ঢাকা     সোমবার   ১৪ জুলাই ২০২৫ ||  আষাঢ় ৩০ ১৪৩২

গাজা নীতির বিরোধিতাকারী পররাষ্ট্র কর্মকর্তাদের পদত্যাগ করতে বলল যুক্তরাজ্য

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১৩, ১১ জুন ২০২৫   আপডেট: ১৫:৪৫, ১১ জুন ২০২৫
গাজা নীতির বিরোধিতাকারী পররাষ্ট্র কর্মকর্তাদের পদত্যাগ করতে বলল যুক্তরাজ্য

১৫ জুলাই, ২০২৪ তারিখে পশ্চিম জেরুজালেমে ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হার্জোগের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি কর্মকাণ্ডে যুক্তরাজ্যের সম্ভাব্য ‘জড়িত থাকার’ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশকারী ৩০০ জনেরও বেশি ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মীকে বলা হয়েছে, তারা যদি সরকারের নীতির সঙ্গে মৌলিকভাবে একমত না হন তবে তারা পদত্যাগ করতে পারেন।

মঙ্গলবার (১০ জুন) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর। 

বিবিসির মতে, গত মাসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামিকে পাঠানো একটি অভ্যন্তরীণ চিঠিতে ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাজ্যের অব্যাহত অস্ত্র বিক্রির সমালোচনা করা হয়েছিল এবং ইসরায়েলি সরকারকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি চরম অবজ্ঞা’ করার অভিযোগ আনা হয়েছিল।

আরো পড়ুন:

গত ১৬ মে মন্ত্রীর কাছে পাঠানো পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মীদের ওই চিঠিতে গাজায় মানবিক সাহায্যের ওপর ইসরায়েলের নিষেধাজ্ঞা, মার্চ মাসে ১৫ জন মানবিক কর্মীর হত্যা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি স্থাপন সম্প্রসারণের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছিল।

লন্ডন এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তরের ভূমিকার প্রতিনিধিত্বকারী স্বাক্ষরকারীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, নীতি বাস্তবায়নে তাদের ভূমিকা ভবিষ্যতে যুক্তরাজ্যের বিরুদ্ধে মামলায় তাদের আইনি দায়বদ্ধতার সম্মুখীন করতে পারে।

২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এটি চতুর্থবারের মতো যুক্তরাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের চিঠি, যা গাজায় বেসামরিক মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির মধ্যে যুক্তরাজ্যের অবস্থান নিয়ে ক্রমবর্ধমান অভ্যন্তরীণ অস্বস্তি সামনে আনলো।

বিবিসি জানিয়েছে, গত  ২৯ মে এক প্রতিক্রিয়ায়, পররাষ্ট্র দপ্তরের স্থায়ী আন্ডার সেক্রেটারি স্যার অলিভার রবিন্স এবং নিক ডায়ার পররাষ্ট্র কর্মীদের উদ্বেগ স্বীকার করেছেন। তবে তারা জোর দিয়ে বলেছেন, বেসামরিক কর্মচারীদের অবশ্যই আইনি সীমার মধ্যে ‘সম্পূর্ণ হৃদয়ে; সরকারি নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে।

তারা পদত্যাগকে গভীর মতবিরোধকারীদের জন্য ‘সম্মানজনক পদক্ষেপ’ হিসেবে সুপারিশ করেছেন। এ ঘটনা কিছু স্বাক্ষরকারীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, এ ধরনের প্রতিক্রিয়া হতাশাজনক, প্রশাসনে মতবিরোধকারীদের জন্য স্থান সংকুচিত হচ্ছে।

পররাষ্ট্র দপ্তর তার অবস্থান রক্ষা করে বলেছে, তাদের কর্মীদের উদ্বেগ প্রকাশের ব্যবস্থা রয়েছে, কিন্তু সরকার তার গাজা নীতিতে ‘কঠোরভাবে আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগ করেছে’। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে, প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের নেতৃত্বে লেবার সরকার আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘনের ঝুঁকি উল্লেখ করে ইসরায়েলে ৩৫০টি অস্ত্র রপ্তানি লাইসেন্সের মধ্যে প্রায় ৩০টি স্থগিত করেছে।

গত ১৯ মে, ফ্রান্স ও কানাডার সঙ্গে যুক্তরাজ্যও যোগ দিয়ে হুমকি দেয় যে, ইসরায়েল যদি গাজায় তাদের সামরিক অভিযান  বন্ধ না করে এবং সাহায্য নিষেধাজ্ঞা তুলে না নেয়, তাহলে ‘জোরালো পদক্ষেপ’ নেওয়া হবে।

সমালোচকরা, যাদের মধ্যে একজন সাবেক কর্মকর্তাও রয়েছেন তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসিকে বলেন, গাজায় ইসরায়েলি কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিক্রিয়া ‘অস্পষ্ট’।

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর নিরপেক্ষ পরামর্শের প্রতি তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। সেই সঙ্গে উল্লেখ করেছে, কর্মীদের উদ্বেগ মোকাবিলার জন্য একটি ‘চ্যালেঞ্জ বোর্ড’ গঠন করা হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়