দাদির সঙ্গে ঈদ করা হলো না আয়শার
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম || রাইজিংবিডি.কম
বাবা সাজ্জাদের কোলে হাস্যোজ্জ্বল আয়েশা। এই ছবিটি এখন শুধুই স্মৃতি
বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছিল দুই বছরের শিশু মেহেরিমা নুর আয়শা। বাড়িতে নাতনির অপেক্ষায় ছিলেন দাদি। তবে আয়শার দাদির কাছে পৌঁছানো হলো না। হলো না নাতনির সঙ্গে দাদির ঈদ করা।
চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুর ওপর ট্রেনের ধাক্কায় নিভে যায় শিশু আয়েশার জীবন প্রদীপ। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তার মা জুবায়দা।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রামের কালুরঘাট রেল সেতুর ওপর কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেন কয়েকটি মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। এ ঘটনায় নিহত হন তিনজন। আহত হন ছয়জন। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মারা যাওয়া আয়শা চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর বাসিন্দা সাজ্জাদ এবং জুবায়দা দম্পতি মেয়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুর পূর্ব প্রান্তে বোয়ালখালী উপজেলায় কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল দুমড়েমুচড়ে গেছে। এ ঘটনায় শিশু আয়শাসহ তিনজন নিহত হন। আহত হন ছয়জন। দুর্ঘটনাকবলিত সিএনজি অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন বোয়ালখালীর বাসিন্দা সাজ্জাদ এবং জুবায়দা দম্পতি। তাদের সঙ্গে ছিল দুই বছরের আয়শা।
দুর্ঘটনার পর মেয়েকে বুকে জড়িয়ে ‘আল্লাহু আকবর , আল্লাহু আকবর’ বলে চিৎকার করছিলেন সাজ্জাদ। দ্রুত তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা আয়শাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় সাজ্জাদের আহাজারিতে হাসপাতালের পরিবেশ ভারি হয়ে উঠে।
সাজ্জাদের আত্মীয় মোহাম্মদ ওয়াহিদ বলেন, “বোয়ালখালী উপজেলার মুন্সিপাড়া এলাকায় সাজ্জাদদের বাড়ি। তিনি পরিবার নিয়ে ঈদ করতে বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথেই সব শেষ হয়ে গেল।” তিনি জানান, শিশু আয়েশার সঙ্গে ঈদ করতে চেয়েছিলেন তার দাদি।
রেলওয়ে জালানিহাট স্টেশন মাস্টার মো. নেজাম উদ্দিন বলেন, “পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি কক্সবাজার থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ছেড়ে আসে। রাত ১০টা ১০ মিনিটে এটি কালুরঘাট রেলসেতুর অদূরে পৌঁছায়। ওই সময় সেতুর ওপরে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নষ্ট হয়ে গেলে যানজট তৈরি হয়। আমরা তখনই লাল সিগন্যাল দেই। গার্ডও হাতে লাল পতাকা নিয়ে সিগন্যাল দেন। ট্রেন চালক সিগন্যাল মানেননি।”
তিনি আরো বলেন, ‘কালুরঘাট ব্রিজটি ডেড স্টেপেজ হিসেবে চিহ্নিত। এখানে ট্রেন থামিয়ে ধীরে ব্রিজে ওঠার নিয়ম। চালক তা মানেননি।”
ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ