ঢাকা     সোমবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৭ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

সাবেক মন্ত্রীর ‘নির্দেশে’ ইউপি অফিসে তালার অভিযোগ, নিরাপত্তা চাইলেন চেয়ারম্যান

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৪৫, ২৭ জুলাই ২০২২   আপডেট: ২১:৫২, ২৭ জুলাই ২০২২
সাবেক মন্ত্রীর ‘নির্দেশে’ ইউপি অফিসে তালার অভিযোগ, নিরাপত্তা চাইলেন চেয়ারম্যান

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন। ছবি: রাইজিংবিডি

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় সম্প্রতি সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত হওয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজালাল মজুমদার এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।

তিনি দাবি করেন, হামলার পর অস্ত্র হাতে ভাইরাল হওয়া সেই জুয়েল গ্রেপ্তার হলেও অস্বস্তিতে রয়েছেন তিনি। সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের নির্দেশে ইউপি অফিসে পাঁচ মাস ধরে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে তার অনুসারীরা। বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বিচার প্রার্থনা করেছেন তিনি।

আরো পড়ুন:

বুধবার (২৭ জুলাই) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিচার প্রার্থনা করেন চৌদ্দগ্রামের চার নম্বর শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহ জালাল মজুমদার।

তিনি বলেন, ‘গত বছরের ডিসেম্বরে ইউপি নির্বাচনের আগে এলাকার সংসদ সদস্য আমাকে ফোনে নির্দেশ দেন, আমি যেন আমার ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে তার ভাতিজা তোফায়েলসহ পরিবারের সদস্যদের পছন্দের মেম্বার প্রার্থী মনির হোসেনকে নির্বাচিত করতে সহযোগিতা করি। মনির হোসেনকে নির্বাচিত করতে না পারায় সংসদ সদস্য ও তার ভাতিজারা মিলে যুবদলের জুয়েলসহ স্থানীয় কিছু দুষ্ট প্রকৃতির লোককে দিয়ে আমাকে বিভিন্নভাবে অপমান-অপদস্থ করার নানা রকম চক্রান্ত শুরু করেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘তারা প্রকাশ্যে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বক্তব্য দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে যেতে নিষেধ করেন। চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করার জন্য বারবার হুমকি দিতে থাকেন।’

শাহজালাল বলেন, ‘এলজিএসপির প্রকল্প দাখিলের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ওয়ার্ড সভা বাধ্যতামূলক। অথচ আমাকে কোনো ওয়ার্ড সভা করতে দেবে না বলে ঘোষণা দেন তারা।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘১৫ ফেব্রুয়ারি যুবদল নেতা ও বিভিন্ন মামলার আসামি জুয়েলের নেতৃত্বে স্থানীয় সংসদ সদস্যের (মুজিবুল হক) ভাতিজা ইউসুফ, আহসান, খোকন ও পরিবারের সদস্যসহ ৩৫/৪০ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী লাঠিসোটা নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে চেয়ারম্যান কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন। এখনো পর্যন্ত এই কক্ষ তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। ওইদিন আমি ইউনিয়ন পরিষদের ছিলাম না। যে কারণে আমি প্রাণে বেঁচে যাই। আমাকে হত্যার হুমকি এবং পদত্যাগ করার নির্দেশ দিয়ে সন্ত্রাসীরা চলে যান।’

এরপর হত্যার উদ্দেশ্যে একাধিকবার তার ওপর হামলা চালানো হয় বলে দাবি করেন এই চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘হামলার পরও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং আমাকে প্রধান আসামি করে মামলা করা হয়েছে। শুধু আমি নই, আমার ৫ জন কর্মীর বিরুদ্ধেও বানোয়াট তথ্য দিয়ে তথ্য প্রযুক্তি আইনে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।’

এসবের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রীসহ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কাছে বিচার চেয়েছেন চেয়ারম্যান মো. শাহ জালাল মজুমদার।

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের সংসদ সদস্য মুজিবুল হক বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে তালা লাগানো হয়েছে টাকা পয়সা পাওনা-দাওনা নিয়ে। এখানে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ কেন? আমি এখানে নাই।

তালা দেওয়ার অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি শাহাজালালকে বহু সুযোগ ও সুবিধা দিয়েছি। এখন বেঈমানি করছে। আসলে জুয়েল ও চেয়ারম্যান শাহজালাল চাচাত ভাই। এটা ভাইয়ে-ভাইয়ে পাওনা-দাওনার দ্বন্দ্ব।
 

/পারভেজ/সাইফ/

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়