ঢাকা     সোমবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৭ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

উন্নয়ন অভিযাত্রার দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:২২, ১ জুন ২০২৩   আপডেট: ১৬:২৩, ১ জুন ২০২৩
উন্নয়ন অভিযাত্রার দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে

আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে মধ্যে সুখী-সমৃদ্ধ উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যয় নিয়ে দেশের জনগণকে আরও একটি জাতীয় বাজেট উপহার দিলো আওয়ামী লীগ সরকার। ‘উন্নয়ন অভিযাত্রার দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে’ শ্লোগানকে সামনে রেখে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা।

বৃহস্পতিবার (০১ জুন) শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে এ বাজেট পেশ করেন তিনি। এ সময় সংসদে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দীন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, জাতীয় সংসদ সদস্য, বাংলাদেশ অবস্থিত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।  

আরো পড়ুন:

তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের এটা পঞ্চম বাজেট। একই সঙ্গে অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামালেরও এটি পঞ্চম বাজেট।

স্মার্ট বাংলাদেশ চারটি মূল স্তম্ভকে সামনে রেখে এবারের বাজেট প্রস্তুত করা হয়েছে। স্তম্ভগুলো হচ্ছে স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট গভর্নমেন্ট, স্মার্ট সোসাইটি এবং স্মার্ট ইকোনমি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটকে অর্থমন্ত্রী তার বক্তৃতায় স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে প্রথম বাজেট বলে উল্লেখ করেন। এবারের বাজেটে সঙ্গত কারণেই স্বাস্থ্য, কৃষি, খাদ্য উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনাকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অর্থবছরের পুরো সময়জুড়েই থাকবে সরকারের নানা ধরনের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি। বাড়ানো হয়েছে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা।

আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের সম্ভাব্য আকার বা মোট ব্যয়ের পরিমাণ ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা।

অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় বলেন, স্মার্ট উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণ, কোভিড-১৯ ও ইউক্রেইন যুদ্ধ উদ্ভূত অর্থনৈতিক সংকট হতে উত্তরণ, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত প্রণোদনা প্যাকেজসমূহের সফল বাস্তবায়ন, মেগা প্রকল্পসমূহের কাজ সময়মত সম্পন্ন করা; সামাজিক নিরাপত্তার আওতা সম্প্রসারণ, ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি, কৃষিখাতে ভর্তুকি সর্বোপরি উচ্চ প্রবৃদ্ধির গতি অব্যাহত রাখাকে বিবেচনায় নিয়ে মূলত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তুত করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত রাজস্ব আয় সম্পর্কে তিনি বলেন, আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট রাজস্ব আয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড উৎস থেকে ৪ লাখ ৩০ হাজার এবং অন্যান্য উৎস হতে ৭০ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

অন্যদিকে, প্রস্তাবিত ব্যয়ের পরিমাণ তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাজেটের আকার প্রাক্কলন করা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা জিডিপি’র ১৫.২ শতাংশ। পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে মোট ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।

বাজেট ঘাটতি ও অর্থায়ন: প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা জিডিপি’র ৫.২ শতাংশ। এখানে উল্লেখ্য, এই হার গত বাজেটে ছিল ৫.৫ শতাংশ। মোট ঘাটতির মধ্যে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা অভ্যন্তরীণ উৎস হতে এবং ১ লাখ ৬ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা বৈদেশিক উৎস হতে নির্বাহ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

এর আগে, তিনি ২০২২-২৩ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট সার্বিক রাজস্ব আহরণ ও ব্যয়ের অগ্রগতি তুলে ধরেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে কিছুটা সংশোধন ও সমন্বয় করতে হয়েছে। প্রস্তাবিত সংশোধিত রাজস্ব আয়, চলতি অর্থবছরের মার্চ-২০২২ পর্যন্ত রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮.৯২ শতাংশ। রাজস্ব আদায়ের এ প্রবৃদ্ধি বিবেচনায় ২০২২-২৩ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা মূল বাজেটের সমান অর্থাৎ ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত সংশোধিত ব্যয়: চলতি অর্থবছরের বাজেটে সর্বমোট সরকারি ব্যয়ের প্রাক্কলন করা হয়েছিল ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। কিন্তু এপ্রিল পর্যন্ত ব্যয়ের সার্বিক অগ্রগতি বিবেচনায় সংশোধিত বাজেটে সরকারি ব্যয় ১৭ হাজার ৫৫৬ কোটি টাকা হ্রাস করে ৬ লাখ ৬০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে।

সংশোধিত বাজেট ঘাটতি ও অর্থায়ন: চলতি অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি প্রাক্কলন করা হয়েছিল ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে ঘাটতি প্রস্তাব করা হচ্ছে ২ লাখ ২৭ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা, যা জিডিপি’র ৫.১ শতাংশ। উল্লেখ্য, মূল বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছিল জিডিপির ৫.৫ শতাংশ। মোট ঘাটতির ১ লাখ ৪০ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এবং ৮৭ হাজার ৮২ কোটি টাকা বৈদেশিক উৎস থেকে নির্বাহ করার প্রস্তাব
করা হয়েছে।

ঢাকা/এনএইচ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়