ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

‘আটকেপড়া সৌদি-ওমান প্রবাসী বাংলাদেশিদের ফি ছাড়াই টিকিট রি-ইস্যু হবে’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৩৭, ২২ ডিসেম্বর ২০২০   আপডেট: ২১:৪০, ২২ ডিসেম্বর ২০২০
‘আটকেপড়া সৌদি-ওমান প্রবাসী বাংলাদেশিদের ফি ছাড়াই টিকিট রি-ইস্যু হবে’

বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মহিবুল হক

করোনার কারণে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সৌদি আরব ও ওমানে বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন টিকিট কেটে রাখা যাত্রীরা। তবে বাংলাদেশের যারা টিকিট কাটার পরও যেতে পারবেন না, তাদের টিকিট স্বাভাবিক সময়ে কোনো রকমের ফি ছাড়াই রি-ইস্যু করা হবে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মহিবুল হক।

মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।

মহিবুল হক বলেন, আমরা এখনও ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। এখন পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করছি।  সরকারিভাবে আমরা খুব দ্রুত কী করব সে সিদ্ধান্ত জানাব।  করোনায় বিমানের ক্ষতি প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা, পর্যটন খাতের ক্ষতি দুই হাজার কোটি টাকা।

মধ্যপ্রাচ্যে হঠাৎ করে বিমানের ফ্লাইট বন্ধ হওয়ায় সৌদিআরবগামী যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।  এ বিষয়ে সরকার কী ভাবছে এমন প্রশ্নের জবাবে মহিবুল হক বলেন, করোনার কারণে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যে ফ্লাইট বন্ধ হয়েছে, সেজন্য আমরা দুঃখিত।  এটা আমাদের এখতিয়ার বহির্ভূত।  তবে আমরা যেটা করতে পারি, সেটা হলো যারা ইতোমধ্যে বিমানের টিকিট নিয়েছেন, তাদের কোনোরকম ফি ছাড়াই করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে টিকিট রি-ইস্যু করে দেওয়া হবে।  তখন তারা বাড়তি কোনো পয়সা ছাড়া যেতে পারবেন।

তিনি বলেন, আমরা এই সহযোগিতা করতে পারি। অতীতে বাংলাদেশ বিমান এই সহযোগিতা করেছে। তাই ভবিষ্যতেও এই সহযোগিতা অব্যাহত রাখব। 

সচিব বলেন, যুক্তরাজ্যে করোনার নতুন একটি ফর্ম আবিষ্কৃত হয়েছে। সেটা ছড়িয়ে পড়ছে। সে কারণে পৃথিবীর অনেক দেশ এ বিষয় নিয়ে শঙ্কিত। আমরাও শঙ্কিত। মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশ তাদের এয়ারপোর্ট বন্ধ করে দিয়েছে।  ফলে আমাদের দেশের কোনো ফ্লাইট সেখানে যেতে পারছে না। একই সঙ্গে লন্ডনের সঙ্গে অনেক দেশ তাদের প্লেন যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে।  বাংলাদেশ এ বিষয় নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। আমরা বিষয়টার ওপর নজর রাখছি।  কী করব সময়মতো সে সিদ্ধান্ত দ্রুত জানিয়ে দেবো।

৪০টির বেশি দেশ যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ফ্লাইট বন্ধ করেছে।  এতকিছুর পরও কেন আমরা এখনো পর্যবেক্ষণ পর্যায়ে আছি- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা এখনো পর্যবেক্ষণ যেমন করছি পাশাপাশি পর্যালোচনা করছি।  সরকারিভাবে আমরা খুব দ্রুত কী করব সে সিদ্ধান্তটা জানাব।

মধ্যপ্রাচ্যের দুটি দেশের সঙ্গে প্লেন যোগাযোগ বন্ধ হলো। এরপর আর কোনো দেশের সঙ্গে হবে কি না জানতে চাইলে সচিব বলেন, আমরা কোনো দেশের সঙ্গে ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ করিনি। তারা যেহেতু আমাদের এক্সেস দিচ্ছে না, সে কারণে আমাদের বিমান যেতে পারছে না।  আমরা মধ্যপ্রাচ্যে বন্ধ করিনি, তারা তাদেরটা বন্ধ করেছে বলে আমাদের বিমান যেতে পারছে না।

করোনার কারণে বিমানে নতুন করে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে সে বিষয়ে সরকার কী সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে সিনিয়র সচিব বলেন, সারা পৃথিবীর মতো বাংলাদেশেও করোনার পরিস্থিতির জন্য অনেক খাতে বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে। একক মন্ত্রণালয় হিসেবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আমাদের বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।  আমাদের বিমান, এয়ারপোর্ট, পর্যটন, হোটেল, মোটেল রিসোর্টসহ সবকিছু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের কারণে আমরা ধীরে ধীরে একটা পর্যায়ে চলে আসছিলাম। আমাদের বিমানবন্দর, হোটেল, মোটেল, রিসোর্টগুলো খুলে দিয়েছি। গতকাল পর্যন্ত বাংলাদেশে ২৯টি এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনা করতো। সব ফ্লাইটে মধ্যে যাত্রীবাহী ফ্লাইটের সংখ্যা ছিল ১৯৮টি, আর কার্গো ফ্লাইটের সংখ্যা ছিল ৭৪টি।

সচিব বলেন, বাংলাদেশ বিমানসহ আরও অনেক বেসরকারি এয়ারলাইন্স আছে। তারা সবাই ক্ষতির মুখে পড়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে টিকে থাকাটাই কঠিন। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের ফলে আমরা পরিস্থিতি কিছুটা রিগেইন করেছিলাম। তবে আবার আমরা একটা সমস্যায় পড়তে যাচ্ছি। কাজেই আমাদের আন্তরিকতার কোনো কমতি থাকবে না।

হাসান/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়