বিদ্যালয়ে শিক্ষককে মারধর
বিএনপি-ছাত্রদলের ৮ জনের নামে মামলা, ওয়ার্ড সভাপতি গ্রেপ্তার
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
ফাইল ফটো
সাতক্ষীরার সদরের বল্লি মো. মুজিবর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ঢুকে এক সহকারী শিক্ষককে মারধর করে বাজার ঘোরানোর অভিযোগে মামলা হয়েছে।
মামলায় স্থানীয় বিএনপি ও ছাত্রদলের ৮ নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৫-৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় বল্লি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ইসলাম কবিরাজকে (৫০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ভুক্তভোগী শিক্ষক মো. শফিকুর রহমান বাদী হয়ে গত রবিবার (১৭ আগস্ট) মামলাটি করেন।
আরো পড়ুন: সাতক্ষীরায় স্কুলে ঢুকে শিক্ষককে মারধর করলেন বিএনপি-ছাত্রদলের নেতারা
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি শামিনুল হক বলেন, “আসামিদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। সোমবার রাতে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
মামলায় আসামিরা হলেন- সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বল্লি ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মো. কামরুজ্জামান (৩০), বল্লি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ইসলাম কবিরাজ (৫০), বল্লি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সেলিম আক্তার (৫০), সাধারণ সম্পাদক আবদুল গণি (৬০), সাতক্ষীরা সদর ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শাহিনুর রহমান (২৮), বল্লি ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদুজ্জামান (৩০), বল্লী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য রবিউল ইসলাম (৪৫) এবং ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য আবদুর রউফ (৪৫)।
বল্লি মো. মুজিবর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ কে এম আজারুজ্জামান বলেন, “এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে বিএনপির একটি পক্ষ দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্র করছে। তারা শিক্ষকদের নানাভাবে হয়রানি করার চেষ্টা চালাচ্ছে। মহলটি শিক্ষকদের ওপর যে আচরণ করছে, তাতে শিক্ষক সমাজের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে বিদ্যালয়ে ঢুকে গত রবিবার শিক্ষক শফিকুর রহমানকে মারধর করে বাজার ঘুরিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে আটকে রাখেন তারা।”
শিক্ষক শফিকুর রহমান মামলায় উল্লেখ করেছেন, গত রবিবার সকাল ১০টার দিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে অবস্থান করছিলেন। এ সময় আসামিরা হাতে রড, হাতুড়ি, জিআই পাইপ ও বাঁশের লাঠি নিয়ে প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষে ঢুকে তাকে (শফিকুর রহমান) মারধর করতে শুরু করেন এবং ছবি তুলতে থাকেন।
একপর্যায়ে টেনেহিঁচড়ে বাইরে নিয়ে মারধর করতে করতে পাশের বাজারে ঘোরান। পরে ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে তাকে আটকে রাখা হয়। স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে বিদ্যালয়ে নিয়ে আসেন।
অভিযোগ সম্পর্কে বল্লি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল গণি বলেন, “বল্লি মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শফিকুর রহমান একজন নৈতিকতাহীন মানুষ। তার বিরুদ্ধে আগেও অনৈতিক কাজের অভিযোগ ওঠে। একটি অভিযোগের তদন্তও চলছে। আবারো একই ধরনের ঘটনা ঘটান তিনি। পরে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতিসহ কয়েকজন বিদ্যালয়ে যান।”
তিনি আরো বলেন, “একপর্যায়ে জনরোষ সৃষ্টি হয়। জনরোষ ঠেকানোর চেষ্টা করেও কাজ হয়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় কিছু করার ছিল না।”
বল্লি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সেলিম আক্তার বলেন, “গত রবিবার সকালের দিকে ওই বিদ্যালয়ে এক শিক্ষকের সঙ্গে স্থানীয় কয়েকজনের ধাক্কাধাক্কি হয়েছে।” ঘটনার সঙ্গে নিজে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন তিনি।
ঢাকা/শাহীন/মাসুদ