ঢাকা     রোববার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

গণধর্ষণ ও অপহরণ: ওসিসহ ৭ জনকে আসামি করে মামলার আবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:২২, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২  
গণধর্ষণ ও অপহরণ: ওসিসহ ৭ জনকে আসামি করে মামলার আবেদন

হাতিলঝিল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রশিদ ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের ইন্সপেক্টর গোলাম মোক্তার আশরাফ উদ্দিনসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ ও অপহরণের অভিযোগে মামলার আবেদন করেছেন এক নারী (৩৩)।

ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এ বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এ মামলার আবেদন করা হয়। 

বিচারক জুলফিকার হায়াত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। তবে আদালত এদিন কোনও আদেশ দেননি। ট্রাইব্যুনাল আগামী ৬ অক্টোবর বাদী ও তার ছেলে এবং তার মাকে আরও অধিকতর জবানবন্দি গ্রহণের জন্য তলব করেছেন। 

সেদিন ট্রাইব্যুনাল তাদের সবার জবানবন্দি নেওয়ার পর মামলা গ্রহণের বিষয়ে আদেশ দেবেন। যা সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদা আক্তার নিশ্চিত করেন।

মামলার আরও যাদের আসামি করার আবেদন করা হয়েছে তারা হলেন- তানীম রেজা বাপ্পি, সাজিদা তানীম, জাবেল হোসেন পাপন, মো. জামাল ও সাইফুল ইসলাম।

মামলায় বলা হয়, বাদী একজন পুত্র সন্তানের মা। তিনি চলতি বছর ১ মার্চ ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে আসামি তানীম রেজা বাপ্পি, জাবেল হোসেন পাপন, মো. জামাল ও ওসি আব্দুর রশিদসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে একটি মামলা করেন। ট্রাইব্যুনাল ওসি আব্দুর রশিদকে বাদ দিয়ে তানীম রেজা বাপ্পি, জাবেল হোসেন পাপন, মো. জামালসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানাকে মামলাটি এজাহার হিসাবে গ্রহণের নির্দেশ দেয়। সে অনুযায়ী হাতিরঝিল থানা মামলাটির এজাহার নেয়। বর্তমানে ওই মামলাটি পিবিআই তদন্ত করছে। 

মামলা হওয়ার পর আসামি আব্দুর রশিদ ও আশরাফ উদ্দিনের সহযোগিতায় অপর আসামিরা মামলাটি তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করতে। নাহলে সন্তানকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। এই অবস্থায় চলতি বছর ২৩ মে রাত সাড়ে ১১টার দিকে আসামি তানীম রেজা বাপ্পি, মো. জামাল ও সাইফুল ইসলাম বাদীর বাসায় এসে তাকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বলেন। বাদী তা অস্বীকার করলে জামাল তার ছেলেকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখেন এবং তানীম রেজা বাপ্পি ও সাইফুল ইসলাম অস্ত্রের মুখে তাকে ধর্ষণ করেন। একইভাবে চলতি বছর ৩১ মে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। 

বাদী নিজের ও ছেলের প্রাণনাশের ভয়ে আসামিদের সব অত্যাচার সহ্য করেন। এরপর গত ৫ জুন সকাল সাড়ে ৮দিকে বাদীর বাসায় এসে আসামি আব্দুর রশিদ ও আশরাফ উদ্দিনের সহযোগিতায় অপর আসামিরা তাকে জোরপূর্বক পিবিআই অফিসে নিয়ে যায়। আসামি আব্দুর রশিদ ও আশরাফ উদ্দিন তার কাছ থেকে জোরপূর্বক কয়েকটি ব্ল্যাংক সাদা কাগজ ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন ও তাদের শিখিয়ে দেওয়া বক্তব্য অডিও রেকর্ড করেন। সঙ্গে লিখিত নেন। 

মামলায় আরও বলা হয়, গত ২১ জুলাই বাদী শারীরিকভাবে অসুস্থবোধ করলে ঢাকা কমিউনিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেগনেন্সি টেস্ট করতে গেলে সাত সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা বলে জানায়। এরপর নিরুপায় হয়ে গত ২৬ জুলাই পুলিশ হেড কোয়াটার্স আইজিপি বরাবর ঘটনা তুলে ধরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের বিষয়ে আব্দুর রশিদ ও আশরাফ উদ্দিনের সহযোগিতায় অপর আসামিরা গত ২৮ জুলাই বিকালে বাদীর বাসায় এসে তাকে অস্ত্রের মুখে বাসা হতে তুলে নিয়ে খিলগাঁও থানাধীন দক্ষিণ গোড়ান ছাপড়া মসজিদ এলাকায় নগর উন্নয়ন সমাজ সেবা সংস্থা সাবেক সালেহা মেডিক্যাল সেন্টারে নিয়ে পেটের সন্তানকে হত্যা করে ফেলে। এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে তাকে আসামিরা পতিতা ব্যবসার আস্তানায় নিয়ে পতিতাবৃত্তি করাবে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা প্রচার চালিয়ে হেয় প্রতিপন্ন করানো হবে বলে জানায়। তা না হলে বাদীর সন্তানসহ হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলা হবে। 

এরপর আসামিরা বাদীর কাছ থেকে তাদের খরচ বাবদ ক্ষতিপূরণ হিসেবে আট লাখ টাকা দাবি করেন এবং প্রতিনিয়ত বাদী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের হুমকি দিয়ে আসছেন।

ঢাকা/মামুন/এনএইচ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়