ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ইফতার ও সেহরির ২ শতাংশ খাদ্যে ভেজাল থাকে: শিল্পমন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:২৭, ২২ মার্চ ২০২৩  
ইফতার ও সেহরির ২ শতাংশ খাদ্যে ভেজাল থাকে: শিল্পমন্ত্রী

‘পবিত্র রমজানে মাসের ইফতার ও সেহরির ২ শতাংশ খাদ্যে ভেজাল থাকে। এছাড়া ড্রামজাত ভোজ্য তেলের অর্ধেকই নিম্নমানের। শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) বাজার থেকে এসব পণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে এ ভেজাল পেয়েছে। এজন্য নিম্নমানের খাদ্যপণ্য বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে।’

বুধবার (২২ মার্চ) শিল্প মন্ত্রণালয় আয়োজিত পবিত্র রমজান মাসে নিত্যপণ্যের ভেজাল প্রতিরোধ, মান ও মূল্য নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত সংবাদ সম্মেলনে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন এ তথ্য জানান। মন্ত্রীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা। শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আসন্ন রমজান মাস উপলক্ষে ভেজালমুক্ত পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে ইফতার ও সেহরিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের খাদ্যপণ্যে সার্ভিল্যান্স টিমের মাধ্যমে খোলাবাজার থেকে সংগ্রহ করে বিএসটিআই নিজম্ব ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়েছে। ৮২৬টি পণ্যেরে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ৭৭৪টি। এর মধ্যে মানসম্মত ৭৬০টি, নিম্নমানের ১৪টি।

মন্ত্রী জানান, ড্রামে বাজারজাত করা ভোজ্যতেলের অর্ধেকই নিম্নমানের। ২০৪টি নমুনা সংগ্রহ করে ১০৩টি ভেজাল পাওয়া গেছে। এরপর এসব তেল বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়। অন্যদিকে, বোতলজাত ভোজ্যতেলের ৪৬৫টি নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে ৪৫৩টি ভেজাল পাওয়া যায়।

এসময় ওজনে কম দেওয়া, বেশি দাম রাখার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে বিএসটিআই। দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে করে। নিম্নমানের শিশু খাদ্য বিক্রির দায়ে একটি কারখানা সিলগালা ও মালিকসহ ৩ জনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

ফলমূলে ফরমালিনের ব্যবহার বন্ধ হয়েছে জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ফলের বাজার থেকে ১৯২টি নমুনা বাজার থকে সংগ্রহ করে করে পরীক্ষা করা হয়। তবে কোনও ফলে ফরমালিনের উপস্থিতি দেখা যায়নি। বিএসটিআইয়ের বহুদিনের প্রচেষ্টায় ফলে ফরমালিনের ব্যবহার বন্ধ হয়েছে।  

শিল্পমন্ত্রী বলেন, রোজায় অন্যদেশে ব্যবসায়ীরা ভর্তুকি দিলেও আমাদের দেশের কিছু ব্যবসায়ী সারা বছর বসে থাকেন রোজায় দাম বাড়িয়ে ও ভেজাল পণ্য বিক্রি করে বেশি মুনাফা করার জন্য। তারা মানুষের ঘাড়ে চেপে বেশি মুনাফা করতে চায়। সরকার ব্যবসায়ীদের সুবিধা দিচ্ছে; তাই বলে তারা যা ইচ্ছা তাই করবে, এমন হতে দেওয়া হবে না। ব্যবসায়ীদের মানবিক হতে হবে।

বাজার সিন্ডিকেট দখলে। যুদ্ধ পরিস্থিতিকে ব্যবহার করে ব্যবসায়ীরা খাদ্যসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে না করলে দাম আরও বাড়বে বলে মনে করেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, রাতের অন্ধকারে মরা মুরগীর মাংস বিক্রি, হোটেলে অস্বাস্থ্যকর খাদ্য বিক্রি, ভেজাল উপকরণ দিয়ে খাদ্য তৈরিসহ নানা উপায়ে অখাদ্য-কুখাদ্য বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা। বিএসটিআই এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে। বড় কিংবা ছোট ব্যবসায়ী যেই হোক ভেজাল খাদ্য বিক্রি করছে, এমন অভিযোগ পেলেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এজন্য জনসচেতনতাও প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, বিএসটিআই মহাপরিচালক মো. আবদুস সাত্তারসহ শিল্প মন্ত্রণালয় এবং বিএসটিআই-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/হাসান/এনএইচ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়