ঢাকা     মঙ্গলবার   ২১ জানুয়ারি ২০২৫ ||  মাঘ ৭ ১৪৩১

সংগ্রহ বাড়াতে খাদ্য বিভাগের তৎপরতা, চাল দিতে মিলারদের অনীহা

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:১০, ১১ জানুয়ারি ২০২৫  
সংগ্রহ বাড়াতে খাদ্য বিভাগের তৎপরতা, চাল দিতে মিলারদের অনীহা

আমন চাল সংগ্রহে গত বুধবার মিল মালিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করে খাদ্য বিভাগ

চলতি আমন মৌসুমে চাল সংগ্রহ অভিযানে সরকারি খাদ্যগুদামে সরবরাহ দিতে ময়মনসিংহের চালকল মালিকদের মধ্যে তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। সরকার নির্ধারিত ক্রয়মূল্যের চেয়ে বাজারে চালের দাম বেশি থাকায় চালকলের মালিকেরা সরকারি গুদামে চাল দিতে আগ্রহী হচ্ছেন না। চাল সংগ্রহ শুরুর দুই মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখনো লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকও অর্জিত হয়নি। এ কারণে চালের সংগ্রহ বাড়াতে মিল মলিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছে খাদ্য বিভাগ।

চালকল মালিকদের অভিযোগ, বাজারে ধানের মূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সরকার নির্ধারিত দামে গুদামে চাল সরবরাহ করায় তাদের কেজিপ্রতি ৪-৫ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।

ময়মনসিংহ জেলা খাদ্যবিভাগ সূত্রে জানা যায়, এবছর অভ্যন্তরীণ আমন সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা সিদ্ধ চাল ৩৬ হাজার ৪১৩ মেট্রিক টন ও আতপ চাল ২ হাজার ২৭৩ মেট্রক টন। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে জেলায় মোট ১৭৯ জন চালকলের মালিক চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট চাল সংগ্রহ হয়েছে ১১ হাজার ৭৩৬ মেট্রিক টন। 

আরো পড়ুন:

এদিকে, চলমান আমন সংগ্রহ ২০২৪-২৫ গতিশীল করতে চালকল মালিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছেন ময়মনসিংহ খাদ্য বিভাগ। বাজারে ধান-চালের দামের ঊর্ধ্বগতি ও চলমান আমন সংগ্রহ মৌসুমে সরকারের কাঙ্ক্ষিত ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা সফল করার লক্ষ্যে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

গত বুধবার (৮ জানুয়ারি) ময়মনসিংহ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. আবদুল কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন- খাদ্য অধিদপ্তরের হিসাব ও অর্থ বিভাগের পরিচালক রেজা মোহাম্মদ মহসিন। সভায় খাদ্য বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাশাপাশি মিল মালিকরা উপস্থিত ছিলেন।

ময়মনসিংহ জেলার মিল মালিক সমিতির সভাপতি মো. খলিলুর রহমান বলেন, “সরকার নির্ধারিত চালের দাম প্রতিকেজি ৪৭ টাকা। বাজারে চালের বর্তমান মূল্য ৫২-৫৫ টাকা। বাজার মূল্যের থেকে কম দামে গুদামে চাল দেওয়া আমাদের জন্য অসম্ভব।” 

একই সমিতির সেক্রেটারি মো. এরশাদুর রহমান বলেন, “সরকারি প্রণোদনাসহ মিলাররা যাতে সরকারি গুদামে ঠিক সময়ে চাল সরবরাহ করতে পারেন সেদিকে কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া উচিত।”

বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) ময়মনসিংহ বিভাগের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবু নঈম মোহাম্মদ সফিউল আলম বলেন, “সরকারি গুদামের চাল সরকার ভর্তুকি মূল্যে দরিদ্র মানুষকে দিয়ে থাকেন। সেক্ষেত্রে মিল মালিকরা যদি কিছুটা ক্ষতি স্বীকার করে হলেও সরকারি গুদামে চাল সরবরাহ করেন, তবে এ কৃতিত্বের দাবিদার তারাও।”

খাদ্য অধিদপ্তরের হিসাব ও অর্থ বিভাগের পরিচালক রেজা মোহাম্মদ মহসিন বলেন, “সরকার ধান-চালের বাজার মূল্য সম্পর্কে অবগত আছে। সরকারকে সারা দেশের বাজার স্থিতিশীল ভারসাম্য রক্ষা করেই ধান ও চালের দাম নির্ধারণ করতে হয়। আমাদের দেশ ও জনগণের কথা মাথায় রেখেই, চলতি আমন সংগ্রহ সফল করতে হবে।” 

মিলারদের বিভিন্ন দাবির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন তিনি।

ঢাকা/মিলন/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়