ঢাকা     রোববার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৭ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

কাগজের ঠোঙা ও বক্সে সচ্ছলতা

অমরেশ দত্ত জয়, চাঁদপুর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৪৫, ২২ জানুয়ারি ২০২৪  
কাগজের ঠোঙা ও বক্সে সচ্ছলতা

স্ত্রী লিপি বেগমকে সঙ্গে নিয়ে ঠোঙা তৈরি করছেন সাগর হোসেন

পরিশ্রম ও একাগ্রতা থাকলে যে কোনো কাজেই সফলতা আসে- এমনই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন সাগর হোসেন ও তার স্ত্রী লিপি বেগম। এই দম্পতি শুধুমাত্র কাগজের ঠোঙা ও বক্স তৈরি করে এখন প্রতি মাসে আয় করছেন ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। তাদের আহ্বান, কাজটির দ্রুত বিস্তার ঘটাতে প্রয়োজন সহজ শর্তে ঋণসহ সংশ্লিষ্টদের সহায়তা। 

সোমবার (২২ জানুয়ারি) সকালে কচুয়ার পালাখাল মডেল ইউনিয়নের ভূঁইয়ারা গ্রামের বেপারী বাড়িতে কথা হয় সাগর-লিপি দম্পতির সঙ্গে। এসময় সাগর বলেন, তিনি এক সময় পালাখাল বাজারের বাপ্পি সাহা প্যাকেজিং অ্যান্ড ফরেনে ৩০০ টাকা মজুরিতে কাজ করতেন। সেখান থেকে পাওয়া পারিশ্রমিক দিয়ে সংসার ঠিকভাবে চালানো কষ্টকর হয়ে পড়লে তিনি কয়েক মাস আগে নিজ বাড়ির পাশেই দোকান ভাড়া নিয়ে বনে যান উদ্যোক্তা। এখন এই দোকানে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে কাগজের ঠোঙা ও মিষ্টির বক্স তৈরি করে পরিবারের সচ্ছলতা ফেরাচ্ছেন তিনি।

আরো পড়ুন:

বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাপ্পি সাহা প্যাকেজিং অ্যান্ড ফরেনের ম্যানেজার মো. জুয়েল রানা। তিনি বলেন, সাগর যথেষ্ট ভালো কাজ করতো। আমরা তাকে যে টাকা দিতাম তাতে তার হচ্ছিল না। পরে তিনি নিজে ব্যবসা দেওয়ার কথা জানান। আমরা তাকে ছেড়ে দেই এবং এই ব্যবসায় তাকে স্বাগত জানাই।

ভূঁইয়ারা গ্রামের প্যাকেজিং কারিগর সাগর বলেন, ‘আমি কিছু টাকা ঋণ নিয়ে প্রথমে একটি কাটিং মেশিন এবং একটি ভাজ মেশিন কিনি। এরপর একটি দোচালা টিনের দোকান ভাড়া নিয়ে সেখানে মেশিনগুলো বসাই। বাজার থেকে অটো বোর্ড, কাগজ, ময়দা, সুতা, পিন কিনে কাজ শুরু করি। মিষ্টির বক্স কাটিং করে তারপর ভাজ দিয়ে বক্সে লাসা লাগিয়ে এরপর তা শুকিয়ে মিষ্টির প্যাকেট তৈরি করি। তবে, মিষ্টির বক্সের চেয়ে কাগজের ঠোঙা বানানো অনেক সহজ।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঠোঙা ও মিষ্টির বক্স তৈরির যাবতীয় কাগজ ও বোর্ড ঢাকা থেকেই সংগ্রহ করতে হয়। যাবতীয় মিলিয়ে আমাদের প্রায় ২০ হাজার টাকা মাসে খরচ হয়। পরে সব খরচ বাদ দিয়েও মাসে গড়ে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার মতো লাভ থাকছে।’

সাগরের স্ত্রী লিপি বেগম বলেন, ‘এই ব্যবসাকে এগিয়ে নিতে সরকারিভাবে ঋণ সহায়তা প্রয়োজন। তাহলে আমাদের মতো ব্যবসায়িক উন্নতি দেখে অন্যরাও এই কাজের প্রতি আগ্রহী হবেন।’

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইকবাল হাসান বলেন, কচুয়ার পালাখাল, সাচার ও বায়েকের মোড়েও এই রকম প্যাকেজিংয়ের কাজ হয়। সেখানে উৎপাদিত কাগজের ঠোঙা ও বক্স চাঁদপুর জেলার অন্যত্রও পাঠানো হচ্ছে। আমরা সাগরের মতো উদ্যোক্তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিচ্ছি।

মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়