ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

কাজের লোককে ‘ঝি’ বলা যাবে না কেন, প্রশ্ন অঞ্জন দত্তর

বিনোদন ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১২, ২০ জানুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ১৩:২৩, ২০ জানুয়ারি ২০২৫
কাজের লোককে ‘ঝি’ বলা যাবে না কেন, প্রশ্ন অঞ্জন দত্তর

অঞ্জন দত্ত

ভারতীয় বাংলা গানের শ্রোতাপ্রিয় সংগীতশিল্পী অঞ্জন দত্ত। অভিনয়, গান, পরিচালনা— সবক্ষেত্রে চর্চিত তিনি। তাকে নিয়ে ভক্তদের উৎসাহ অন্তহীন। মাঝে মাঝে চলচ্চিত্রের পাশাপাশি ব্যক্তিগত, সমাজ-রাষ্ট্র, রাজনীতি নিয়ে নিজের ভাবনার কথা বলে থাকেন।

কিছু দিন আগে কলকাতার একটি পডকাস্টে কথা বলেন অঞ্জন দত্ত। এ আলাপচারিতায় উঠে আসে আজকালের কলকাতার প্রসঙ্গ। এ শহরের মানুষ ‘রাজনৈতিকভাবে সঠিক’ থাকার চেষ্টা করছেন। কিন্তু এই ব্যাপারটির সঙ্গে ঠিকমতো মানিয়ে নিতে পারছেন না তিনি।

আরো পড়ুন:

এ বিষয়ে অঞ্জন দত্ত বলেন, “পলিটিক্যালি কারেক্টনেসের একটা সমাজ তৈরি হয়েছে। তাতে নিজেকে অ্যাডাপ্ট করতে পারছি না। এই শহরটা, এই কলকাতা কখনই পলিটিক্যালি কারেক্ট ছিল না। সত্তর দশকে এখানে কত কী হয়েছে। এখানে একটা আন্দোলন হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছিল রবীন্দ্রনাথ শেষ কথা নয়।”

এরপর সঞ্চালক গায়ককে বলেন, আগে কালো সাহেবের মেয়ে বলা গেলেও সেটা এখন বলা যাবে না। তাহলেই রেসিস্ট তকমা দেগে দেওয়া হবে, এই বিষয়ে আপনার মত কী? প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে অঞ্জন দত্ত বলেন, “এগুলোকে সামনে আনার ইচ্ছা আমার আছে। আমি আজ আমার স্ত্রীকে আমার সমান মনে করি। কেউ তার প্রেমিকাকে নিজের সমান মনে করেন। কিন্তু তাই বলে কি সে সচেতন হবে? নারী স্বাধীনতা তো কবে হয়ে গেছে। তারপরও এই ইকুয়ালিটি এখনো চাপিয়ে দেওয়া হবে কেন?”

খানিকটা ব্যাখ্যা করে অঞ্জন দত্ত বলেন, “মোটাকে ‘মোটা’ বললে বডি শেমিং। মোটাকে ‘মোটা’ বলব না, কালোকে ‘কালো’ বলব না, বোকাকে ‘বোকা’ বলব না তো কী বলব? ঠাট্টা-মজা যদি না করতে পারি একে অন্যকে নিয়ে তাহলে তো গম্ভীর হয়ে থাকতে হবে। তাসের দেশে থাকতে হবে। আনন্দ করে থাকব আমি, এত সচেতন হয়ে থাকব কেন? অফিসে সচেতন থাকব। সবসময় কেন?”

চিত্রনাট্য লেখার ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে অঞ্জন দত্তের। এ তথ্য স্মরণ করে এই শিল্পী বলেন, “নিজেরই স্ক্রিপ্ট লিখতে অসুবিধা হয়। কাজের লোককে ‘ঝি’ বলা যাবে না। কেন ‘কাজের লোক’ বললে কি তার জাত উঠে যাচ্ছে, না নেমে যাচ্ছে, বুঝতে পারছি না। ‘বেশ্যা’ কেন বলতে পারছি না? সেক্স ওয়ার্কার কেন বলতে হবে এটা বুঝতে পারছি না। এটা করতে করতে আমরা আমাদের জীবনের মজা হারিয়ে ফেলছি। বাঁচার আনন্দ হারিয়ে ফেলছি। প্রতি মুহূর্তে সচেতন থাকছি। এটা আমাদের কোথাও পৌঁছে দেবে না।”

গানের পাশাপাশি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেও খ্যাতি কুড়িয়েছেন অঞ্জন দত্ত। ১৯৯৮ সালে ‘বড়দিন’ সিনেমা পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে অভিষেক ঘটে তার। পরবর্তীতে আরো ২১টি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। ২০১১ সালে তার নির্মিত ‘রঞ্জনা আমি আর আসবোনা’ সিনেমাটি ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে।

তথ্যসূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়