরাজ করছে। এসব ঘটনার প্রতিবাদ করলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে হেনস্তার স্বীকার হতে হয়। আজকে সাধারণ শিক্ষার্থী আবরার শাহরিয়ার প্রথমে অনশন শুরু করলেও পরে আরও একাধিক শিক্ষার্থী তাতে অংশ নের। আমরা বৈষ্যম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে সংহতি প্রকাশ করছি।” 

সমস্যা নিরসনের আশ্বাস দিয়ে কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা.শহিদুল্লা লিংকন, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শাহিনুর রহমান সরদার শিপন এসে আন্দোলনকারীদের অনশন ভাঙ্গেন।

কুড়িগ্রাম ২৫০ শয্যবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শাহীনুর রহমান সরদার বলেন, ‍“হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য কর্মচারী সংকট রয়েছে। এরপরও যে জনবল রয়েছে তা দিয়ে রোগীদের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/বাদশাহ/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়