ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

জাবিতে হল কমিটি নিয়ে ছাত্রদলের দুই পক্ষের হাতাহাতি

জাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:২১, ১৭ আগস্ট ২০২৫   আপডেট: ২০:০১, ১৭ আগস্ট ২০২৫
জাবিতে হল কমিটি নিয়ে ছাত্রদলের দুই পক্ষের হাতাহাতি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) হল কমিটি গঠন নিয়ে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছিরসহ শাখা ছাত্রদলের শীর্ষ পাঁচ নেতার ক্যাম্পাসে আসাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের হাতাহাতি হয়েছে।

রবিবার (১৭ আগস্ট) বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

আরো পড়ুন:

প্রত্যক্ষদর্শী ও শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সূত্রে জানা যায়, গত ৮ আগস্ট হল কমিটি দেওয়ার পর থেকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারেনি জাবি শাখা ছাত্রদলের শীর্ষ পাঁচ নেতা। গত শুক্রবার বেগম খালেদা জিয়ার জন্মবার্ষিকী পালনের অনুষ্ঠানেও আসতে পারেনি তারা। বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের সঙ্গে শীর্ষ পাঁচ নেতৃত্বের দ্বন্দ্বের অবসানে আজ ক্যাম্পাসে আসেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়াসহ কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতা।

বেলা ১২টার দিকে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহিরউদ্দিন বাবর, সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদসহ সুপার ফাইবের নেতৃবৃন্দসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার শিক্ষক লাউঞ্জে অবস্থান করছিলেন। বাকি নেতাকর্মীরা ক্যাফেটেরিয়ায় অবস্থান নেন।

এর কিছুক্ষণ পর শাখা ছাত্রদলের অর্ধশতাধিক বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের আরেকটি দল মোটরসাইকেল শোডাউন দিয়ে ক্যাফেটেরিয়ার নিচে গিয়ে বহিরাগত কয়েকজনকে ধাওয়া দেন। এরপর তারা ক্যাফেটেরিয়ার শিক্ষক লাউঞ্জে অবস্থানরত কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দেখা করতে গেলে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের অনুসারীরা গেটে আটকে দিলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এবং হাতাহাতি ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে।

এর আগে, গত ৮ আগস্ট শাখা ছাত্রদলের বর্ধিত কমিটি ও একইদিনে ১৭টি হলে কমিটি ঘোষণা করা হয়। এ কমিটিতে ছাত্রলীগ, ছাত্রশিবির, ছিনতাইকারীসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্তরা পদ পেয়েছেন এমন অভিযোগ তুলে গত কয়েকদিন শোডাউন দিচ্ছিলেন বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা।

অন্যদিকে, কমিটি দেওয়ার পর থেকে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক, সদস্য সচিবসহ শীর্ষ পাঁচ নেতাকে ক্যাম্পাসে দেখা যায়নি। 

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক জোবায়ের আহমেদ বলেন, “জাকসুকে কেন্দ্র করে হল কমিটি দেওয়া হয়। কিন্তু বাবরের নেতৃত্বে সুপার ফাইভ কমিটিতে ছাত্রলীগসহ স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে ত্যাগীদের বাদ দিয়ে হল কমিটি দেয়। এতে করে দীর্ঘদিন ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ত্যাগী কর্মীরা মূল্যায়িত হয়নি বলে আমরা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করি। এরই অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির আসেন। কিন্তু তার সাথে সুপার ফাইভ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।” 

আরেক যুগ্ম-আহ্বায়ক আহমদুল্লাহ বলেন, “জাবিতে দীর্ঘদিন ধরে দলের জন্য ত্যাগী কর্মীদের বর্ধিত কমিটি ও হল কমিটিতে জায়গা না দিয়ে তারা নিজেদের প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে ছাত্রলীগসহ অন্যান্যদের জায়গা দিয়েছে। তারই প্রতিবাদে ত্যাগীরা কেন্দ্রীয় সেক্রেটারির কাছে তাদের মূল্যায়ন চান। ফলে দুই গ্রুপের  উত্তেজনা বাড়তে থাকে। আমরা কেন্দ্রীয় সেক্রেটারির সঙ্গে আলোচনা করে এই বিষয়টির সুরাহা করতে চাই। আমরা চাই, ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হোক।”

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহিরউদ্দিন বাবর বলেন, “যারা বিশৃঙ্খলা করেছে তাদের মধ্যে আমাদের সংগঠনের বহিস্কৃত কিছু নেতাকর্মী রয়েছে। এর পাশাপাশি একটি স্বার্থন্বেষী গোষ্ঠী এটার সঙ্গে জড়িত।”

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির বলেন, “একটি বড় দলে চাইলেই চার-পাঁচজনকে সভাপতি বা সেক্রেটারি করা যায় না। কমিটিতে অনেকরই আশা আকাঙ্ক্ষা থাকতে পারে। সেই হিসেবে কারও মনে কষ্ট থাকতে পারে। আমরা আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করব।”

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, “ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে একটু ঝামেলা সৃষ্টি হয়েছিল। প্রক্টরিয়াল টিম সেটা নিবৃত্ত করতে সক্ষম হয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সবাইকে শান্ত পরিবেশ বজায় রাখতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।”

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়