ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষায় গুরুত্ব প্রধানমন্ত্রীর

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:১২, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষায় গুরুত্ব প্রধানমন্ত্রীর

বর্তমান যুগে পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে নিজেদেরকে প্রস্তুত করার জন্য শিক্ষার্থীদের আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন,‘আমরা শিক্ষার্থীদের আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে চাই। যাতে তারা পরিবর্তিত বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে পারে। এ কথা মাথায় রেখেই সরকার শিক্ষা ব্যবস্থার সার্বিক মানোন্নয়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’

মঙ্গলবার গণভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সারা দেশে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে তিনি একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যপুস্তক তুলে দিয়ে সারা দেশে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শিক্ষাকে আরো আধুনিক, উন্নত এবং বিজ্ঞানসম্মত করতে চাই। শুধু সাধারণ শিক্ষা নয়, কারিগরি শিক্ষাকে আমরা গুরুত্ব দিতে চাই। যাতে একজন ছেলে-মেয়ে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নিজেরা কিছু করতে পারে।’

প্রধানমন্ত্রী ভালো ফলাফলের জন্য শিক্ষার্থীদের পাঠে মনোনিবেশ করার আহবান জানিয়ে বলেন, ‘ভালো ফলাফল করতে হলে আমাদের শিশুদের আরো মনোযোগী হতে হবে। ভবিষ্যতে যেন ফলাফল আরো ভালো হয়, সেজন্য মন দিয়ে লেখাপড়া করতে হবে।’

তার সরকার বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের বই দেয়াসহ বৃত্তি প্রদান করছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘গরিব বাবা-মার ওপর যেন চাপ না পড়ে, সেজন্য আমরা বছরের শুরুতেই বই দিচ্ছি। স্কুল ও কলেজ সরকারি করে দিচ্ছি। শিক্ষার্থীদের যেন নদী-নালা, খাল-বিল পার হতে না হয়, সেটা বিবেচনায় রেখে স্কুল করে দিচ্ছি।’

তিনি বলেন,‘শিক্ষকদের বেতন বাড়িয়ে দিয়েছি। উচ্চ শিক্ষাসহ সর্বস্তরে বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। স্কুলে টিফিনের ব্যবস্থা করেছি। কোনো শিক্ষার্থী যেন ঝরে না পড়ে, এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে সাহায্য করা হচ্ছে।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিক্ষাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন,‘সংবিধানে শিক্ষার কথা বলা আছে গুরুত্বের সঙ্গে।’

পড়াশোনার পাশাপাশি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের খেলাধুলায় উৎসাহিত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘সারাক্ষণ শুধু পড় পড় করলে ছোট ছেলেমেয়েদের ভালো লাগে না। খেলাধুলার মধ্যদিয়ে তাদের পড়ালেখা শেখাতে হবে। তবেই সেটা ফলপ্রসূ হবে। খেলাধুলার মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে তাদের লেখাপড়ার ব্যবস্থা করবেন। এখন আমরা সাড়ে তিন হাজার ইউনিয়নে ব্রডব্যান্ড পৌঁছে দিয়েছি।’

সাড়ে তিন হাজার ইউনিয়নে ব্রডব্যান্ড পৌঁছে দেওয়া এবং তার সরকারের মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম তৈরীর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এসব সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নতুন প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষিত করে তোলাতেও সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান।

একই অনুষ্ঠানে এ বছরের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও ইবতেদায়ি এবং জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার ফলাফল প্রধানমন্ত্রীর নিকট হস্তান্তর করা হয়।

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও ইবতেদায়ী পরীক্ষার ফল প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন।

নির্দিষ্ট সময়ের অনেক আগেই ফল প্রকাশ করায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন,‘প্রতিটি পরীক্ষা সময়মতো হবে এবং ফলাফলও সময়মতো হবে। আমরা কোনো সেশনজট রাখব না। সেশনজট থাকলে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনায় অমনোযোগ চলে আসে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতা লাভের পর বঙ্গবন্ধু সরকার শিক্ষাকে অগ্রাধিকার প্রদান করেছিল। এই প্রয়াসের অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেন। এছাড়া প্রাথমিক শিক্ষা বিনামূল্যে প্রদান করার পাশাপাশি ৩৬ হাজার প্রাথমিক স্কুল জাতীয়করণ করা হয়। সরকার বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা অনুযায়ী গঠিত কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশনের সুপারিশ অনুসরণ করে শিক্ষা নীতি প্রণয়ন করেছে।’

 

ঢাকা/পারভেজ/জেনিস

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়