‘এলজিইডির’ নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে পাওয়া গেল ৩৭ লাখ টাকা
নাটোর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

মো. সাবিউল ইসলাম
নাটোরের সিংড়ায় একটি প্রাইভেটকারে তল্লাশি চালিয়ে গাইবান্ধার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী পরিচয়দানকারী মো. সাবিউল ইসলামের কাছ থেকে ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ টাকা জব্দ করেছে পুলিশ। এসময় গাড়িটি জব্দ করে ওই প্রকৌশলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয় তারা।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাত ২টার দিকে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের চলনবিল গেট এলাকায় পুলিশের নিয়মিত চেকপোস্টে তল্লাশির সময় টাকা ও গাড়ি জব্দ করা হয়। সিংড়া থানার ওসি মো. আসমাউল হক এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, রাত ১২টার দিকে মহাসড়কের চলনবিল গেট এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে বিভিন্ন যানবাহনে তল্লাশি চালাচ্ছিল পুলিশ। এসময় গাইবান্ধা থেকে রাজশাহীগামী একটি সাদা রঙের প্রাইভেটকারকে থামার সিগন্যাল দেয় পুলিশ। পরে প্রাইভেটকার তল্লাশি করে টাকা পাওয়া যায়। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. একরামুল হক, সিংড়ার ইউএনও মাজাহারুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ সুপার (সিংড়া) সার্কেল সনজয় কুমার সরকার, নাটোর সদর থানার ওসি মাহাবুর রহমান, সিংড়া থানার ওসি মো. আসমাউল হক ঘটনাস্থলে যান।
আটক মো. সাবিউল ইসলাম রাজশাহী মহানগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি বর্তমানে গাইবান্ধায় এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী হিসাবে কর্মরত। তার আদি বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলায় বলে জানা গেছে।
সিংড়া থানার ওসি মো. আসমাউল হক বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের চলনবিল গেট এলাকায় পুলিশের নিয়মিত চেকপোস্ট বসানো হয়। এসময় সন্দেহভাজন একটি প্রাইভেটকারে তল্লাশি চালিয়ে কালো ব্যাগ ভর্তি টাকা দেখতে পায় পুলিশ। গাড়ির আরোহীর পরিচয় জানতে চাইলে, তিনি নিজেকে গাইবান্ধার এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী বলে পরিচয় দেন। এতে সন্দেহ হলে প্রাইভেটকার, টাকাসহ আরোহী সাবিউল ইসলাম ও চালককে আটক রেখে বিষয়টি পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়। পরে উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে গাড়িতে থাকা ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ টাকা পান। বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় টাকা ও প্রাইভেটকারটি জব্দ করে ওই প্রকৌশলীকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য।”
তিনি আরো বলেন, “এলজিইডির প্রকৌশলী পরিচয়দানকারী সাবিউল ইসলাম পুলিশকে প্রথম দিকে জানান, তার কাছে জমি বিক্রির ৩০ লাখ টাকা আছে। পরে গুনে আরো ৬ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ টাকা বেশি পাওয়া যায়। বিষয়টি উদঘাটন করার চেষ্টা চলছে।”
নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. একরামুল হক বলেন, “জব্দকৃত টাকার উৎস সর্ম্পকে বৈধ কোনো প্রমাণ দেখাতে না পারলেও তিনি (সাবিউল ইসলাম) জমি কেনা বেচার টাকা বলে দাবি করেছেন। যদি বৈধ কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেন, তাহলে তাকে টাকাসহ ছেড়ে দেওয়া হবে। আর যদি দেখাতে না পারেন, সেক্ষেত্রে তদন্ত করে তার ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি আরো বলেন, “আদৌ তিনি গাইবান্ধা জেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে। এতো টাকা তিনি ব্যাংকের মাধ্যমে না নিয়ে রাতের আঁধারে গাড়িতে করে কেন বহন করছিলেন, সেই দিকটিও খতিয়ে দেখা হবে।”
এলজিইডির প্রকৌশলী পরিচয়দানকারী সাবিউল ইসলাম জানান, জমি বিক্রির বৈধ টাকা নিয়ে গাইবান্ধা থেকে রাজশাহী যাচ্ছিলেন তিনি।
ঢাকা/আরিফুল/মাসুদ