চবিতে টিএসসি নির্মাণের উদ্যোগ
চবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

অবশেষে শিক্ষক-ছাত্র কেন্দ্র (টিএসসি) স্থাপনের জন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নিকট জমি চেয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কর্তৃপক্ষ। গত ১ জুলাই জেলা প্রশাসক বরাবর পাঠানো বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কেএম নূর আহমদ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে টিএসসি নির্মাণের জন্য অন্তত ১৫ কাঠা জমি চাওয়া হয়।
ওই চিঠিতে বলা হয়, দেশের একটি অন্যতম উচ্চ বিদ্যাপীঠ এই চবিতে প্রায় ২৯ হাজার শিক্ষার্থী, হাজারখানেক শিক্ষক ও দুই হাজারের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে। কিন্তু চবিতে কোনো টিএসসি সুবিধা নেই। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন সৃষ্টিতে টিএসসি স্থাপন অপরিহার্য। বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের ৮০ শতাংশ সদস্য চট্টগ্রাম শহরে অবস্থান করেন। এজন্য চট্টগ্রাম শহরের কেন্দ্রে একটি টিএসসি স্থাপন করা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি।
চিঠিতে আরও বলা হয়, চট্টগ্রাম শহরে বসবাসরত শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য একসময় ভাড়া করা বাড়িতে একটি মেডিকেল সেন্টার চালু ছিল। কিন্তু জায়গার অভাবে শহরে বসবাসরত শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া প্রতিদিন চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে ক্যাম্পাসে আনা-নেওয়ার জন্য বিভিন্ন রুটে প্রায় অর্ধ শতাধিক গাড়ি কমপক্ষে চারবার আসা-যাওয়া করতে হয়। চট্টগ্রাম শহরে একটি গাড়ি পার্কিংয়ের স্থান থাকলে এ খাতে বিপুল পরিমাণ জ্বালানী খরচ সাশ্রয় করা সম্ভব।
এজন্য চট্টগ্রাম শহরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য টিএসসির আওতায় শিক্ষক ক্লাব, অতিথি কক্ষ, কনফারেন্স কক্ষ, লাইব্রেরি, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, মেডিকেল সেন্টার ও গাড়ি পার্কিং করার জন্য অন্তত ১৫ কাঠা জমি বরাদ্দ চাওয়া হয় চিঠিতে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কেএম নূর আহমদ বলেন, টিএসসির জন্য জমি চেয়ে আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি দিয়েছিলাম। চিঠিটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর জেলা প্রশাসকের কাছে নিয়ে গিয়েছিল। এটি নিয়ে উপাচার্য ও প্রক্টর জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। আমি যতটুকু জানি জেলা প্রশাসক এ বিষয়টি নিয়ে ইতিবাচক আছেন।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. অহিদুল আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম শহরের মূল জায়গায় ১৫ কাঠা জমির জন্য আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন জানিয়েছি। জেলা প্রশাসক আমার সামনেই চিঠির কপি তার এডিসি ও এসিল্যান্ডের কাছে হস্তান্তর করেছেন। আমরা ১৫ কাঠা জমি চাইলেও তিনি আরও বড় জায়গা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা ষোলশহর স্টেশনের আশেপাশে জায়গা পাওয়া যায় কিনা সেই চেষ্টা করছি।
এদিকে স্বায়ত্তশাসিত সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএসএসি থাকলেও চবিতে না থাকায় শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ দীর্ঘদিনের। অবশেষে টিএসএসি হওয়ার এমন সংবাদে শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বসিত।
উল্লেখ্য, চলতি বছর ১৯ মার্চ চবির উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের। তিনি এসেই প্রথমে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি সমাবর্তনের ঘোষণা দিয়েছেন। শাটল ট্রেনে বগি বৃদ্ধিসহ একটিতে পাওয়ার-কার সংযুক্ত করেছেন। আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাঙ্কিং এর জন্য আবেদন করে ফলও পেয়েছেন।
/মিজান/মেহেদী/