ঢাকা     মঙ্গলবার   ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

যে কারণে নির্বাচন করছেন না তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:১৫, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫   আপডেট: ২২:২০, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
যে কারণে নির্বাচন করছেন না তারা

মাহফুজ আলম, সামান্তা শারমিন ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। ছবি: ইন্টারনেট থেকে নেওয়া

নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক দুই উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। দুজনই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও জমা দেননি।

এদিকে লক্ষীপুর-১ আসনে জামায়াত জোটের প্রার্থী হচ্ছেন মাহফুজ আলমের ভাই মাহবুব আলম। ঢাকা-১০ আসনে প্রার্থী হতে চাওয়া আসিফ মাহমুদ এনসিপিতে যোগ দিয়ে দলটির মুখপাত্র হয়েছেন।

আরো পড়ুন:

গত বুধবার জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনী জোট গঠনের আলোচনা শুরু করে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের গড়া এনসিপি। সেদিন জামায়াত জানিয়ে দেয়, জোট হলেও সাবেক দুই ছাত্র উপদেষ্টাকে প্রার্থী করা হবে না।

এনসিপি ৪৭ আসনে প্রার্থী দিয়েছে। একটি আসনে দুজনকে মনোনয়ন দিয়েছে। মাহফুজ আলম রবিবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইল থেকে জানান, নির্বাচনে তিনি অংশ নেবেন না।

গত ১০ ডিসেম্বর অন্তর্বর্তী সরকার থেকে পদত্যাগ করেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ছাত্রনেতা মাহফুজ এবং আসিফ।

সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ ইসলাম বলেন, “আজ (সোমবার) অনলাইনে এনসিপির রাজনৈতিক পর্ষদের একটি জরুরি সভা হয়েছে। সেই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আসিফ মাহমুদকে এনসিপির মুখপাত্রের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”

নাহিদ ইসলাম বলেন, “এনসিপি নির্বাচনি যাত্রায় পুরোপুরি ঢুকে পড়েছে। আসিফ মাহমুদ নির্বাচনে অংশ নেবেন না। বরং এনসিপির মনোনীত প্রার্থীরা যাতে নির্বাচনে জিতে আসতে পারেন, সেজন্য তিনি কাজ করবেন। তাকে এনসিপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”

এদিকে, জামায়াত জোটের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার ঘোষণা দিয়েছে এনসিপি সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) রাতে তার ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে এই তথ্য জানান।

পোস্টে তিনি লিখেন, “যেহেতু আমি এই জোট গঠনের সিদ্ধান্তকে সঠিক মনে করি না, আবার একই সঙ্গে পার্টি থেকেও এই মুহূর্তে আপাতত পদত্যাগ করছি না—তাই এনসিপি–জামায়াত জোটের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা কিংবা জামায়াতের কাছ থেকে কোনো ধরনের সাংগঠনিক বা আর্থিক সহায়তা গ্রহণ করা আমার কাছে নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। সে কারণেই আমি এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি না।”

পোস্টের শুরুতে তিনি লিখেন, “মধ্যমপন্থায় পৌঁছানো কোনো সহজ বা তাৎক্ষণিক প্রক্রিয়া নয়। ভিন্ন মতাদর্শ ও রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা থেকে আসা মানুষদের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি) মতভিন্নতা ও অভ্যন্তরীণ বিতর্ক স্বাভাবিক ও অনিবার্য। পার্টির মাত্র দশ মাসের পথচলায় সাংগঠনিক মধ্যমপন্থার চূড়ান্ত রূপ নির্ধারিত হয়ে যাবে—এমন প্রত্যাশা বাস্তবসম্মত নয়। ফলত ‘ইনার পার্টি স্ট্রাগল’ একটা অবশ্যম্ভাবী বাস্তবতা হয়ে উঠেছে।”

সামান্তা শারমিন লিখেন, “সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচনী কৌশল, বিশেষত জামায়াতে ইসলামির সঙ্গে নির্বাচনী জোট ও আসন সমঝোতার প্রশ্নে পার্টির ভেতরে ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে। আমি এই বিষয়ে আমার ভিন্নমত প্রকাশ করেছি। প্রত্যেকে নিজ নিজ রাজনৈতিক বোঝাপড়া ও বাস্তবতার মূল্যায়নের ভিত্তিতেই অবস্থান নিয়েছে; কোনটি সঠিক, তা সময়ই নির্ধারণ করবে।”

পোস্টের শেষে এনসিপির এই নেত্রী লিখেন, “পার্টির ঘোষিত অবস্থান অনুযায়ী এটি কোনো আদর্শিক জোট নয়; ফলে আদর্শিকভাবে জামায়াতের রাজনীতির বিরোধিতা করা এনসিপির অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। জামায়াতের সাথে নির্বাচনী জোট গঠনের বিষয়ে এনসিপির এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক মোড়। এর ফলাফলের সঙ্গে পার্টির ভবিষ্যৎ রাজনীতি অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িয়ে গেছে। একই সঙ্গে এনসিপির ভেতরে আমার নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎও এই সিদ্ধান্তের পরিণতির সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত। আমি আমার অবস্থানের রাজনৈতিক ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করবো। সময়ই এর চূড়ান্ত মূল্যায়ন করবে। আল্লাহ ভালো জানেন।”

ঢাকা/রায়হান/সাইফ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়