নেপালে বিক্ষোভকারীদের দমনে ছোড়া হয়েছিল তাজা গুলি
চলতি মাসে নেপালে দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভের সময় বিক্ষোভকারীদের দমনের জন্য তাজা গুলি ব্যবহার করা হয়েছিল। কমপক্ষে ৩৩ জন বিক্ষোভকারী ‘উচ্চ-গতির’ আগ্নেয়াস্ত্র থেকে ছোড়া ‘তাজা গুলিতে’ নিহত হয়েছেন। ময়নাতদন্ত পরিচালনাকারী মেডিকেল ইনস্টিটিউটের বরাত দিয়ে শুক্রবার রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় ইনস্টিটিউট অফ মেডিসিনের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের একজন সদস্য রয়টার্সকে এই তথ্যের বর্ণনা দিয়েছেন, যিনি সংবেদনশীল বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করার জন্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে কথা বলেছেন। নেপালে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ৭৪ জন নিহত এবং দুই হাজারেরও বেশি আহত হয়েছিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ, দুর্নীতি এবং মন্ত্রী-এমপিদের সন্তানদের বিলাসী জীবনযাপনের প্রতিবাদে চলতি মাসে নেপালের তরুণ প্রজন্ম সরকারবিরোধী বিক্ষোভে নামে। এই বিক্ষোভের ফলে শেষ পর্যন্ত সত্তরোর্ধ প্রধানমন্ত্রী কে.পি. শর্মা অলি এবং তার সরকারের পতন ঘটে।
বিক্ষোভকারীদের উপর তাজা গুলি ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগে একজন প্রধান প্রতিবাদী নেতা অলি এবং তার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখকের গ্রেপ্তার দাবি করেছিলেন। তবে তিনি কোনো প্রমাণ দেননি। ২০ সেপ্টেম্বরের এক ফেসবুক পোস্টে অলি জানিয়েছিলেন, তার সরকার নিরাপত্তা বাহিনীকে বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালানোর নির্দেশ দেয়নি।
৮ এবং ৯ সেপ্টেম্বর সহিংসতা চরমে পৌঁছানোর সময় বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়িত্বে থাকা নেপাল পুলিশের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, নবনিযুক্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত একটি কমিটির তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা মন্তব্য করতে পারবে না।
ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় ইনস্টিটিউট অফ মেডিসিনের কাঠমান্ডুভিত্তিক মহারাজগঞ্জ মেডিকেল ক্যাম্পাসে ময়নাতদন্ত করা হয়েছিল।
ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সদস্য জানিয়েছেন, গুলিবিদ্ধ ৩৪টি মৃতদেহ পরীক্ষা করা হয়েছে, যার মধ্যে ১০ জনের মাথায়, ১৮ জনের বুকে, চারটি পেটে এবং দুটির ঘাড়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। শুধুমাত্র একজনের শরীরে রাবার বুলেট আঘাত পাওয়া গেছে।
গুলিগুলোর ক্যালিবার বা মারাত্মক গোলাবারুদ ছোড়ার জন্য ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রের ধরণ নির্দিষ্ট করতে পারেনি ফরেনসিক বিভাগ।
উচ্চ-গতির অস্ত্রগুলো সাধারণত প্রতি সেকেন্ডে ৬০০ মিটারেরও বেশি গতিতে প্রজেক্টাইল ছোড়াতে পারে। নেপালে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে এই ধরনের অস্ত্র রয়েছে।
ঢাকা/শাহেদ