৩০০ টাকা ভাড়ার অনুমোদন না পেলে স্পিডবোট বন্ধের হুঁশিয়ারি
পাবনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
পাবনার কাজিরহাট ঘাটে অবস্থান করা কয়েকটি স্পিডবোট
পাবনার কাজিরহাট ও মানিকগঞ্জের আরিচা নৌপথে এবারের ঈদযাত্রায় ৩০০ টাকা করে ভাড়া আদায়ের অনুমোদনের দাবি জানিয়েছেন স্পিডবোট মালিকরা। অনুমোদন না দিলে স্পিডবোট বন্ধ রাখা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
কাজিরহাট স্পিডবোট মালিক সমিতির সভাপতি রইস উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ঈদযাত্রায় নদীর একপাশ থেকে যাত্রী আসেন, অন্যপাশ থেকে যাত্রীবিহীন খালি স্পিডবোট চালাতে হয়। ফলে তারা বড় ধরনের লোকসানে পড়বেন। এ জন্য এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রইস উদ্দিন বলেন, “ইতোমধ্যে আমরা বিআইডব্লিউটি-এর চেয়ারম্যান বরাবর একটি আবেদন পাঠিয়েছি। তাতে বলেছি, ঈদের আগে ও পরে মিলিয়ে ঈদযাত্রায় ৩০০ টাকা করে ভাড়া আদায় ছাড়া আমাদের ব্যাপক লোকসান হবে। এক্ষেত্রে প্রস্তাবিত ভাড়া আদায়ের অনুমোদন না পেলে বোট চালানো সম্ভব হবে না।”
তিনি আরো বলেন, “আগামী ৪ জুনের পর যেকোনো সময় বোট বন্ধ করে দেওয়া হবে। কারণ লোকসান গুণে তো কেউ বোট চালাবেন না।”
বোট মালিক সমিতির এ নেতা বলেন, “সাধারণ সময়ে ছোট বোটে প্রতি ট্রিপে সাড়ে ৩ হাজার এবং বড় বোটে ৪ হাজার টাকা খরচ হয়। আমাকে ১২ জন যাত্রী নিতে বলা হয়েছে ২১০ টাকা ভাড়ায়। তাহলে এখানে আমার লাভ হচ্ছে, নাকি লোকসান? এরপর আবার ঈদের আগে ও পরে একপাশ থেকে যাত্রী ছাড়া খালি বোট চালাতে হয়। লোকসান আরো বেড়ে যাচ্ছে। এতো লোকসানে বোট কিভাবে চালানো যায়? তাই আমাদের দাবি, শুধুমাত্র ঈদযাত্রায় ৩০০ টাকা ভাড়া আদায়ের অনুমোদন দেওয়া হোক।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএ-এর নগরবাড়ি-কাজিরহাট ঘাট কার্যালয়ের পোর্ট অফিসার আব্দুল ওয়াকিল বলেন, “২১০ টাকা ভাড়ার প্রজ্ঞাপন হলেও তারা মানতে নারাজ। পরে আপনাদের সংবাদ প্রকাশের পর দুইপাড়ের সেনাবাহিনীর সহায়তায় ভাড়া আদায়ে সরকারের নির্দেশনা মানতে বাধ্য করা হয়। ঈদে একমুখী যাত্রী পাবেন উল্লেখ করে এখন আবার তারা লোকসানের অজুহাতে ঈদযাত্রায় ৩০০ টাকা ভাড়া দাবি করছেন।”
বিআইডব্লিউটিএ এর চেয়ারম্যান বরাবর আবেদনের বিষয়টি শুনেছেন জানিয়ে এ বন্দর কর্মকর্তা বলেন, “অনুমোদন না পেলে ২১০ টাকাই ভাড়া আদায় করতে হবে। অনিয়ম করলে প্রয়োজনে বোটের রুট পারমিট বাতিল করা হবে। ঈদযাত্রায় কোনো ধরণের যাত্রী ভোগান্তি মানা হবে না।”
দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পাবনার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “সরকার নির্ধারিত বাইরে ভাড়া আদায়ের সুযোগ নেই। ঈদযাত্রা স্বস্তির করতে ইতোমধ্যে বোট মালিকসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি সভাও করা হয়েছে। ৩০০ টাকা ভাড়া আদায়ের অনুমোদন না দিলে বোট বন্ধ রাখার বিষয়টি আপনার থেকে জানলাম। আমরা তৎপর আছি, নিয়মের বাইরে এমন করলে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর ও সময় বাঁচানোর লক্ষ্যে ২০১৬ সালের দিকে কাজীরহাট-আরিচা নৌরুটে লঞ্চ ও ফেরির পাশাপাশি স্পিডবোট চলাচল শুরু হয়। সাধারণত ১৩ ও গ্রীষ্মকালে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দূরত্বের এই নৌপথে চারটি ফেরি ও ৯টি লঞ্চ চলাচল করে। এর সাথে কাজিরহাট ও আরিচা দুইপাড়ে বর্তমানে ১২ সিটের ১৪২টি স্পিডবোট চলে। এতে এক ঘন্টারও বেশি সময়ের জলপথ পাড়ি দেওয়া যায় ১৫ থেকে ২০ মিনিটে। এ কারণে প্রতিদিন হাজারেরও বেশি মানুষ যাতায়াত করেন স্পিডবোটে।
ঢাকা/শাহীন/মাসুদ