ঢাকা     মঙ্গলবার   ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

মাকে হারিয়ে যে বার্তা দিলেন তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:২৭, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫   আপডেট: ১৫:০২, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
মাকে হারিয়ে যে বার্তা দিলেন তারেক রহমান

খালেদা জিয়ার এই ছবি শেয়ার করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন তারেক রহমান।

দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফেরার ৫ দিনের মাথায় মাকে হারালেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মায়ের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে ফেসবুকে আবেগঘন বার্তা দিয়েছেন তিনি। ফেসবুকে দেওয়া ওই বার্তায় তিনি খালেদা জিয়াকে একই সঙ্গে একজন মমতাময়ী মা, আপসহীন নেত্রী এবং দেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের এক অনন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে স্মরণ করেন।

মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুর সোয়া ২টার দিকে ফেসবুকে লেখেন, “আমার মা, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, সর্বশক্তিমান আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে আজ আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।”

আরো পড়ুন:

তিনি লেখেন, “অনেকের কাছে তিনি ছিলেন দেশনেত্রী, আপোষহীন নেত্রী; অনেকের কাছে গণতন্ত্রের মা, বাংলাদেশের মা। আজ দেশ গভীরভাবে শোকাহত এমন একজন পথপ্রদর্শককে হারিয়ে, যিনি দেশের গণতান্ত্রিক পথযাত্রায় অনিঃশেষ ভূমিকা রেখেছেন।”

“আমার কাছে খালেদা জিয়া একজন মমতাময়ী মা, যিনি নিজের সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছেন দেশ ও মানুষের জন্য। আজীবন লড়েছেন স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে; নেতৃত্ব দিয়েছেন স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে।” বলেন তিনি। 

তারেক রহমান বলেন, “ত্যাগ ও সংগ্রামে ভাস্বর হয়েও, তিনি ছিলেন পরিবারের সত্যিকারের অভিভাবক; এমন একজন আলোকবর্তিকা যাঁর অপরিসীম ভালোবাসা আমাদের সবচেয়ে কঠিন সময়েও শক্তি ও প্রেরণা যুগিয়েছে। তিনি বারবার গ্রেফতার হয়েছেন, চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, সর্বোচ্চ নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। তবুও যন্ত্রণা, একাকিত্ব ও অনিশ্চয়তার মধ্যে থেকেও তিনি অদম্য সাহস, সহানুভূতি ও দেশপ্রেম সঞ্চার করেছিলেন পরিবারের প্রতিটি সদস্যের মাঝে।”

গণতান্ত্রিক পরিক্রমায় খালেদা জিয়া চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “দেশের জন্য তিনি হারিয়েছেন স্বামী, হারিয়েছেন সন্তান। তাই এই দেশ, এই দেশের মানুষই ছিল তাঁর পরিবার, তাঁর সত্তা, তাঁর অস্তিত্ব। তিনি রেখে গেছেন জনসেবা, ত্যাগ ও সংগ্রামের এক অবিস্মরণীয় ইতিহাস, যা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পরিক্রমায় চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।” 

সবার কাছে দোয়া চেয়ে তিনি বলেন , “আপনারা সবাই আমার মা’র জন্য দোয়া করবেন। তাঁর প্রতি দেশবাসীর আবেগ, ভালোবাসা ও বৈশ্বিক শ্রদ্ধায় আমি ও আমার পরিবার চিরকৃতজ্ঞ।” 

মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় ‘দেশনেত্রী’, ‘আপসহীন’ উপাধিতে ভূষিত বেগম খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

বেগম খালেদা জিয়া লিভার, কিডনি সংক্রান্ত জটিলতা, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, আথ্রাইটিস ও ইনফেকশনজনিত সমস্যাসহ বিভিন্ন জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছিলেন। উল্লেখ্য চলতি বছর ৭ জানুয়ারি তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নেওয়া হয়েছিল। সেখানে তার স্বাস্থ্যের কিছুটা উন্নতি ঘটে। তিনি দেশে ফিরে আসেন। তবে বয়স প্রতিকূল থাকায় এবং নানাবিধ রোগের জটিলতার কারণে তিনি প্রায়ই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়তেন। 

সর্বশেষ গত ২৩ নভেম্বর বেগম খালেদা জিয়াকে রাজধানীর  এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে তিনি সেখানেই  চিকিৎসাধীন ছিলেন। দেশবাসীর প্রত্যাশা ছিল, তিনি পূর্বের ন্যায় এবারও কিছুটা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু চিকিৎসকদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে চিরদিনের মতো না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। 

ঢাকা/রায়হান/ইভা 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়