জলবায়ু খাতে বিশেষ বরাদ্দ ১০০ কোটি টাকা
জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় ১০০ কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে প্রস্তাবিত ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটে।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাস উপযোগী পৃথিবী গড়ে তোলা এবং টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমরা সর্বদা সচেষ্ট রয়েছি। বাংলাদেশের সংবিধানে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবিলায় ২০০৯ সালে বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড অ্যাকশন প্ল্যান প্রণয়ন করা হয়, যা বর্তমানে হালনাগাদ করা হচ্ছে।
তিনি জানান, সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে গঠিত জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড (সিসিটিএফ) পরিচালনার জন্য ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত ৩ হাজার ৯৬৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যার অধীনে এ পর্যন্ত ৯০৮টি সরকারি ও ৬১টি বেসরকারিসহ মোট ৯৬৯টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এসবের মধ্যে ৭২১টি প্রকল্প সফলভাবে সমাপ্ত হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় অভিযোজন ও প্রশমন কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়টি সরকারের সকল উন্নয়ন পরিকল্পনায় গুরুত্ব সহকারে স্থান পাচ্ছে। তাছাড়া, সকল সরকারি প্রকল্প প্রস্তাব মূল্যায়নের সময় আবশ্যিকভাবে জলবায়ু সংশ্লেষ বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে আমরা জলবায়ু সংশ্লিষ্ট ২৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বাজেটে জলবায়ু সংক্রান্ত বরাদ্দের পরিমাণ এবং প্রকৃত ব্যয় নিরুপণ করছি। এছাড়া, সম্প্রতি জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় গৃহীত প্রকল্পের সুষ্ঠু সমন্বয়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ক্লাইমেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট প্ল্যাটফরম গঠন করা হয়।
তিনি বলেন, পরিকল্পিতভাবে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করছি। এ সংক্রান্ত কার্যক্রমকে আরও বেগবান করার লক্ষ্যে এবারের বাজেটে ১০০ কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দের প্রস্তাব করছি।
বায়ু ও পানিদূষণ নিয়ন্ত্রণে দেশের সকল শিল্প প্রতিষ্ঠানে দূষণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। দেশব্যাপী ২ হাজার ৯০৭টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২ হাজার ৪৭৪টি তরল বর্জ্য নির্গমনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানে ইটিপি স্থাপন করা হয়েছে এবং ৬৫৬টি তরল বর্জ্য নির্গমণকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানে জিরো ডিসচার্জ প্ল্যান বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এছাড়া, ২৭টি নদীর ৯৯টি স্থানে নিয়মিত পানির গুণগত মান মনিটরিং করা হচ্ছে। শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি জনগণের মধ্যে পরিবেশ বিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টির ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে।
আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, সামাজিক বনায়নসহ দেশব্যাপী বনায়ন কার্যক্রম ও বৃক্ষরোপণের ফলে মোট বৃক্ষ আচ্ছাদিত ভূমির পরিমাণ দেশের মোট আয়তনের ২২ দশমিক ৩৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে ৮টি জাতীয় উদ্যান, ২০টি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, ৪টি ইকোপার্ক, ১টি উদ্ভিদ উদ্যান, ২টি মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া (সোয়াচ অব নো-গ্রাউন্ড ও সেন্টমার্টিন) এবং ২টি বিশেষ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকাসহ মোট ৩৭টি সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। বর্তমানে দেশে সংরক্ষিত এলাকা ৫৩টি।
হাসান/রফিক