ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

অর্থ পাচারে এনু-রুপনের সাত বছর দণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৫৭, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ২১:০৭, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫
অর্থ পাচারে এনু-রুপনের সাত বছর দণ্ড

এনামুল হক ভূঁইয়া ওরফে এনু ও তার ভাই রুপন ভূঁইয়া।

অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইনে করা মামলায় গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা পুরান ঢাকার প্রতাপশালী দুই ভাই এনামুল হক ভূঁইয়া ওরফে এনু ও তার ভাই রুপন ভূঁইয়াকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এই মামলায় আরো সাতজনকে চার বছর করে কারাভোগের দণ্ড দেওয়া হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক মাসুদ পারভেজ এই রায় শোনান। 

দণ্ডের পাশাপাশি ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৩০০ টাকার দ্বিগুণ অর্থাৎ ৩৪ লাখ ২৬ হাজার ৬০০ টাকা তাদের অর্থদণ্ড  করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট আদালতের উচ্চমান বেঞ্চ সহকারী মিয়া জাহিদুল ইসলাম রাইজিংবিডি ডটকমকে এসব তথ্য দিয়েছেন।

জাহিদুল ইসলামের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দণ্ডিত অন্যরা হলেন: শহিদুল হক ভূঁইয়া, রশিদুল হক ভূঁইয়া, মিরাজুল হক ভূঁইয়া শিপলু, তুহিন মুন্সি, নবীর হোসেন সিকদার, সাইফুল ইসলাম ও জয় গোপাল সরকার। তাদেরও ৩৪ লাখ ২৬ হাজার ৬০০ টাকা অর্থদণ্ড  করা হয়েছে, যা সমহারে  দিতে বলা হয়েছে। অনাদায়ে আরো ৩ মাসের সাজা ভোগ করতে হবে তাদের।

এই মামলার ঘটনায় জব্দ করা ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৩০০ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, যা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে বলা হয়েছে। 

জাহিদুল ইসলাম বলেন, কারাগারে আটক এনু, রুপন, শহিদুল, নবীর হোসেনকে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করা হয়। জামিনে থাকা সাইফুল ইসলাম ও জয় গোপাল আদালতে হাজির হন। তাদের উপস্থিতিতে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ের পর সাজা পরোয়ানাসহ তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। তবে পলাতক থাকায় অপর দুই আসামি মেরাজুল ও তুহিন বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে দায়ের করা মামলায় এর আগেও সাজা হয়েছে এনু-রুপনের।

২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর র‌্যাব-৩ এর পরিদর্শক (শহর ও যান) আবুল বাশার সূত্রাপুর থানায় মামলাটি করেছিলেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে র‍্যাব-৩ ক্যাসিনো-বিরোধী অভিযান পরিচালনার সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মতিঝিল ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে অবৈধ ক্যাসিনো খেলা পরিচালানাকারীদের অন্যতম সক্রিয় সদস্য রুপন ভূঁইয়ার বাসায় ক্যাসিনো থেকে উপার্জিত প্রচুর অবৈধ অর্থ ও স্বর্ণালংকার উদ্ধারের জন্য সূত্রাপুর থানাধীন বানিয়ার মুরগীটোলা রুপন ভূঁইয়ার বাড়ি ঘেরাও করে অভিযান চালায়। সেখান থেকে ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৩০০ টাকা এবং বাসার সিন্ধুকের ভেতর থেকে ৫ কেজি ১৬৩ স্বর্ণালংকার উদ্ধার করে, যার মূল্য মূল্য আড়াই কোটি  টাকা।

এজাহারে বলা হয়, ২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বরের ৫/৬ বছর আগে থেকে এনামুল হক এনু এবং তার ভাই রুপন ভূঁইয়া অন্যান্য আসামির সহায়তায় মতিঝিল ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে ওয়ান-টেন জুয়া খেলা শুরু করে। রুপন ভূঁইয়া অপর আসামিদের সহায়তায় অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসা থেকে উপার্জিত সংঘবদ্ধ অপরাধলব্ধ আয়ের অবৈধ প্রকৃতি, উৎস, অবস্থান, মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ গোপন বা ছদ্মাবৃত্ত করার অপরাধ করেন, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন- ২০১২ এর ৪(২) ধারার মধ্যে পড়ে। 

২০২১ সালের ২৬ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।

২০১৯ সালে অভিযানের সময় এনুর কর্মচারী আবুল কালাম আজাদের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় দুই কোটি টাকা। ওই ঘটনায় ওয়ারী থানায় র‌্যাবের করা মামলায় ২০২২ সালের ২৫ এপ্রিল এনু-রুপনসহ ১১ জনকে প্রত্যেককে সাত বছর করে দন্ড দেন আদালত।

অভিযানের মধ্যে এনু ও রুপন আত্মগোপনে ছিলেন। অবশেষে ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন তারা। একই বছর ঢাকার বংশাল থানায় মানি লন্ডানিং প্রতিরোধ আইনে আরেকটি মামলা করেন সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম স্কোয়াডের পরিদর্শক মো. মেহেদী মাকসুদ, যার রায় দেওয়া হয় ২০২৩ সালের ২৮ নভেম্বর।

ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের শেয়ারহোল্ডার গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি এনু ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুপনকে গ্রেপ্তারের পর দল থেকে তাদের বহিষ্কার করা হয়।

ঢাকা/মামুন/রাসেল

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়