ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

প্রতারণা মামলায় অতিরিক্ত ডিআইজি হামিদুল কারাগারে

বগুড়া প্রতি‌নি‌ধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৫৯, ১৭ নভেম্বর ২০২৫  
প্রতারণা মামলায় অতিরিক্ত ডিআইজি হামিদুল কারাগারে

সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি হামিদুল আলম মিলন

বগুড়ায় প্রতারণা মামলায় সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি হামিদুল আলম মিলনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. মেহেদী হাসান তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আরো পড়ুন:

এর আগে, গত বছর ২১ আগস্ট হামিদুল ও তার স্ত্রী শাহজাদী আলমের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা দায়ের করেন জাহেদুর রহমান তোফা নামের এক ভুক্তভোগী। একই অভিযোগে আদালতে পৃথক আরো দুটি প্রতারণা মামলা দায়ের করেন নূর আলম এবং ফোরকান আলী নামের ভুক্তভোগী। তবে সোমবার তোফার মামলায় আদালতে হাজির হলে বিচারক পুলিশের সাবেক এই প্রভাবশালী কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি হামিদুল হক মিলনের বাড়ি বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায়। বর্তমানে শহরের মালতিনগরের মেধা টাওয়ারে বসবাস করেন। স্ত্রীর নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ার দায়ে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে চলতি বছরের ১০ সেপ্টেম্বর জারি হওয়া প্রজ্ঞাপনে তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ১ মাসের জন্য অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ছুটি নিয়ে তিনি তিনি বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনে স্ত্রীর নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, হামিদুল ইসলামের স্ত্রী শাহজাদী আলমের পরিচালনায় মেসার্স মেধা এন্টারপ্রাইজ নামে ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানের আওতায় মেধা শাহ ক্যাসেল নামে একটি বহুতল ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

২০১৮ সালে বগুড়া শহরের পুলিশ সুপার কার্যালয়ের পেছনে নির্মাণাধীন বহুতল ভবনে ফ্লাট বিক্রয়ের কথা বলে ছয়জনের কাছ থেকে নগদ ১ লাখ করে টাকা নেয় অতিরিক্ত ডিআইজি হামিদুলের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেধা টাওয়ার। চুক্তি অনুযায়ী সেখানে দশতালা ভবনও গড়ে তোলে পুলিশ কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর শাহজাদী আলম লিপির এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। তবে ওই ছয় ব্যক্তিকে তাদের পাওনা অনুযায়ী ভবনের ফ্লাট বুঝিয়ে দিতে তালবাহানা শুরু করেন অতিরিক্ত ডিআইজি হামিদুল ও তার স্ত্রী।

এই ভবনে নুর আলম, তার স্বজনদের সঙ্গে ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিলে চুক্তিবদ্ধ হন। চুক্তিপত্রের দীর্ঘদিন পার হলেও তাদের তা বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন না তারা।

চুক্তিনামা অনুযায়ী, পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে ৫ লাখ টাকা এবং ফ্লাট নির্মাণ চলাকলে ৯০ শতাংশ টাকা ১ নম্বর আসামি শাহজাদী আলমকে দেওয়া কথা ছিল। আর বসবাসের উপযোগী করে অবশিষ্ট ১০ শতাংশ টাকা দেওয়ার কথা। এছাড়া ৪২ মাস সময়ের মধ্যে আসামিরা ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দিতে না পারলে অন্যত্র বাড়ি ভাড়ার জন্য প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা হিসাবে দিতে বাধ্য থাকবেন বলেও চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়।

এক পর্যায়ে চুক্তিনামার কোনো শর্ত পালন না করায় আসামিদের কাছে ফ্ল্যাট বিক্রির টাকা ফেরত দাবি করেন ভুক্তভোগীরা। কিন্তু তারা ফ্ল্যাট বা টাকা বুঝিয়ে দিতে তালবাহানা শুরু করেন। পরে উপায় না পেয়ে একটি লিগ্যাল নোটিশও দেন মামলার বাদী ও তার স্বজনেরা। পরে চলতি বছরে নুর আলম বাদী হয়ে আরেকটি মামলা দায়ের করেন।

বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. লিলুস জানান, বাদল সিদ্দিকী, মিন্টুসহ তিনজনের কাছে ফ্ল্যাটের চুক্তিপত্র করার পরে তা অন্য আরেকজনের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। এরপর তারা ৪০৬ এবং ৪২০ ধারায় অতিরিক্ত ডিআইজি হামিদুল আলম মিলন ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। আজ সেই মামলায় উভয় পক্ষের তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বগুড়া কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক শহীদুল ইসলাম বলেন, “সোমবার দুপুরে আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন হামিদুল আলম। কিন্তু আদলত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। এছাড়া, তার স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য প্রার্থী শাহাজাদী আলম লিপির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেন বিচারক।”

ঢাকা/এনাম/মেহেদী

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়