ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘স্বামীকে বাঁচাতে অসহায়ের মতো তাদের কাছে কেঁদেছি’

বিনোদন ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:০৯, ৪ ডিসেম্বর ২০২০   আপডেট: ১২:৩০, ৪ ডিসেম্বর ২০২০
‘স্বামীকে বাঁচাতে অসহায়ের মতো তাদের কাছে কেঁদেছি’

আকবর

ডায়াবেটিস, কিডনিসহ নানা রোগে ভুগছেন গায়ক আকবর। গত ঈদুল আজহার পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। কোমর থেকে শরীরের নিচ পর্যন্ত অবশ হয়ে গিয়েছিল। শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে নেওয়া হয় এই শিল্পীকে।

চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন আকবর। কিন্তু অর্থনৈতিক সংকটের কারণে চিকিৎসা অসম্পূর্ণ রেখে ১৫ দিনের ঔষধ নিয়ে দেশে ফিরে আসেন তিনি। কিন্তু টাকা জোগাড় করতে গিয়ে নানা চড়াই-উৎরাই পেরুতে হচ্ছে তার পরিবারকে। এদিকে আকবর আবারো অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এ তথ্য জানিয়েছেন আকবরের সহধর্মিনী কানিজ ফাতিমা।  

দেশে ফেরার ১৫ দিন পরই পুনরায় ভারতে যাওয়ার কথা ছিল আকবরের। কিন্তু যারা টাকা দিয়ে সহযোগিতা করতে চেয়েছিলেন তারা তা করেননি। এতে বিপাকে পড়ে যায় আকবরের পরিবার। কানিজ ফাতিমা বলেন—আমি আসলে নিরুপায় হয়ে চিকিৎসকদের বলে ১৫ দিনের ঔষধ নিয়ে দেশে চলে এসেছিলাম। কারণ ভারতে যাওয়ার আগে অনেকেই পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ভারতে যাওয়ার সময় কারো সাহায্য দরকার ছিল না, তাই তখন নিইনি। ভেবেছিলাম দেশে এসে তাদের কাছে সাহায্য চাইব। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো অথৈর বাবার (আকবর) এই অসুস্থতা নিয়েও কিছু মানুষ আমাদের সাথে খেলা করেছে। আমার স্বামীকে বাঁচাতে অসহায়ের মতো তাদের কাছে কেঁদেছি। গত এক মাস ধরে তাদের আশায় বসে থেকে অথৈর বাবাকে আবারো অসুস্থ বানিয়ে ফেলেছি। গত এক সপ্তাহ যাবত অথৈর বাবার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। আমি তো একজন নারী। এত টাকা আমি কীভাবে যোগাড় করব তা ভেবে পাচ্ছিলাম না। কারণ গত দুই বছর ধরে অথৈর বাবার চিকিৎসা করাতে করাতে আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি। জমানো কোনো টাকা নেই।

অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে কষ্ট দিন অতিবাহিত করছেন কানিজ ফাতিমা। বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন—খুব কষ্টে প্রতিটা দিন যাচ্ছে। তারপরও আমাকে আমার স্বামীর চিকিৎসা করাতে হবে। কারণ আমার বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন অথৈর বাবা। অনেক কষ্টে কিছু টাকা ম‍্যানেজ করেছি, যা দিয়ে কিডনির চিকিৎসা করাতে পারব। বাকি দুইটা ডাক্তার হয়তো দেখাতে পারব না। তারপরও বুকে বড় আশা নিয়ে আগামী ৭ ডিসেম্বর অথৈর বাবাকে নিয়ে ভারতে যাব। সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টায় কারো সাহায্য ছাড়াই।

হঠাৎ কেন এত কথা জানালেন তার ব্যাখ্যা দিয়ে কানিজ ফাতিমা বলেন—এতকিছু বললাম মনের কষ্টে। কারণ এই সমাজে এমন কিছু মানুষ আছে যারা মুখে খুব বড় বড় কথা বলে প্রয়োজনে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না। তাই সবার কাছে আমার অনুরোধ অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে না পারেন কাউকে মিথ‍্যা স্বপ্ন দেখাবেন না। সবাইকে আবার বলছি অথৈর বাবার জন‍্য বেশি বেশি দোয়া করবেন। ওকে যেন সুস্থ করে বাড়ি নিয়ে আসতে পারি।

ভারতে যাওয়ার আগে অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছিলেন আকবর। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থ সহায়তায় ভারতে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন তিনি। সে অর্থও শেষ হয়ে গেছে বলে জানান কানিজ ফাতিমা।

গত বছর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রধানমন্ত্রী আকবরকে চিকিৎসার জন্য ২০ লাখ টাকা (সঞ্চয়ী পত্র) অনুদান দেন।

খুলনার পাইকগাছায় জন্ম আকবরের। তবে বেড়ে উঠেছেন যশোরে। সেখানে রিকশা চালাতেন। ছোটবেলায় গানের হাতেখড়ি না হলেও ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদির মাধ্যমে উঠে আসা আকবরের ভরাট কণ্ঠ শ্রোতাদের মন কাড়ে।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়