ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

বিয়ে করে পালাচ্ছেন আইএসের বন্দি নারীরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:২৯, ২ জুলাই ২০২১   আপডেট: ২১:৪৬, ২ জুলাই ২০২১
বিয়ে করে পালাচ্ছেন আইএসের বন্দি নারীরা

সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন এমন শত শত নারী সিরিয়ার আল-হল বন্দিশিবিরে আটক রয়েছেন। এদের অনেকেই অনলাইনে যোগাযোগ হওয়া বিদেশি পুরুষদের বিয়ে করছেন। নতুন স্বামীদের পাঠানো অর্থের বিনিময়ে বন্দি শিবির থেকে ইতোমধ্যে পালিয়েছেন কয়েকশ নারী। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এক বিশেষ প্রতিবেদনে শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে।

হল শিবিরের ভেতরে ও বাইরে থাকা ৫০ জন নারী, এক কুর্দি কর্মকর্তা ও আইএসের সাবেক এক সদস্য জানিয়েছেন, মুক্তির জন্য বন্দিশিবিরের বাসিন্দারা চক্রটির কাছে সব মিলিয়ে পাঁচ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন। 

বন্দিশিবিরে থাকা এক রুশ নারী বলেন, ‘প্রতিদিন আমি এক পুরুষ আমার কাছে বার্তা পাঠায়, আমি বিয়ে করতে চাই কিনা। আমার আশেপাশের সবার বিয়ে হয়ে গেছে...অবশ্য যারা এখনও আইএসের সমর্থক এবং সচ্চরিত্রের দাবি করেন, তারা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করতে পারেন।’

২০১৯ সালে তথাকথিত খেলাফতের পতনের সময় সিরিয়ায় আইএসের শেষ ঘাঁটিতে প্রায় ৬০ হাজার নারী ও শিশু ছিল। এখন এসব নারী ও শিশু যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সের বন্দিশিবিরে রয়েছে। তাদের এই বন্দিদশায় ক্ষুব্ধ বিশ্বজুড়ে আইএস সমর্থকরা। অনেকে অনলাইনের মাধ্যমে বন্দি নারীদের বিয়ে করে তথাকথিত জিহাদিদের শ্রদ্ধা জানানোর একটি উপায় বলে মনে করছেন। এই সম্ভাব্য স্বামীদের অধিকাংশই মুসলিম দেশের হলেও তারা ইউরোপে বাস করেন এবং তাদের বেশ ভালো সম্পদ রয়েছে।

বন্দিশিবিরের নারীরা এই বিয়ের মাধ্যমে তাদের নিরাপদ আয় নিশ্চিত করতে চাইছে এবং জীবনকে কিছু স্বাচ্ছ্যন্দময় করতে চায়। বিদেশি স্বামীদের পাঠানো অর্থ এসব নারী খাদ্য, ওষুধ, ফোনের বিল ও গৃহকর্মীদের জন্য ব্যয় করছে।

ফেসবুকের মাধ্যমে বন্দিশিবিরের নারীদের বিয়ের প্রস্তাব পাঠানো হয়। এর জন্য আইএসের প্রতি সহানুভূতিশীল ফেসবুক পেজগুলো ব্যবহার করা হয়। স্ত্রী প্রত্যাশী এমনই এক ব্যক্তি আরবিতে লিখেছেন, ‘আমার একটি অনুরোধ আছে... ধর্ম মেনে চলতে চান এমন এক জন স্ত্রী কি আমি শিবির থেকে খুঁজে পেতে পারি? আমি তাকে যে কোনো মূল্যে শিবির থেকে বের করে আনতে পারব।’

এভাবে বিয়ের পর হল বন্দিশিবির থেকে কত জন নারী পালিয়েছেন তার সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি। তবে একটি চিত্রে শিবিরের মানুষ কমার বিষয়টি বোঝা গেছে। দুই বছর আগে বন্দিশিবিরের তাবুগুলোতে জায়গা ও অন্যান্য জিনিসপত্রের জন্য মারামারি পর্যন্ত হয়েছে। এখন অনেক তাবু ফাঁকা। সেই সুবাদে যেসব তাবুতে ভীড় ছিল, সেখান থেকে অনেকে ফাঁকা তাবুগুলোতে গিয়ে উঠছেন। 

পালিয়ে যাওয়া এসব নারী কোথায় তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। তবে এক নারী দ্য গার্ডিয়ানকে জানিয়েছেন, তিনি এখন তার নতুন স্বামীর সঙ্গে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে বাস করছেন।

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়