ঢাকা     শুক্রবার   ১১ জুলাই ২০২৫ ||  আষাঢ় ২৭ ১৪৩২

পিরোজপুরে কোটি কোটি নিয়ে সমিতির পরিচালক উধাও

পিরোজপুর সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৪৩, ৩ মে ২০২৫  
পিরোজপুরে কোটি কোটি নিয়ে সমিতির পরিচালক উধাও

টাকা ফেরত পেতে গ্রাহকের বিক্ষোভ করেন

পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলায় ‘আলোক শিখা’ নামে এক সমবায় সমিতির পরিচালক দেড় শতাধিক সদস্যের কোটি কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন।

টাকার ফেরত  পাওয়ার দাবিতে শনিবার (৩ মে) সকালে উপজেলার শর্ষিনা মাগুরা গ্রামে সমিতির মাঠকর্মী শারমিন আক্তারের বাসার সামনে বিক্ষোভ করেন গ্রহকেরা।

অভিযুক্ত পরিচালক মো. দেলোয়ার হোসেন বানারীপাড়া উপজেলার ব্রাহ্মণকাঠী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি থেকে সনদ না নিয়ে সমবায় সমিতির ২৩টি শাখা খুলে পরিচালনা করছিলেন। ভুক্তভোগী সদস্যদের অভিযোগ, পরিচালক দেলোয়ার হোসেন নেছারাবাদের তিনটি শাখা থেকে ২০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

আরো পড়ুন:

রেহানা পারভীন নামের এক গৃহবধূ অভিযোগ করেন, তাঁর স্বামী প্রবাসী। সেখান থেকে পাঠানো টাকা তিনি আলোক শিখা সমিতিতে সঞ্চয় করেন। মাঠকর্মী শারমিনের কথায় প্ররোচিত হয়ে মোট ১০ লাখ টাকা জমা করেছিলেন। এখন সমিতির পরিচালক দেলোয়ার হোসেন আত্মগোপনে আছেন। তাকে না পেয়ে মাঠকর্মী শারমিনের বাসায় গেলে তিনি দুর্ব্যবহার করছেন।

বিলকিস নামের এক বিধবা নারী জানান, তিনি মানুষের বাসায় কাজ করে চার লাখ টাকা জমিয়ে শারমিনের কথায় সমিতিতে রেখেছিলেন। এখন আমানত ফেরত পাচ্ছেন না।

হ্যাপি বেগম নামের এক নারী জানান, তিনি কাপড় সেলাইয়ের কাজ করে সমিতিতে ছয় লাখ টাকা জমা করেছিলেন। এক বছর ধরে টাকা ফেরত চাইতে গেলে সমিতির পরিচালকসহ মাঠকর্মী নানা বাহানা দিয়ে তাকে ঘুরাচ্ছিলেন।

মাগুরা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মো. আলতাফ হোসেন জানান, সমিতির পরিচালক দেলোয়ার কয়েকজন মাঠকর্মীর মাধ্যমে তিনটি শাখা থেকে ২০ কোটি টাকার আমানত হাতিয়ে নিয়ে আত্মগোপনে গেছেন। এ বিষয়ে তারা কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

মাঠকর্মী শারমিন বলেন, ‘‘আমি কারো টাকা খাইনি। টাকা সংগ্রহ করে সমিতিতে দিয়ে দিতাম। পরিচালক দেলোয়ার হোসেন ঢাকায় আছেন। আমি কী করব? তা ছাড়া আমি ছয় থেকে আট মাস হলো চাকরি ছেড়ে দিয়েছি।’’

নেছারাবাদ উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. হাসান রকি জানান, আলোক শিখা বানারীপাড়া উপজেলা থেকে পরিচালিত হয়। এটি মূলত সমাজকল্যাণ অধিদপ্তর ও জয়েন্ট স্টক থেকে সনদপ্রাপ্ত। মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি থেকে সমিতিটির সনদ নেই। তাই এর কোনো ঋণ ও সঞ্চয় কার্যক্রম পরিচালনার বিধান নেই। কীভাবে এসব কার্যক্রম চালিয়েছে, সেটা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দেখার বিষয়।

অভিযুক্ত পরিচালক মো. দেলোয়ার হোসেনের মোবাইল ফোনে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘‘একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দেখা হবে।’’

ঢাকা/তাওহিদুল/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়