ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

মাছরাঙার জন্য যে কারণে বদলে গেল বুলেট ট্রেনের নকশা

মুজাহিদ বিল্লাহ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩০, ১২ জুলাই ২০২৩   আপডেট: ১১:৩৮, ১২ জুলাই ২০২৩
মাছরাঙার জন্য যে কারণে বদলে গেল বুলেট ট্রেনের নকশা

আধুনিক বিশ্বে বুলেট ট্রেনের কথা কে না জানে? দ্রুতগতির এই ট্রেন ছুটে চলে বুলেটের গতিতে। শুরুতে বুলেট ট্রেনের নকশায় পরিবর্তন আনতে হয়েছিল এবং এর পেছনে ভূমিকা ছিল মাছরাঙা পাখির। এক কথায়, বুলেট ট্রেনের নকশা বদলে গিয়েছিল এই পাখির কারণে। 

আজ থেকে প্রায় ৩০ বছর আগে জাপানে বুলেট ট্রেনে একটি বিশেষ ত্রুটি ধরা পড়ে। ট্রেন টানেলের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় বিকট এক ধরনের শব্দ হতে থাকে। এই শব্দ তৌকাইদৌ শিনকানসেন রেলস্টেশনের আশেপাশের বন্যপ্রাণি, যাত্রী এবং মানুষের জন্য বিরক্তিকর ছিল। এই স্টেশন থেকে যে ট্রেনগুলো ছেড়ে যেতে সব ট্রেনকেই কয়েকটি সুড়ঙ্গ অতিক্রম করতে হতো।

অনেক গবেষণার পর দেখা গেল, বুলেট ট্রেন টানেলে ঢোকার সময় ট্রেনের সামনে বায়ুর একটি স্তর থাকে। ফলে ট্রেন যখন টানেলে প্রবেশ করত সংকুচিত বায়ু শব্দ তৈরি করত। আবার ট্রেন যখন টানেল থেকে বের হতো তখন বন্দুকের গুলি ছোড়ার মতো শব্দ হতো। বাতাসের কারণে টানেলে ট্রেন চলার সময় গতি কমে আসতো যা অনেকটা জলের মধ্য দিয়ে হাঁটার মতো।

কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায় তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে যান গবেষকরা। তবে সমাধান এনে দেয় মাছরাঙা পাখি। গবেষণায় দেখা গেল মাছরাঙার ঠোঁট সরু এবং তীক্ষ্ণ। লম্বা ও সরু ঠোঁট ধীরে ধীরে গোড়া থেকে ব্যাসে বড় হয়ে পাখির মাথা পর্যন্ত এসেছে। পাখি যখন তীক্ষ্ণ ঠোঁট নিয়ে পানিতে প্রবেশ করে এ ক্ষেত্রে সংঘর্ষ কম হয়। ঠোঁটের পাশ দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় সহজেই পানিতে প্রবেশ করতে পারে। ঠোঁটের সামনের অংশ দিয়ে পানির স্তরকে ধাক্কা দিতে হয় না। মাছরাঙা স্বীকার ধরতে নিম্নচাপ অঞ্চল থেকে উচ্চচাপ অঞ্চলে ঘণ্টায় প্রায় ২৫ মেইল বেগে ঝাঁপ দিতে পারে। সুচালো এই ঠোঁটের জন্যই জলে কোনো তরঙ্গের সৃষ্টি হয় না। পাখির ঠোঁট দুটি ত্রিভুজের সমন্বয়ে গঠিত। যাতে কিছুটা বৃত্তকার প্রান্ত থাকায় সেটি একটা চ্যাপ্টা হীরার আকার নেয় এবং এ ভাবেই মাছরাঙার ঠোঁট তাদের ট্রেনের মাথার নকশা তৈরিতে সাহায্য করে। 

এরপরই বদলে যায় বুলেট ট্রেনের নকশা। মাছরাঙার ঠোঁটের আদলে নকশা করা হয় বুলেট ট্রেনের সামনের অংশের। এরপর দেখা গেল নতুন ট্রেনটিতে কোনো শব্দ নেই। আগের চেয়ে আরও গতিতে চলতে পারে ট্রেনটি এবং বিদ্যুৎ খরচও হচ্ছে আগের চেয়ে কম। 
 

তারা//

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়