ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

সৌদি আরবের মানুষ কী খায়

সাতসতেরো ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫২, ১০ মার্চ ২০২৪   আপডেট: ১৩:১২, ১০ মার্চ ২০২৪
সৌদি আরবের মানুষ কী খায়

ইসলামী ঐতিহ্য সমৃদ্ধ দেশ সৌদি আরব। অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ এ দেশের মানুষ বিলাশ-বহুল জীবন যাপন করেন। যার ছাপ রয়েছে তাদের খাবার দাবারেও। আরবের রন্ধনশৈলীতে ইয়েমেন, সিরিয়া, লেবানন, প্যালেস্টাইন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ব্রুনেই, থাইল্যান্ডের রন্ধনশৈলীর প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।

দেশটির রন্ধনশৈলীগুলো শতাব্দী প্রাচীন। খাবার তৈরিতে জিরা, জাফরান, গোলমরিচ, হলুদ, মৌরি মসলাগুলো অনেক বেশি ব্যবহার করা হয়। আরব ভূখন্ডে সবজির ব্যবহার তুলনামূলক কিছুটা কম। এখানে গাজর, বেগুন, ঢেঁড়স, পেঁয়াজ, জলপাই ইত্যাদি সবজির ব্যবহার হয়। ভেড়া এবং মুরগির মাংস সব থেকে বেশি ব্যবহৃত হয়। এর পাশাপাশি গরু-ছাগলের মাংসের প্রচলন আছে। কিছু কিছু অঞ্চলে পাখির মাংস খাওয়া হয়। ভূমধ্যসাগর, আটলান্টিক সাগর ও লোহিত সাগর উপকূলের আরব অধিবাসীরা মাছ খেয়ে থাকে। সালাদ হিসেবে টমেটোর কদর আছে পুরো আরবে। দেশটিতে ঐতিহ্যগতভাবে সম্মিলিত ভোজ করার রীতি আছে। আনুষ্ঠানিক খাবারে প্রচুর পরিমাণে ভেড়ার মাংস থাকে। প্রতিটি অনুষ্ঠানে প্রচুর পরিমানে আরবীয় কফি অথবা আরবীয় চা পানের ব্যবস্থা থাকে। 

আরবরা যেসব খাবার খায়:

মান্দি: এটি হচ্ছে বিশেষভাবে রান্না করা ভাত ও মাংসের সংমিশ্রণ। কয়লার আগুনের তাপে ভাত ও মাংস সেদ্ধ করে এই খাবার প্রস্তুত করা হয়। ভাতের মধ্যে দেওয়া হয় দারুচিনি, এলাচ, কিশমিশ। তবে মাংসে কোনো মসলা দেওয়া হয় না। আস্ত ছাগল বা ভেড়া জবাই করার পরে পরিষ্কার করে লবণ ও তেল মেখে চুলার ওপর ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। তার নিচে থাকে ভাতের পাতিল আর ওপরে ছাগল ঝোলানো। প্রচণ্ড তাপে ছাগলের শরীরের চর্বি গলে গলে বা খণ্ড আকারে নিচে ভাতের ওপর পড়তে থাকে। তারপর তা খাওয়া হয়।

রুটি:  আরবরা বিভিন্ন ধরনের রুটি খেয়ে থাকেন।  রুটি তৈরির প্রধান উপকরণ গম। সুজির ব্যবহারও অধিক পরিমাণে হয়। পাতলা রুটি তাহরিদ, সেঁকা রুটি কিজা খাওয়ার প্রচলন আছে।

বাসবোসা: এটি হচ্ছে এক ধরনের কেক যা কাজু বাদাম ও সুজি দিয়ে বানানো হয়।

খেবসা: এই খাবারটিও ভাত ও মাংসের মিশ্রণে তৈরি হয়। গরু, ভেড়া, মুরগি, মাছ দিয়েও তৈরি হয় খেবসা। এই রন্ধনশৈলী বিরিয়ানি রান্নার মতোই। অল্প তেল, মসলা ব্যবহার করে রান্না করা হয়।

আল-ফাহাম: কয়লায় পোড়ানো মুরগি লাল ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করা হয়। একে বলা হয় আল ফাহাম। এই খাবার বড় থালায় পরিবেশন করা হয়।

রুজ বুখারি: ভাতের সঙ্গে মুরগির মাংস আর ভাজা আলু দিয়ে এই খাবার প্রস্তুত করা হয়। এর সঙ্গে থাকে টমেটোর চাটনি, সালাদ। 

খবুজ: এর ধরণ তন্দুরি রুটির মতো। যা মসুর অথবা ছোলার ডালের সঙ্গে খাওয়া হয়। অনেক সময় মুরগির মাংসের সঙ্গে খাওয়া হয় খবুজ।

তামিয়া: খবুজ থেকে তৈরি হয় তামিয়া। অর্ধেক খবুজের ভেতর  ডিমের ফালি,শশা,টমেটো, ভাজা আলু,পিয়াজু,সস ও মেয়োনেজ দিয়ে প্রস্তুত হয় তামিয়া। 

গাওয়া: সৌদি আরবের এক ধরনের চায়ের নাম গাওয়া। ফোটানো পানিতে বিভিন্ন মসলা দিয়ে দিয়ে এই চা তৈরি হয়। এতে চিনি ব্যবহার করা হয় না। অনেকে এটা খেজুরের সঙ্গে খেয়ে থাকেন।

সেলেক: এটি হচ্ছে মুরগির মাংসের রেসিপি। মুরগির মাংসে রসুন, লবণ, কাচা মরিচ, শুকনো মরিচ, জিরা, ধনিয়া গুড়ো মিশিয়ে রান্না করা হয়। এবং ভাতের সাথে পরিবেশন করা হয়।

মুকলুবা: বিভিন্ন রকম সবজি ভেজে ভাতের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া হয়। তারপর থালার মাঝখানে রাখা হয় মকবুলা।  এটি মুরগি অথবা ভেড়ার মাংস দিয়ে রান্না করা হয়।

আরবরা দুগ্ঘজাতীয় খাবার হিসেবে দই, পনির, মাখন খেয়ে থাকে।  আরব বেদুঈন সংস্কৃতিতে সকালের নাস্তায়  ভাজা ডাল, রুটি, বাদাম, শুকনো ফল, দই, পনির এবং চা অথবা কফি খাওয়ার প্রচলন আছে। তারা হালকা খাবার হিসেবে বাদাম এবং শুকনো ফল খেয়ে থাকেন।

তথ্যসূত্র:  লাইফ ইন সৌদি আরবডটনেট, উইকিপিডিয়া

/লিপি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়