ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

দৈনন্দিন জীবনে ই-কমার্স 

মো. সালাউদ্দীন আহমেদ  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৪৮, ৪ মার্চ ২০২১   আপডেট: ১৭:৫০, ৪ মার্চ ২০২১
দৈনন্দিন জীবনে ই-কমার্স 

ই-কমার্স বলতে মূলত ইন্টারনেটকে ব্যবহার করে ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে পণ্য কেনা, বিক্রয় ও বিনিময় করাকে বোঝায়। একটি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি সারাবিশ্বের গ্রাহকদের সঙ্গে চুক্তি করতে পারে। মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে ই-কমার্সের মাধ্যমে পণ্য ও পরিসেবা ক্রয়-বিক্রয় সম্পাদন করে। এক্ষেত্রে অর্থ আদান-প্রদানে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করা যেতে পারে। এমন সহজ পদ্ধতির জন্যই ই-কমার্স ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

একজন মানুষ প্রতিদিন ব্যবসা, বিপণন, বিনোদন, কাজ ও শেখার জন্য প্রতিদিনের অনেকটা সময় ইন্টারনেটে ব্যয় করে। আর এটি সাধারণ বিষয়। এখন একটি দিনের সমস্ত বাণিজ্যিক ও সামাজিক ক্রিয়াকলাপ ইন্টারনেটে সংযুক্ত রয়েছে। বর্তামানে ই-কমার্স ছাড়া ইন্টারনেটের চারপাশের পৃথিবী অসম্ভব এবং অকল্পনীয়। যে কারণে, ই-কমার্স আমাদের প্রতিদিনের জীবনে অতি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।

সময়ের চাহিদা অনুযায়ী ই-কমার্সের গ্রাহকদের জন্য কয়েক বছরের মধ্যে লেনদেনের নিয়ম কানুন বাধ্যতামূলক হয়ে উঠবে। এই মাধ্যমে ব্যবসা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি কাজে অভ্যস্ততায় ভালো একটি অবস্থানে চলে আসবে। আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি, ই-কমার্সের এত চাহিদা কেন?  এর পেছনে কারণ কী?

অনলাইন কেনা-বেচা প্রক্রিয়া হলো ই-কমার্স ব্যবহারকারীর প্রসারের প্রধান কারণ। একজন মানুষের শরীরের জন্য যেমন হার্ট গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি ই-কমার্সের জন্য ইন্টারনেট তত গুরুত্বপূর্ণ। এখন গ্রাহকদের অনলাইনে কেনাকাটার অনকেগুলো কারণ রয়েছে। এর মাধ্যমে সুবিধামতো কেনা যায়, দামের তুলনামূলক সামঞ্জস্য, কেনাকাটার কোনো ভিড় নেই, শারীরিক ভ্রমণের প্রয়োজন নেই ও আমাদের প্রিয়জনকে যে কোনো উপহার সহজেই প্রেরণ করা যায়। একটি প্রতিবেদন অনুসারে, বিশ্বব্যাপী ই-বাণিজ্য বিক্রয় ২০২০ সালের মধ্যে ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের লেনদেন হয়েছে বলে জানা যায়।

ই-কমার্সের প্রয়োজন কেন?

১. একইসঙ্গে বিভিন্ন ধরনের পণ্য পাওয়া যায়।

২. ঐতিহ্যবাহী পণ্য কেনাকাটা করা যায় ও দামের তারতম্য নেই।

৩. কম সময়ে কেনা যায়, দ্রুত গ্রাহক সেবাটা পায়।

৪. অনলাইনে আকর্ষণীয় ছাড় থাকে। 

৫. ঝামেলা মুক্ত কেনা-বেচার ব্যবস্থা।

৬. দ্রুত ব্যবসা সম্প্রসারণ করা যায়।

৭. অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়।

৮. ডিজিটাল পণ্য ও পরিসেবাগুলোতে উন্নতি সাধন হয়।

৯. রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় কম হয়।

১০.  একাধিক পণ্য বিক্রয় করা যায় ও বিপণনের বিকল্প ব্যবস্থা থাকে।

১১. ঐতিহ্যবাহী পণ্যগুলো নিয়ে গ্রাহকের আগ্রহ সৃষ্টি।

১২. ব্র্যান্ডের সাফল্যের জন্য গ্রাহকদের বেশি গুরুত্ব দেওয়া যায়।

১৩. ব্যক্তিগত গ্রাহকের অভিজ্ঞতা নেওয়া ও পাওয়া যায়।

অনলাইন  বাণিজ্য ও গতানুগতিক  বাণিজ্যের মধ্যে পার্থক্য ই-মেইল এবং মেইলের মতোই। এটি একটি বৈদ্যুতিক বর্ধন এবং পুরনো কালের প্রক্রিয়ার আধুনিক সমাধান। বাণিজ্য যদি পণ্য কেনা বা বেচার ক্ষেত্রে শারীরিক লেনদেন হয়, তবে ই-বাণিজ্য এটির বৈদ্যুতিক সমতুল্য অনলাইনে বিক্রয় এবং কেনা। ই-কমার্সের সঙ্গে লেনদেনের স্বাচ্ছন্দ্যের কারণে সুবিধার চেতনা উপস্থাপন করে। 

ই-কমার্স ওয়েব বিকাশের একটি পরোক্ষ পণ্য। বাণিজ্য অফলাইনে যেখানে গ্রাহকেরা সরাসরি এসে সুবিধা নিতে পারে, যেখানে লেগে থাকে অনেক সময় ও অর্থের সমন্বয়। ই-বাণিজ্য ইন্টারনেটকে ব্যবহার করে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সহজেই গ্রাহকের কাছে পৌঁছাতে পারে।

বর্তমান বিশ্বে মানুষের দৈনন্দিন পথচলায় ইন্টারনেটের মাধ্যমে খুব সহজেই আমাদের সুবিধাগুলো উপস্থাপন করছে। প্রতিযোগিতামূলক এই বিশ্বে ইন্টারনেটকে কাজে লাগিয়ে ই-কমার্স আজ আমাদের জীবনকে আরো সহজিকরণে অগ্রগতি ভূমিকা রেখে চলেছে। তথ্য প্রযুক্তির উপর নির্ভর করে ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রি আমাদের পুরো জীবনব্যবস্থাকে সহজ করে দিচ্ছে। যেখানে ই-কমার্সের মাধ্যমে অফলাইন কেনাকাটার সময় অর্থ পরিবহন ব্যয় হ্রাস করছে, সেইসঙ্গে ডিটেলস ডাটা সরবরাহ করছে৷

আজকের প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে খুব সফল কয়েকটি ই-ব্যবসায়গুলোর মধ্যে রয়েছে ইবে, অ্যামাজন এবং ওয়ালমার্ট। পরবর্তীকালে ই-কমার্স আমাদের জীবনকে প্রতিদিনের জীবনের ক্রিয়াকলাপের একটি অংশ হিসাবে পরিণত করেছে। আমাদের জীবনকে সহজ, অর্থনৈতিক এবং প্রযুক্তি বান্ধব করে তোলার জন্য প্রত্যেককে উপকৃত করেছে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ই-কমার্সের প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেইসঙ্গে এটা আমাদের জীবন চলার প্রতিটি পর্যায়ে আবশ্যক হয়ে যাবে।

লেখক: স্বত্বাধিকারী, বিডিম্যানগ্রোভ.কম।

ঢাকা/সিনথিয়া/মাহি 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়