বুস্টার ডোজে পিছিয়ে নারীরা

করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ক্ষেত্রে নারী এবং পুরুষরা প্রায় কাছাকাছি। তবে, বুস্টার ডোজের ক্ষেত্রে পুরুষের চেয়ে নারীরা পিছিয়ে আছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেছেন, ‘প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর নারীদের অনেকে বুস্টার ডোজ নেননি। পরিবারের অন্য সদস্যদেরকে বুস্টার ডোজ নেওয়ার ব্যাপারে নারীদের উৎসাহ দিতে হবে।’
বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ৫-১১ বছরের শিশুদের করোনা টিকা প্রদান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনায় আমরা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম হয়েছি। সারা বিশ্ব আমাদের প্রশংসা করছে। বিশ্বের অনেক দেশ এখনও ১০ থেকে ১৫ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে পারেনি। কিন্তু, বাংলাদেশ টিকা দিয়ে মানুষকে সুরক্ষার আওতায় নিয়ে এসেছে। মৃত্যুও প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এক দিনে ১ কোটি ২০ লাখ ডোজ টিকা দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে ৮৫ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই চেইন মেইনটেইন করে, ঝুঁকি বিবেচনায় পঞ্চাশোর্ধ্বদের আগে টিকা দিয়েছি। ফ্রন্টলাইনারদেরও আগে দিয়েছি। সবশেষে শিশুদের টিকা হাতে পেয়েছি। তাই, কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছি। এসব টিকা ফাইজার কোম্পানির। যুক্তরাষ্ট্র সরকার আমাদের শিশুদের জন্য এ টিকা উপহার হিসেবে দিয়েছে।’
শিশুদের টিকার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘৫ থেকে ১১ বছরের ২ কোটি ২০ লাখ শিশুকে টিকা দিতে হবে। শিশুদের জন্য প্রায় ৪ কোটি ৪০ লাখ ডোজ টিকা লাগবে। আমরা এর মধ্যে ৩০ লাখের মতো টিকা হাতে পেয়েছি। বাকি টিকা যুক্তরাষ্ট্র সরকার কোভ্যাক্সের মাধ্যমে আমাদেরকে দেবে বলে নিশ্চিত করেছে। সেজন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকার, সে দেশের জনগণ এবং বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।’
জাহিদ মালেক আরও বলেন, ‘এই টিকা শিশুদের জন্য ফাইজার কোম্পানি বিশেষভাবে তৈরি করেছে। শিশুদের জন্য খুবই নিরাপদ। যুক্তারাষ্ট্রের শিশুদেরও এই টিকা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরও এই টিকার অনুমোদন দিয়েছে। যে টিকাগুলো এসেছে, সেগুলো দুই মাসের ব্যবধানে দিতে হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত দেশে ২৯ হাজার লোক মারা গেছেন, যার মধ্যে ৫০ বছরের ঊর্ধ্বেই ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ। এই তালিকায় যুবকদের সংখ্যা খুবই কম। ৫ থেকে ১১ বছরের শিশুদের মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।’
‘করোনায় শিশুদের ঝুঁকি কম। শিশুরা এমনিতেই করোনা থেকে নিরাপদ ছিল। তারপরও শিশুদের বাবা মায়েদের অনুরোধে আমরা শিশুদের জন্য এই টিকা কার্যক্রম শুরু করেছি।’
বক্তব্য শেষে মন্ত্রী শিশুদের টিকা কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস, বাংলাদেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি রাজেন্দ্র বোহরা, ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট প্রমুখ।
মেয়া/রফিক
আরো পড়ুন