রাকসু নির্বাচন: মনোনয়ন সংগ্রহের সময় ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বৃদ্ধি, প্রতিবাদের ঝড়
রাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন বিতরণের তৃতীয় ও শেষ দিন ছিল মঙ্গলবার। তবে শেষ মুহূর্তে মনোনয়ন বিতরণের সময় ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে নির্বাচন কমিশন।
এর আগে, রবিবার (২৪ আগস্ট) থেকে শুরু হয় রাকসুর মনোনয়ন বিতরণ কার্যক্রম। প্রথম দিনে বিভিন্ন পদে মনোনয়ন নেন পাঁচজন প্রার্থী। দ্বিতীয় দিন সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিভিন্ন পদে মনোনয়ন নেন ১০ জন প্রার্থী।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সকাল ১০টা থেকে শুরু হয় মনোনয়ন বিতরণ। তফসিল অনুযায়ি বিকেল ৫টায় শেষ হওয়ার কথা ছিল তিন দিনব্যাপী এ মনোনয়ন বিতরণ কার্যক্রম।
এদিকে, মনোনয়ন বিতরণের সময় বৃদ্ধির প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থী, সাবেক সমন্বয়ক ও রাবি শাখা ছাত্রশিবির। বিকেল ৫টায় রাকসুর কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন তারা।
এ সময় তারা ‘সিন্ডিকেট না রাকসু? রাকসু রাকসু’, ‘রাকসু নিয়ে তালবাহানা, চলবে না চলবে না’, ‘এক দফা এক দাবি ১৫ তারিখে রাকসু দিবি’, ‘আপোষ না সংগ্রাম? সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘রাকসু আমার অধিকার, না দিলে তুই স্বৈরাচার’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
এ বিষয়ে এজিএস পদপ্রার্থী ও সাবেক সমন্বয়ক আকিল বিন তালেব বলেন, “কোনো অযৌক্তিক কারণ দেখিয়ে রাকসু নির্বাচন পেছানো যায় না। তিনদিন আগে মনোনয়ন তোলার তারিখ পিছানো হয়েছিল, আজো আবার পেছানো হলো। তাহলে প্রশ্ন হলো—কোন কারণে, কাদের পুনর্বাসনের জন্য অথবা কোন দলকে সুবিধা দেওয়ার উদ্দেশ্যে এই তারিখ পিছানো হচ্ছে? এর সঠিক জবাব না দেওয়া পর্যন্ত আমরা এখান থেকে সরব না।”
আরেক পদপ্রার্থী অনিক আহমেদ অভি বলেন, “শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ ছাড়াই নির্বাচনের তারিখ পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনারের জবাব চাই। এখন মনে হচ্ছে, আমরা আর তাদের ওপর আস্থা রাখতে পারছি না। নিরাপদ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেওয়ার ক্ষেত্রে তারা ব্যর্থ হয়েছেন। তফসিল অনুযায়ী আমরা ১৫ সেপ্টেম্বরেই নির্বাচন চাই।”
রাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মুস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, “আজ মনোনয়নের শেষ দিন ছিল। কিন্তু এই সিডিউল বারবার করে পরিবর্তন করা হচ্ছে। আগে যে তফসিল দেওয়া হয়েছিল সেটা দুইবার পরিবর্তন করা হয়েছে। এভাবে তারিখ পরিবর্তন হতে থাকলে ১৫ তারিখ নির্বাচন হবে কিনা আমরা অনিশ্চিত।”
তিনি বলেন, “যদি তারিখ বাড়ানো দরকার হত, তাহলে সেটা আগে থেকে জানানো উচিত ছিল। কিন্তু শেষ সময়ে এসে হঠাৎ করে কোন একটা দল বা গোষ্ঠীকে সুবিধা দেওয়ার জন্য তারা অযৌক্তিকভাবে ৫-৬ দিন সময় বাড়ালো। এটা একেবারেই অযৌক্তিক। আমরা একটা সিদ্ধান্ত জানতে চাই।”
সময় বৃদ্ধির বিষয়ে রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. এফ নজরুল ইসলাম বলেন, “নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বিতরণের সময়সীমা আমরা বাড়িয়ে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এছাড়া, আবাসিক হলের পরিবর্তে ভোটকেন্দ্র হিসেবে একাডেমিক ভবনগুলোকে নির্বাচিত হয়েছে।”
তিনি বলেন, “ডোপ টেস্ট করা নিয়ে আমরা কিছু সমস্যায় পড়েছি। এটা একটা সময় সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আজ আমাদের সারাদিন মিটিং হয়েছে, মিটিংটা আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। আমরা আগামীকাল মিটিং করে একটা সিদ্ধান্ত জানাবো।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী