ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

‘শুধু বাংলাদেশেই মশা মারতে হাইকোর্টে আসতে হয়’

মেহেদী হাসান ডালিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৩৪, ২২ জুলাই ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘শুধু বাংলাদেশেই মশা মারতে হাইকোর্টে আসতে হয়’

নিজস্ব প্রতিবেদক : আদালতের আদেশ সত্ত্বেও এডিস মশা নিধন ও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়ায় দুই সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, শুধু বাংলাদেশেই মশা মারতে হাইকোর্টে আসতে হয়। আদালতের আদেশ দিতে হয়। পৃথিবীর অন্য কোন দেশে মশা মারতে আদালতের আদেশ দিতে হয় না।

সোমবার দুই সিটির করপোরেশনের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মোহাম্মদ সোহরাওয়ারদীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

আদালত বলেন, এডিস মশা নির্মূলে দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে যে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়েছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট নই। মশা নিধনে যদি কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হতো তাহলে হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে কেন? প্রতিবেদনে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ নেয়া ছাড়া আর তো কিছু দেখতে পাচ্ছি না। সিটি করপোরেশনে যারা আছেন তাদেরকে আগে সচেতন হতে হবে। এরপর জনগণকে সচেতন হতে বলুন। সেটা না করে প্রতিবেদনে বোগাস কথাবার্তা তুলে ধরছেন। আমরা চাই, সমন্বিতভাবে মশা নিধনে কার্যকর পদক্ষেপ নিন, যেন কোনো মানুষকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে না হয়।

হাইকোর্টের দেয়া এ আদেশ অনুসারে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, সে ব্যাপারে দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে আদালতে প্রতিবেদন দেয়া হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মশক নিধন কার্যক্রম জোরদার করার পাশাপাশি বিভিন্ন জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি আদালতে উপস্থাপন করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সায়রা ফাইরোজ।

আদালত বলেন, জনগণ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে এপ্রিল মাস থেকে। তখন থেকে মশা নিধনে কেন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করেননি? মেয়র বসে থাকবেন, কখন উচ্চ আদালত থেকে আদেশ আসে তখন কাজ শুরু করবেন! পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে মশা নিধনে হাইকোর্ট রুল দেয় না। কিন্তু সেবা সংস্থার নিষ্ক্রিয়তার কারণে আমাদেরকে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে। সিটি করপোরেশনের নেয়া কার্যক্রম আমাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হবে যেদিন লোকজনের হাসপাতালে যাওয়া বন্ধ হবে। যে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে তাতে মশা নির্মূল হলে মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হতো না। যদি এটা মহামারী রূপ নেয় তখন কিছুই করার থাকবে না।

আইনজীবীর উদ্দেশে আদালত বলেন, পত্রিকায় দেখলাম, ২৬ জন লোক মারা গেছে। যখন রুল জারি করা হয় তখন ছিল ১১ জন। সাংবাদিকেরা কি মিথ্যা লেখে?

এরপর আদালত এডিস মশা নির্মূলে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়ায় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদেরকে তলব করেন। আগামী বৃহস্পতিবার সকালে আদালতে হাজির হয়ে এ বিষয়ে তাদেরকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

এর আগে গত ১৪ জুলাই এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।


রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ জুলাই ২০১৯/মেহেদী/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়