ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

৭০ শতাংশ বিদেশফেরত বাংলাদেশি জীবিকা সংকটে: আইওএম

কূটনৈতিক প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৪০, ১২ আগস্ট ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
৭০ শতাংশ বিদেশফেরত বাংলাদেশি জীবিকা সংকটে: আইওএম

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে বিদেশফেরত বাংলাদেশিদের প্রায় ৭০ শতাংশই এখন কর্মহীন। তারা জীবিকা সংকটে আছেন।

দেশের ১২ জেলায় বিদেশফেরত অভিবাসীদের ওপর পরিচালিত গবেষণায় এ তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিদেশ থেকে ফেরত আসা অভিবাসীরা জীবিকা, আর্থিক সংকট (উপার্জনের অভাব এবং বর্ধিত ঋণ) এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়সহ নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। একেকজন অভিবাসী গড়ে তার পরিবারের তিন সদস্যকে সহায়তা করে থাকেন। অভিবাসী কর্মীরা ফেরত আসায় দেশে রেমিট্যান্স-নির্ভর জনগোষ্ঠীর ওপরও বিরূপ প্রভাব পড়ছে।

'র‌্যাপিড অ্যাসেসমেন্ট অব নিডস অ্যান্ড ভালনারেবিলিটিস অব ইন্টার্নাল অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল রিটার্ন মাইগ্র্যান্টস ইন বাংলাদেশ' শীর্ষক প্রতিবেদনে এ গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। সোমবার (১০ আগস্ট) আইওএম ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে গবেষণার ফল তুলে ধরা হয়। বাংলাদেশ এবং আঞ্চলিক পর্যায়ের জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় সংস্থার অংশীদাররা ব্রিফিংয়ে অংশ নেন।

গবেষণাটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে ‘রিজিওনাল এভিডেন্স ফর মাইগ্রেশন এনালাইসিস অ্যান্ড পলিসি (রিমেপ)' শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় পরিচালিত হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে মোট ১ হাজার ৪৮৬ জন বিদেশফেরত অভিবাসীর ওপর পরিচালিত জরিপের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে আইওএম। ২০২০ সালের মে ও জুলাই মাসে দেশের ১২টি উচ্চ অভিবাসন-প্রবণ জেলায় এ জরিপ চালানো হয়।

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ২৯ শতাংশ জানিয়েছেন, যে দেশে তারা ছিলেন, সে দেশ ত্যাগ করতে বলায় তারা বাংলাদেশে ফেরত এসেছেন। ২৩ শতাংশ অভিবাসী জানিয়েছেন, তারা করোনা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন এবং পরিবারের কাছে ফেরত আসতে চেয়েছেন। ২৬ শতাংশ জানিয়েছেন, তাদের পরিবার তাদেরকে ফেরত আসতে বলায় ফিরে এসেছেন তারা। ৯ শতাংশ জানান, তাদেরকে বলা হয়েছে সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হবে। ফলে আটকে পড়ার ভয়ে তারা ফেরত এসেছেন।

৫৫ শতাংশ বিদেশফেরত ব‌্যক্তি জানিয়েছেন, তাদের ওপর ঋণের বোঝা রয়েছে। তাদের মধ্যে ৫৫ শতাংশ পরিবার ও বন্ধুর কাছে ঋণগ্রস্ত, ৪৪ শতাংশ ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান (এমএফআই), স্বনির্ভর দল এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে ঋণগ্রস্ত। পরিবার এবং বন্ধুদের কাছ থেকে ঋণ গ্রহণকারীর ৮৬ শতাংশ বিনা সুদে ঋণ নিয়েছেন।

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে প্রায় ৭৫ শতাংশ জানান, তারা আবার বিদেশে যেতে আগ্রহী। তাদের মধ্যে ৯৭ শতাংশই করোনা প্রাদুর্ভাবের আগে যে দেশে কাজ করতেন, সে দেশেই পুনরায় যেতে ইচ্ছুক। ৬০ শতাংশ অংশগ্রহণকারী আরো ভালো বেতনের চাকরি নিশ্চিত করতে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আগ্রহী।

বাংলাদেশে আইওএমের মিশন প্রধান গিওরগি গিগাওরি বলেন, 'কোভিড-১৯ মহামারির সময় সবচেয়ে বিপদাপন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছেন অভিবাসী কর্মীরা। বৈশ্বিক চলাচলের ওপর আরোপিত নতুন নিষেধাজ্ঞা এবং কোভিড-১৯ মহামারি সৃষ্ট মন্দার ফলে বিরূপ প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশের অভিবাসী কর্মী এবং রেমিট্যান্স-নির্ভর জনগোষ্ঠীর ওপর।’

ঢাকা/হাসান/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়