ঢাকা     সোমবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৭ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

ব্যবসায় স্বাবলম্বী কুবি শিক্ষার্থী রাফি ও বন্যা

এমদাদুল হক, কুবি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৫৪, ৫ মে ২০২৫  
ব্যবসায় স্বাবলম্বী কুবি শিক্ষার্থী রাফি ও বন্যা

ইসরাত জাহান বন্যা ও আল আরাফাত আমীন রাফি

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ভর্তি হওয়ার পর থেকেই মনের ভেতর একটা স্বপ্ন দানা বাঁধতে শুরু করে। তাদের সে স্বপ্নে মানুষের তির্যক দৃষ্টি পড়লেও দমে যাননি তারা।

নিজেদের টিউশনির টাকা জমিয়ে শুরু করেন ব্যবসা। পড়ালেখার পাশাপাশি এ ব্যবসা করে তারা এখন স্বাবলম্বী। চাকরির পেছনে না ছুটে নিজের উদ্যোগে গড়ে তুলছেন ভবিষ্যতের পথ।

আরো পড়ুন:

ইসরাত জাহান বন্যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম আবর্তনের শিক্ষার্থী। আর আল আরাফাত আমীন রাফি লোকপ্রশাসন বিভাগের ১৫তম আবর্তনের শিক্ষার্থী। 

উদ্যোগের ব্যাপারে শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান বন্যা বলেন, “আমার উদ্যোগটা একটু ভিন্ন ধরনের। আমি খাবার তৈরি শেখাই। শখের বশে এ পেশায় এসেছি। বাংলাদেশ এবং ভারত থেকে বিভিন্ন কোর্স করে প্রশিক্ষণ নিয়েছি। প্রথম দিকে আমি চকলেট বানিয়ে বিভিন্ন জায়গায় শেয়ার করেছি। সেখান থেকে আমার ভালো রিভিউ আসতে থাকে।”

তিনি বলেন, “একটা সময়ে এসে অনেকেই এ বিষয়ে ক্লাস করার আগ্রহ প্রকাশ করে। তখন আমি কোর্স চালু করি এবং একটা পেজ খুলি। সেখান থেকেই আমার যাত্রা শুরু। আমার কাজ শুধু চকলেটের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। মিস্টি, কেক, বিরিয়ানি সবকিছুই কোর্সের ভেতর অন্তর্ভুক্ত। আমি সবসময় চাই খাবারের গুণগত মান যেন ঠিক থাকে। ছুটি চলাকালে যখন কোর্স চালু করি, তখন ভালো আয় হয়। আমার পেজের নাম ‘ট্রিটস ফর ইউ’ দিয়েছি।”

তিনি আরো বলেন, “ইতোমধ্যে আমি আরো একটি দুঃসাহসিক উদ্যোগ নিতে যাচ্ছি। বিভিন্ন ধরনের জামা কাপড় নিয়ে কাজ করছি। আমার এ পেজের নাম হচ্ছে ‘বর্ণালিকা’। আমার পড়ালেখার অধ্যায় মোটামুটি শেষ। তাই বাকি সময়টুকু এখানেই দিতে চাই।”

প্রতিবন্ধকতার বিষয়ে বন্যা বলেন, “আমার এসব কাজে বাবার সাপোর্ট পেয়েছি। প্রথমদিকে ক্লাস নিতে গিয়ে নেটওয়ার্ক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। এ সেক্টরে কাজ করতে গিয়ে মানুষের তির্যক দৃষ্টিরও সম্মুখীন হয়েছি। তবুও থেমে থাকিনি।”

অপরদিকে, নিজের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষে শিক্ষার্থী আল আরাফাত আমীন রাফি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে দিয়েছেন লাইব্রেরি।

তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে বইয়ের কোনো দোকান না থাকায় আমাদের মতো শিক্ষার্থীরা কুমিল্লা শহর থেকে বই কিনে আনতেন। এতে তাদের অনেক কষ্ট হয়ে যেত। সেই চিন্তা থেকেই লাইব্রেরি দেওয়ার পরিকল্পনা মাথায় আসে। বর্তমানে ক্যাম্পাসের তিনজন শিক্ষার্থী লাইব্রেরিতে কর্মরত আছেন।”

তিনি আরো বলেন, “আমার ব্যবসা থেকে এখন ভালোই আয় হচ্ছে। ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলে বই বিক্রি একটু কম হয়। এখানে একটা কর্মসংস্থান তৈরির ইচ্ছা ছিল। সে লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছি।”

রাফি বলেন, “নিজেকে আটকে না রেখে নিজের প্রতিভাকে কাজে লাগাচ্ছি। আম্মুর সাপোর্ট আর নিজের টিউশনির টাকা দিয়েই আমার এ লাইব্রেরির যাত্রা শুরু করেছিলাম। প্রথমে খুব স্বল্প পরিসরে ‍শুরু করলেও আস্তে আস্তে এটা অনেক বড় হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ।”

ঢাকা/মেহেদী

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়