ঢাকা     শুক্রবার   ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৫ ১৪৩১

‘গ্রেপ্তার বাণিজ্যের প্রমাণ পেলে সর্বোচ্চ শাস্তি’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪৬, ৩০ জুলাই ২০২৪   আপডেট: ১৬:৫৩, ৩০ জুলাই ২০২৪
‘গ্রেপ্তার বাণিজ্যের প্রমাণ পেলে সর্বোচ্চ শাস্তি’

ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (অপারেশন্স) বিপ্লব কুমার সরকার

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (অপারেশন্স) বিপ্লব কুমার সরকার বলেছেন, কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে যদি গ্রেপ্তার বাণিজ্যের প্রমাণ পাওয়া যায়, শুধু প্রত্যাহার নয়, তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনি ব্যবস্থা নেওয়াা হবে। 

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দুপুরে ডিএমপির সদর দপ্তরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। 

থানায় থানায় গ্রেপ্তার বাণিজ্য চলছে, এমন অভিযোগের বিষয়ে বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, গ্রেপ্তার বাণিজ্য অনেক পুরনো একটি শব্দ। ডিএমপি কমিশনার যেদিন ব্লক রেইডের নির্দেশ দিয়েছেন, সেদিন থেকেই গ্রেপ্তার বাণিজ্যের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে। যদি এ ধরনের কোনো অভিযোগ আসে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে দায়ী পুলিশ সদস্যকে শুধু প্রত্যাহার নয়, তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

তিনি বলেন, প্রত্যেকটি ঘটনার পূর্বাপর বিচার করতে হবে। আমাদের সদস্য যদি গুলি করে থাকে, কোন প্রেক্ষাপটে গুলি করেছে, সেগুলো পর্যালোচনা করা হবে। যেসব ঘটনায় মামলা হয়েছে, প্রত্যেকটি মামলার সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করা হবে। 

ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বলেন, যখন একটি মামলা রুজু করা হয়, তখন কে কোন দলের, কে কোন মতের, কে পক্ষের বা বিপক্ষের, এগুলো আমাদের কাছে কোনো বিচার্য বিষয় নয়। সাধারণ মানুষ যখন একটি এজাহার দায়ের করে, তখন পুলিশের হস্তক্ষেপের কোনো সুযোগ নেই। তাই, এখানে কোনো দল-মত কিংবা পক্ষ-বিপক্ষের সুযোগ নেই। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত হবে এবং যে দোষী হবে, তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

এক প্রশ্নের জবাবে বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ব্লক রেইড পরিচালনার ক্ষেত্রে কোনো সাধারণ মানুষ, সাধারণ শিক্ষার্থী এবং নিরপরাধ কাউকে ধরার বিন্দুমাত্র কোনো সুযোগ নেই। ডিএমপি কমিশনার মহোদয়ের স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। এ কারণে ব্লক রেইডে ডিএমপির সিনিয়র অফিসারদের মোতায়েন করা হয়েছে। যেন ব্লক রেইডে কোনো ধরনের আইনের ব্যত্যয় না ঘটে, নিরপরাধ মানুষ যেন বিন্দুমাত্র পুলিশের দ্বারা হয়রানির শিকার না হয়। এরপরও যদি কোনো ব্যত্যয় হয়, সঙ্গে সঙ্গে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করি। তবে, অপরাধীকে ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। 

তিনি বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থী আমাদের সন্তান সমতুল্য। সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিষয়ে পুলিশ অত্যন্ত সংবেদনশীল। পুলিশের টার্গেট যারা নাশকতাকারী, যারা মেট্রোরেল, সেতু ভবন, টোল প্লাজা ও বিভিন্ন জায়গায় গাড়ি পুড়িয়েছে। আমাদের শত্রু জামায়াত-শিবির চক্র এবং বিএনপির সন্ত্রাসীরা। তাদেরকে ধরার জন্য ভিডিও ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে দেখে কাজ করছি। কয়েক দিনে ঢাকা শহরে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ও প্রাণহানির ঘটনায় ডিএমপির ৫০টি থানায় ২৬৪টি মামলা রুজু হয়েছে। আরও ৪-৫টি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এসব মামলায় ২ হাজার ৮৫০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রিমান্ডে আনা হয়েছে অসংখ্য আসামিকে। রিমান্ডে থাকা আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে যে তথ্য পেয়েছি, সেসব তথ্য যাচাই-বাছাই করে দেখছি। 

২৬৪টি মামলার ভেতরে নিহতের ঘটনায় কোনো মামলা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঢাকায় বিভিন্ন থানায় ৫৩টি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে কিছু মামলায় নিহতের পরিবার বাদী হয়েছে এবং কিছু মামলায় রাষ্ট্রের পক্ষে পুলিশ বাদী হয়েছে। এসব মামলা শতভাগ সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ তদন্ত করা হবে। পুলিশ এখানে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে তদন্ত করবে। সেই মামলাগুলো ডিএমপি কমিশনার নিজে তদারকি করবেন। সিনিয়র অফিসারদের এসব মামলা মনিটরিংয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

মাকসুদ/রফিক


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়