ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ৩০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

‘রায়টা যেন হয়’

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১৪, ৭ ডিসেম্বর ২০২১   আপডেট: ১২:১৮, ৭ ডিসেম্বর ২০২১
‘রায়টা যেন হয়’

আবরারের বাবা বরকতুল্লাহ

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায়ের অপেক্ষায় রয়েছেন তার বাবা বরকতুল্লাহ। রায় নিয়ে তিনি বলেন, আদালতের প্রতি আস্থা রয়েছে। রায়টা যেন কাল বুধবার (৮ ডিসেম্বর) হয়।

পড়ুন: আবরার হত্যা মামলার রায় বুধবার

আরো পড়ুন:

বুধবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান আদালতে মামলার রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য রয়েছে।  

গত ২৮ নভেম্বর মামলাটি রায়ের জন্য ছিল।  কিন্তু ওইদিন রায় প্রস্তুত হয়নি। এজন্য তা পিছিয়ে আদালত ৮ ডিসেম্বর ঠিক করেন। গত ১৪ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের এ তারিখ ধার্য করেন।

এদিকে, রায়ে আবরারের মা রোকেয়া খাতুন আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশা করছেন। তিনি বলেন, ‘গত ২৮ নভেম্বর মামলাটি রায়ের জন্য ছিল। কিন্তু ওইদিন রায় হয়নি।  আশা করছি, কাল রায় হবে।  রায়ে যেন আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা হয়।’

তিনি বলেন, ‘২৬ মাস আগে এই দিনে আবরার হসপিটালের মর্গে পড়ে ছিল।  ছেলেকে তো ওরা আমার বুক থেকে কেড়ে নিয়েছে।  ওকে তো আর ফিরে পাবো না।  ওকে ছাড়া দিনগুলো যে কত কষ্টের মা হয়ে আমি বুঝতেছি।  আবরারকে কি নির্মমভাবে পিটিয়ে ওরা মেরে ফেললো।  গুলি করে মেরে ফেললেও ওর এত কষ্ট হতো না।  ওকে নির্যাতনের সেই স্মৃতি সামনে ভাসে।’

রোকেয়া খাতুন বলেন, ‘আশায় আছি, ছেলের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। শাস্তি থেকে শিক্ষা হোক।  সাজা না হলে ওরা আমার মতো আরও অনেক মায়ের বুক খালি করবে।  অনেক মাকে তার সন্তানকে অকালে হারাতে হবে।  দৃষ্টান্তমূলক সাজা হলে পরবর্তীকে কেই এ ধরনের জঘন্য অপরাধ করতে সাহস পাবে না।

আবরার বাবা বরকতুল্লাহ বলেন, ‘আদালতের প্রতি আমাদের আস্থা আছে। রায়ে সব আসামির সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যদণ্ড প্রত্যাশা করছি।  কেউ যেন মামলা থেকে খালাস না পায়। রায়টি যেন দৃষ্টন্তমূলক হয়। আর যেন আমার মতো কোনো বাবা মায়ের বুক খালি না হয়।’

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে আসামিরা।  এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে পরের দিন ৭ অক্টোবর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন বরকতুল্লাহ। ওই বছরের ১৩ নভেম্বর ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক ওয়াহেদুজ্জামান। 

গত বছর ১৫ সেপ্টেম্বর ২৫ আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত।  মামলায় ৬০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। গত ১৪ মার্চ এ মামলায় কারাগারে থাকা ২২ আসামি আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।  অন্য তিন আসামি পলাতক থাকায় আত্মপক্ষ শুনানি করতে পারেনি। এরপর কয়েকজন আসামি নিজেদের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্যও দেন। গত ৭ সেপ্টেম্বর মামলায় কিছু ত্রুটি থাকায় রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি পুনরায় চার্জগঠনের আবেদন করেন। ৮ সেপ্টেম্বর আদালত ২৫ আসামির বিরুদ্ধে পুনরায় চার্জগঠন করেন। এরপর ১৪ সেপ্টেম্বর আত্মপক্ষ শুনানিতে ২২ আসামি আবারও নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।

আসামিরা হলেন বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহতামিম ফুয়াদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মো. অনিক সরকার ওরফে অপু, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন ওরফে শান্ত, আইন বিষয়ক উপ-সম্পাদক অমিত সাহা, উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, ক্রীড়া সম্পাদক মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, গ্রন্থ ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ইশতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, কর্মী মুনতাসির আল জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মো. মুজাহিদুর রহমান, মো. মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মো. মাজেদুর রহমান মাজেদ, শামীম বিল্লাহ, মুয়াজ ওরফে আবু হুরায়রা, এএসএম নাজমুস সাদাত, আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মোর্শেদ অমত্য ইসলাম, এস এম মাহমুদ সেতু, মুহাম্মদ মোর্শেদ-উজ-জামান মন্ডল ওরফে জিসান, এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম ও মুজতবা রাফিদ।  আসামিদের মধ্যে প্রথম ২২ জন কারাগারে আছেন। শেষের তিনজন পলাতক।  ৮জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

মামুন/এসবি 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়