ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

‘গ্যাস অনুসন্ধানই জ্বালানি নিরাপত্তার অন্যতম উপায়’

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:১৫, ১৯ জুন ২০২১  
‘গ্যাস অনুসন্ধানই জ্বালানি নিরাপত্তার অন্যতম উপায়’

প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধানই ভবিষ্যতের জ্বালানি নিরাপত্তার অন্যতম উপায় বলে দাবি করছেন দেশের বিশিষ্ট জনেরা। 

শনিবার (১৯ জুন) ঢাকা চেম্বার আয়োজিত ‘বাংলাদেশের শিল্পখাতের জ্বালানি উৎসের ভবিষ্যৎ: এলপিজি এবং এলএনজি’ শীর্ষক ওয়েবিনার তারা এই মন্তব্য করেন।

অনুষ্ঠানে সরকারের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আনিছুর রহমান এবং বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন-এর সদস্য (গ্যাস) মো. মকবুল-ই-ইলাহী চৌধুরী যথাক্রমে প্রধান ও বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগদান করেন।

ওয়েবিনারের স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ‘গত ৫ দশকে শিল্পখাতের গতিধারাকে চলমান রাখতে প্রাকৃতিক গ্যাস জ্বালানির অন্যতম যোগদান হিসেবে ভূমিকা পালন করেছে। তবে আমাদের অর্থনৈতিক কার্যক্রমের সম্প্রসারণের ফলে জ্বালানির চাহিদা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধির কারণে প্রায়ই শিল্পখাতে জ্বালানি সংকট দেখা যাচ্ছে।’

তিনি উল্লেখ করেন, ‘সরকার ঘোষিত ২০২৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে শিল্পখাতের চাহিদামত জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই। সেই সঙ্গে এ খাতে পরিকল্পিত উপায়ে পরিবেশবান্ধব ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। শিল্পখাতে চাহিদামাফিক জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিতকরণে প্রাকৃতিক গ্যাসের অনুসন্ধান বৃদ্ধির পাশাপাশি বিকল্প জ্বালানি হিসেবে এলপিজি ও এলএনজি আমদানি এবং উৎপাদনের ওপর আরও বেশি হারে গুরুত্বারোপ করতে হবে।’

দ্রুততার সঙ্গে এলপিজি ও এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ডিসিসিআই সভাপতি। পাশাপাশি এ খাতের সার্বিক উন্নয়নে একটি সমন্বিত টেকসই কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের জোরারোপ করেন।

প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘সরকার গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে এবং জকিগঞ্জে সর্বশেষ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে, আশা করা যাচ্ছে, সেখান থেকে দীর্ঘসময় ধরে গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব হবে। এ জন্য প্রায় ৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি পাইপলাইন স্থাপন করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘করোনা মহামারিকালীন ১০০ মিলিয়ন কিউবিক ফিট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত করা হয়েছে। অনশোরে সক্ষমতা থাকায় বাপেক্সের মাধ্যমে অনুসন্ধান কার্যক্রম চালানো অব্যাহত রয়েছে। এলএনজি ব্যবসায় ঝুঁকি কম থাকায় বর্তমানে সবাই এর দিকে ঝুঁকছে। এলপিজি’র বাজার প্রায় ১২ লক্ষ টন এবং ২৯টি কোম্পানি স্থানীয় বাজারে এলপিজি অপারেটর হিসেবে কাজ করছে। তবে ৫৬টি কোম্পানিকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।’

আনিছুর রহমান আরও বলেন, ‘ব্যবসা বান্ধব হওয়ায় প্রয়োজনে নীতিমালা ও আইন সংষ্কার করা হবে। এলপিজি অপারেটদের অনুমোদনের জন্য ১৮ ধরনের লাইসেন্স দরকার এবং বাৎসরিক নবায়ন ফি দিতে হয় ১ কোটি টাকারও বেশি। যা কমানো প্রয়োজন। গ্যাস সংযোগ নিতে তিতাসে সংষ্কার কাজ চালানো হচ্ছে। বর্তমানে শিল্পখাতে গ্যাস সংযোগ নিতে দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে হয় না।’

বিশেষ অতিথি’র বক্তব্যে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন-এর সদস্য (গ্যাস) মো. মকবুল-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, `বর্তমানে আমাদের গ্যাসের রিজার্ভ ৬ টিসিএফ। সারাদেশে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য যে ধরনের কার্যক্রম গ্রহণ করা প্রয়োজন ছিল, সেগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা যায়নি।’ 

তিনি জানান, বর্তমানে ৩৩০০ মিলিয়ন কিউবিক ফিট গ্যাসের মধ্যে নিজস্ব উৎপাদিত গ্যাসের ৭৪ শতাংশ আসে নিজস্ব খাত থেকে। বাকি ২৬ শতাংশ আসে এলএনজি থেকে। এ অবস্থা চলতে থাকলে ২০৩০ সালে দেশীয় উৎপাদন হবে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ এবং আমদানিখাত থেকে আসবে ৮৩ শতাংশ। সেক্ষেত্রে শিল্পখাতসহ সকল খাতে ব্যয় বাড়বে। এমন বাস্তবতায় অনুসন্ধান কার্যক্রম বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।

অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচনায় বিজিএমইএ-এর সভাপতি ফারুক হাসান, বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফেকচার্স অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান আমের আলী হোসেন, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটি-এর ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির ডিন অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম এবং ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটির সহকারী অধ্যাপক মো. শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী অংশগ্রহণ করেন।

ঢাকা/শিশির/সনি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়