ঢাকা     রোববার   ০৫ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২২ ১৪৩১

সদরঘাটে দুর্ঘটনা

একটি পরিবারের আর কেউ বেঁচে রইলো না

নিউজ ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:২৫, ১১ এপ্রিল ২০২৪  
একটি পরিবারের আর কেউ বেঁচে রইলো না

সংগৃহীত ছবি

সদরঘাটে পন্টুনে বেঁধে রাখা লঞ্চে আরেক লঞ্চের ধাক্কায় রশি ছিঁড়ে নিচে পড়ে ৫ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৩ জনই একই পরিবারের। তারা হলেন— মো. বেল্লাল (২৬), তার স্ত্রী মুক্তা (২৩) এবং তাদের শিশু সন্তান মাইশা (৪)।

দুর্ঘটনায় মৃত্যুর খবর শুনে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ছুটে এসেছেন মুক্তার ভগ্নিপতি জহিরুল ইসলাম। তিনি জানান, বেলাল গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে সেখানে থাকতেন। তার গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায়।

ঈদের দিন লঞ্চে করে বাড়ি যেতে বেলাল স্ত্রী–সন্তানকে নিয়ে সদরঘাটে এসেছিলেন বলে জানান জহিরুল। তিনি বলেন, বেলালের বাবা–মা বেঁচে নেই। স্ত্রী–সন্তানসহ তার মৃত্যুতে ওই পরিবারে আর কেউ রইল না। 

সদরঘাটে লঞ্চে উঠতে গিয়ে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের স্বজনেরা আহাজারি করছেন

নিহত বাকি দুজন হলেন— রিপন হাওলাদার (৩৮) ও রবিউল (১৯)। রিপন হাওলাদারের বাড়ি পটুয়াখালী। তিনি রাজধানীর ভাটারা থানা এলাকায় থাকতেন। এ ছাড়া, রবিউলের বাড়ি ঠাকুরগাঁও।

সদরঘাট নৌ থানার উপ-পরিদর্শক লিয়াকত আলী জানান, মরদেহগুলো মিডফোর্ড হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার সময় সদরঘাটে বার্থিং করা তাসরিফ-৪ লঞ্চের রশি ছিঁড়ে পাঁচ জন মানুষ আহত হন। আমরা দ্রুত আহতদের স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসি। তবে হাসপাতালে নিয়ে এলে ডাক্তার তাদের মৃত ঘোষণা করেন। একই পরিবারের তিন জন রয়েছেন, স্বামী-স্ত্রী ও তাদের সন্তান।

তিনি বলেন, যারা মারা গেছেন তারা সম্ভবত তাদের গন্তব্যে যাওয়ার জন্য লঞ্চের খোঁজ করছিলেন। ওই অবস্থায় তাসরিফ-৪ লঞ্চের রশি ছিঁড়ে তাদের গায়ে লাগে। লঞ্চের রশি অনেক মোটা এবং ভারী। এটি যখন ছিঁড়ে যায় খুবই স্পিডে ছিড়ে।

এসআই লিয়াকাত আলী বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনও মামলা হয়নি। পরবর্তী আইনি কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিহত স্বজনরা যদি ময়নাতদন্ত ছাড়া মরদেহ নিয়ে যেতে চান তাহলে তাদের নৌ-পুলিশের কাছে আবেদন করতে হবে। তাদের আবেদন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পড়ুন- সদরঘাটে এক লঞ্চকে আরেক লঞ্চের ধাক্কা, দড়ি ছিঁড়ে নিহত ৫

এর আগে, বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) বিকেলের দিকে সদরঘাটের ১১নং পন্টুনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। 

ঢাকা নদী বন্দর (সদরঘাট)-এর যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক) জয়নাল আবেদীন বলেন, সদরঘাটের ঘটনায় পাঁচ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মরদেহ মিডফোর্ড হাসপাতালে রাখা আছে। 

ঘটনার পর এমভি তাফসির ও এমভি ফারহানের রুট পারমিট ও যাত্রা বাতিল করেছে বিআইডব্লিউটিএ। এ ছাড়া, ফারহানের চালক পালিয়ে গেছেন। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন র‍্যাব-১০ এর কোম্পানি কমান্ডার পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান। তবে ফারহানের ম্যানেজার রাজিবের দাবি, দুর্ঘটনায় তাদের লঞ্চের কোনও দায় নেই। এমভি তাসরিফ কর্তৃপক্ষ মিথ্যা অভিযোগ করছে। 

/এনএইচ/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়