‘জীবনে প্রথম দেখেছিলাম শৈশবে, ছুঁয়েছিলাম তার তুলতুলে হাত’
তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার হাতে থেকে ট্রফি গ্রহণ করছেন সংগীতশিল্পী পুতুল
বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া মারা গেছেন। আশি বছর বয়সে তার চিরবিদায়ে শোকাহত দেশবাসী। দল-মত নির্বিশেষ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ শোক প্রকাশ করছেন। তারকারাও তার ব্যতিক্রম নন। সংগীতশিল্পী সাজিয়া সুলতানা পুতুল শোক জানিয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি ভাগ করেছেন।
নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় দেশাত্মবোধক গানে প্রথম স্থান করেছিলেন পুতুল। এটি ২০০৩ সালের ঘটনা। ২০০৪ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া তার হাতে ট্রফি তুলে দিয়েছিলেন। সেই মুহূর্তের একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন পুতুল। আর ফিরে গেলেন বাইশ বছর আগে।
পুতুল তার লেখার শুরুতে বলেন, “জীবনে প্রথম তাকে দেখেছিলাম শৈশবে; ছুঁয়েছিলাম তার তুলতুলে হাত। কী অভূতপূর্ব সেই অনুভূতি! বিজয়ী হয়ে যত না আনন্দ হয়েছিল, তার চাইতে কোনো অংশে কম ছিল না তাকে ছুঁতে পারার আনন্দ। পুরস্কার নিতে নিতে তাকিয়েছিলাম তার চোখ দুটোতে। মনে হয়েছিল, এক মোম দিয়ে গড়া মানবী আমার সামনে দাঁড়িয়ে হাসছেন। ধূসর চুল আর শুভ্র শাড়িতে মনে হয়েছিল রাষ্ট্র প্রধান হতে হলে বোধ হয়, এতটাই আভিজাত্য নিজের ভিতর ধারণ করতে হয়।”
বড় হয়েও বেগম খালেদা জিয়ার সামনে সংগীত পরিবেশন করেছেন পুতুল। এ শিল্পীর ভাষায়, “এরপর বড় হয়েছি। আবার গান গেয়েছি তার সামনে। ততদিনে সংগীতাঙ্গনে পেশাদার শিল্পী হিসেবে যাত্রা শুরু করেছি। তিনি মঞ্চে বসে, তার ঠিক কয়েক হাত দূরে দাঁড়িয়ে একই মঞ্চে গাইছি। তিনি আদর করেছিলেন সেদিন আমার পরিবেশনা শেষে। বুঝেছিলাম তিনি একজন সংস্কৃতিপ্রেমী প্রধানমন্ত্রী।”
আত্মবিশ্বাসী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে পুতুল বলেন, “একটা অধ্যায়ের শেষ হলো। বাংলাদেশ নামক ভূ-খণ্ডের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ওপারে চলে গেছেন, যিনি এ দেশের লাখো তরুণীকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন সাধারণ একজন গৃহবধূ হয়েও আত্মবিশ্বাসের জোরে অসাধারণ হয়ে ওঠা যায়। শুধু অসাধারণ নয়, দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়াও অসম্ভব কিছু নয়।”
ইতিহাস বেগম খালেদা জিয়াকে মনে রাখবে। এ তথ্য উল্লেখ করে পুতুল বলেন, “জন্ম থেকে রাজনীতির কেবল দীর্ঘ প্রেক্ষাপট থাকলেই প্রধানমন্ত্রী হওয়া যায়, এই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে কেবল নিজের প্রজ্ঞা আর আত্মবিশ্বাস দিয়ে তিনবার তিনি হয়েছিলেন দেশ প্রধান। ভালো থাকবেন মাননীয়া। ইতিহাস আপনাকে মনে রাখবে।”
ঢাকা/শান্ত