শাটলের ক্যাম্পাস চবি
মীর মাহবুব || রাইজিংবিডি.কম
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
ক্যাম্পাস প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯ নভেম্বর: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন আমার বড় ভাই। তার কাছে শাটল ট্রেনের গল্প শুনতাম প্রায়ই। তখন থেকে শাটলে চড়ার শখ চাপে মাথায়। শাটল ট্রেন নিয়ে এভাবেই বলছিলেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী রিয়াজুল ইসলাম।
শুধু রিয়াজুল নয়, পাহাড় ঘেরা সবুজ ক্যাম্পাসে এসে শাটল নিয়ে অনেক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীই জানালেন তাদের অনুভূতির কথা।
বাংলাদেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে আলাদা করেছে এই শাটল ট্রেন। এখানকার শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সবচেয়ে প্রিয় ও প্রধান বাহন শাটল ট্রেন। এতে জড়িয়ে আছে শিক্ষার্থীদের আনন্দ-বেদনা, আর হাসি-কান্নার হাজারো স্মৃতি।
১৯৮১ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের নিত্যসঙ্গী হিসেবে আছে চিরচেনা ভেপু ফুঁকে ছুটে চলা শাটল ট্রেন। প্রতিদিন সকালে শাটল ট্রেনের হুইসেলের শব্দে জেগে ওঠে পাহাড়-সমতলের চবি ক্যাম্পাস। শুরু হয় শিক্ষার্থীদের দিন।
শাটল শুধু চলাচলের মাধ্যমই নয়, শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের ভিতও বটে। এর প্রত্যেক যাত্রীই যেন একেকজন পেশাদার শিল্পী! গানে গল্পে তারা পুরো ট্রেনের যাত্রীদের মাতিয়ে রাখে প্রতিদিন।
সময়ের জনপ্রিয় ও কালোত্তীর্ণ গানের চর্চার সঙ্গে বিভিন্ন গানের প্যারোডিতেও দক্ষ শাটলের শিল্পীরা। হাল আমলের জনপ্রিয় শিল্পী এস আই টুটুল, পার্থ বড়ুয়াসহ অনেক শিল্পীই শিল্পী হয়ে ওঠেন এ শাটলে।
প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা আফজাল হোসাইন বলেন, "শাটলে চড়া এতো আনন্দের, কখনো ভাবিনি। বগিতে শিল্পীদের গানে গানে ক্যাম্পাস থেকে শহর এতো দূরত্ব কখন যে শেষ হলো টেরই পাইনি।"
প্রতি বগি গানে গানে মাতিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আনন্দ দেওয়ার জন্য শাটল ট্রেনে রয়েছে বগি ভিত্তিক বিভিন্ন দল। বগির ভেতরের দুই প্রান্তে দল বেধে গান করে প্রত্যেক দলের সদস্যরা। গানের তালে তালে সবাই হঠাৎ পৌঁছে যায় যে যার গন্তব্যে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া অনেক প্রবীণকে এখনও আবেগে ভাসায় চবির এই শাটল ট্রেন।
রাইজিংবিডি/ মীর মাহবুব / এফএস
রাইজিংবিডি.কম