ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

শিক্ষক ও ক্লাসরুম সঙ্কটে সেশনজট, দাবি পাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের

শাবলু শাহাবউদ্দিন, পাবিপ্রবি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০০, ২৯ নভেম্বর ২০২১   আপডেট: ১৮:৩০, ২৯ নভেম্বর ২০২১
শিক্ষক ও ক্লাসরুম সঙ্কটে সেশনজট, দাবি পাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকার্যক্রম বহুদিন ধরে জটের মুখে পড়ে আছে। শিক্ষাবর্ষ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের অষ্টম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের স্নাতক শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে। কিন্তু ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে এসেও তাদের আট সেমিস্টারের (চার বছর) স্নাতক কোর্স শেষ হয়নি। এতে ক্ষুব্ধ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। 

বিশ্ববিদ্যালয়ে ২১টি বিভাগ রয়েছে। সব মিলিয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৪ হাজার। শিক্ষার্থীরা বলছেন, এখানে সেই ৬ বছর ধরে ভর্তি হয়েছি, কিন্তু বের হওয়ার কোনো নাম নেই। এর অন্যতম কারণ সেমিস্টার জট। অষ্টম ব্যাচ থেকে শুরু করে ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা তাদের জীবন থেকে হারিয়ে ফেলেছেন দেড় থেকে ২ বছর। আমাদের এই মূল্যবান সময় নষ্ট হওয়ার জন্য শিক্ষক সঙ্কট ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়ী।  

অষ্টম ব্যাচের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ফাসিহ্ উদ্দীন ফয়সাল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজটের অন্যতম কারণ হলো শিক্ষক ও ক্লাসরুম সঙ্কট। সেইসঙ্গে করোনা মহামারি। সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিনের পরিবর্তে একদিন এবং শীতকালীন ছুটিসহ বিভিন্ন ছুটি কমিয়ে আনার মাধ্যমে সেশনজট সমস্যার সমাধান করা যাবে বলে মনে করি।’

শিক্ষার্থী কামরুজ্জামন কবির বলেন, ‘সেশনজট ছাত্রদের জীবনে অভিশাপ। ছাত্রদের ২, ৩ বছরের কোনো দাম নেই। কিন্তু চাকরির বাজারে ৩০ বছর পার হলেই আর সুযোগ নেই। চার বছরের কোর্স শেষ করতে যদি ৫-৭ বছর লাগে, তাহলে আগেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা উচিত যে এটা ৬ বছরের কোর্স। সিস্টেম পরিবর্তন করা দরকার।’

রসায়ন বিভাগের ১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী হাসান রনি বলেন, ‘সেশনজটের কারণে বের হতে পারছে না শিক্ষার্থীরা, বাড়ছে হতাশা, হতাশা থেকে ভুল সিদ্ধান্ত, তারপর দুর্ঘটনা। তাই এ ইস্যুটিকে গুরুত্বের সাথে নেওয়া উচিৎ।’

সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী শহিদুল ইসলাম শিহাব বলেন, ‘ছাত্র রাজনীতি এবং শিক্ষকদের আন্তরিকতার অভাবে সেশনজট হয়েছে। আমার জীবন থেকে হারিয়ে গেছে ১ বছর ৬ মাস।’ 

এদিকে, শিক্ষকরা দাবি করছেন সেশনজটের অন্যতম কারণ হলো করোনা। সরজমিনে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষের সংকট রয়েছে, আছে শিক্ষক সংকটও। অনেক শিক্ষক মনে করছেন, নতুন বিল্ডিংগুলো তৈরি হলে শ্রেণিকক্ষে সমস্যা থাকবে না এবং শিক্ষাকার্যক্রমে যে জট পড়েছে, ধীরে ধীরে তা কাটিয়ে ওঠা যাবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহকারী অধ্যাপক ড. হাসিবুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন কমিটি এই বিষয়ে ভালো জানেন। ডিন কমিটির সাথে যোগাযোগ করলে ভালো হয়।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন কমিটির সভাপতি ড. মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শীতকালীন ছুটি কমিয়ে আনছি। প্রত্যেক বিভাগের চেয়ারম্যানকে এই বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশা করি খুব দ্রুত শিক্ষার্থীরা এখান থেকে উদ্ধার পাবে।’

গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. ফাজলুল হক বলেন, ‘আমাদের বিভাগের বিভিন্ন সেশনের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা চলছে। বর্তমান অবস্থা স্থিতিশীল থাকলে খুব দ্রুতই সেমিস্টার জট থেকে শিক্ষার্থীরা মুক্তি পাবে।’

বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমরা আগামী ছয় মাসের মধ্যে এই সমস্যা সমাধান করে ফেলতে পারবো।’

ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা প্রাণপণে চেষ্টা করছি, আশা করি খুব শিগগিরই শিক্ষার্থীরা সেশনজট মুক্ত ক্যাম্পাস পাবে।’

/মাহি/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়